মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯

তাপস দাস


তাপস দাস

তুমি কী ভীষণ ভালো গান গাও

হে শিল্পী, তুমি কী ভীষণ ভালো গান গাও।
আমি শুনেছি তোমার গান, আমার প্রাণ বড়ো উতল হয়।
সেই থেকে এ জীবন যেন তোমার গানেই সপেছি।
বেশ থাকি, বেশ ভালো থাকি, মনে মনে তোমারই কন্ঠ
তোমার আবেগ, তোমার বিলীন ঐ ভাবে আমার বসতবাড়ি।
ছোট ছোট বাসনা কখন বড়ো হল, খুব বড়ো।
তোমার চারপাশে মুগ্ধ চোখের আনাগোনা, বিখ্যাত তারা।
তুমি যে বিখ্যাত নিয়ে থাক তাও জানলাম।
তবুও অবুঝ মন। কিছুতেই বোঝাতে পারি না তাকে।
আলাপে আলাপে একখানি গান তোমার হাতে দিলুম
বলেছিলাম, গাও গান এ পোড়া গান, বড়ো সাধ মনে
সেই থেকে তোমার কাছে উড়ে গেছি চিলের মতন
প্রখর রৌদ্র, কালবোশেখ, কাঁটার মতন শীত
উড়িয়ে দিয়েছি আমার এই নাছোড় ডানায়
কী ভীষণ আশায় বসে থাকতাম কোনও কোণে
মনে সাধ এই বুঝি আমার ঝরা পাতা তোমার কন্ঠে
উদাত্ত হয়ে আকাশ বাতাস কাঁপাবে, আর আমি
উল্লাসে, আনন্দে তোমার কন্ঠে মালা হব।
দিন গেল, মাস গেল, বছরের পর বছর
তোমার চারপাশে মুগ্ধ চোখের আনাগোনা, বিখ্যাত তারা
তুমি যে বিখ্যাত নিয়ে থাক আবারও জানলাম।
এই বেশ, এ ভাবেই বেড়ে ওঠ, আলো ধার কর
আমার গানখানি ফিরিয়ে দিও
ভাঙা বাক্স আবার সাজাব।







শেষ কী

শেষ কী, কোথায়, ঈশান কোণে মেঘের মতন।
এই মেঘলা দিন, এই একটা ঝড়, অথবা এক উড়ন্ত বৃষ্টি
সম্ভাবনা সবই আগামীকাল যেমন
জানা নেই, জানা থাকে না, জানতে নেই
জেনে যেতে যেতে প্রতিটি দিনের আত্মহত্যা হয়ই।
যে জেনে যায় তার সব কিছুতেই আনন্দ। ভেবেও দেখেনি
সে কী, আর গন্তব্য না জেনে কী হতে পারত।
তবু অদ্ভুত পৃথিবী, যে পথে তাকেই মেরে ফেলে
যে সহজে ভাগ্যক্রমে শেষ জানে তাকেই বাঁচিয়ে রাখে।
এসব হয়। কেন হয়? মাঝখানে কিছু অদৃশ্য হাত
অন্ধকারেই বিজ্ঞ হয়ে যায়। এসবই হয়।
এ কেমন চিরন্তনী নিয়ম এখানে
উত্তর মেলে মৃত্যুর পরে। শেষ কী জানা নাই থাক এখন
সে যে ঈশান কোণে মেঘের মতন।







গোলাপ বৃতান্ত

গোলাপ, অজস্র পাপড়ির প্যাগোডা যে গোলাপ
ঠোঁটে শিশির ফোঁটা পড়লে যে অনুভব তার মতন গোলাপ
উচ্ছ্বাস আর আনন্দ আর ভালোবাসার গোলাপ
যে আছে তাকে রেখে কিছু খোঁজের অনাগ্রহী গোলাপ
হেঁয়ালি গোলাপ, কেউ বিখ্যাত করে গেল সেই গোলাপ
আত্মবিশ্বাসী, অভিলাষী, জনপ্রিয়তায় মাতোয়ারা গোলাপ
তুমি ইতিহাস, চাঁপা-জুঁই- গন্ধরাজ সাক্ষী থাকে
প্রথম আলোয় কী রম্যতায় জাগো, সারাটা দিন তুমিই প্রথম
অথচ আমিই ব্যতিক্রম, গড়ে রাখা ভিত তোমার
এমন নয় তুমিই শ্রেষ্ঠ বাহার
আমি দেখি বনফুল কী তার অসামান্য সংযম







পালাবদলের গল্প

পালাবদলের কাকাতুয়া কথারা লাল কাপড়।
ষাঁড়ের মতন ছুটছে তো ছুটছে ইচ্ছে সব।
আহা! মানবসভ্যতার কী চাতুর্য!
দেখছি এক সকাল। সকালের পর আর এক সকাল।
আমার, আমাদের, তোমার, তোমাদের কী হল, হবে
কেউ প্রশ্ন করল না। ভাবা হল না, জন্ম গেল ঐ আলো
আসছে এবার, আসছে, আসবেই এবার এই ভাবনায়।
আশায় আশায় অস্তিত্ব ঐ লাল কাপড়।
যারা আজ বাতাস, আকাশের সাথে কানাকানি
খেলে, হেলে,দুলে মশগুল তারা জানে ধরিত্রী কত বোকা।
এখন লাল কাপড় আর ষাঁড়ের গল্প







উড়ন্ত সব ধুলো

খুব আশা নিয়ে মেলায় এসেছি। দেখছি মোরগ লড়াই
রক্তাক্ত সবাই। অথচ কথা ছিল না
কথা ছিল আমরা একই নৌকোয় দাঁড়াব, আলো দেখাব
অথচ কী আজব এ লড়াই, কে বেশি আলো দেখাচ্ছে তার লড়াই
আলো কী নিজেকে চেনায়? নাকি সব হয়
আলো যে আলো তাকেও অন্যকে বলে দিতে হয়
একটা ভুল গড়ে দেয় আর একটা ভুল অভূতপূর্ব
আমি গাছতলায় বসে দেখি উড়ন্ত সব ধুলো