তৈমুর
খান
প্রসব
রোজ মৃত্যু
এসে শরীরে ঘুমায়
আমি ওর
পরিচর্যা করি
কলঙ্ক রটে
যায় ঘোর সহবাসে
অন্ধকারে
মৃত্যু ওঠে হেসে
ওষুধ পথ্য
জলের বোতল
সবাই পাহারা দেয়
উজ্জ্বল
শয্যা ঘিরে বসে থাকে
নির্ঘুম সংসার
আমার নীরব
ভাষা আর নীরব ভাষার সংকেতগুলি
বাহু বিছিয়ে রাখে
আমি তাতেই
আমার মাথা রাখি
ওরাই বুঝুক কষ্ট, মৃত্যুর গভীর পরিচয়
অবসন্ন
কালটুকু কেটে গেলে
আমিও প্রসব
হব এই সময় যন্ত্রণার
ভবিষ্যৎ
বেলা বাড়ছে
বেজে যাচ্ছে
ধৈর্যের সংগীত
বিপ্লবের
মঞ্চ বেঁধে স্বপ্নের নীলরাষ্ট্র ছড়াচ্ছে উদ্বেগ
সময়ের তরঙ্গ
এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে আমাকে
বিকেলে আলোর
চিঠি আকৃষ্ট করেছে
এখানে
অন্ধকারের পাহাড়ে
দু একটি
সুড়ঙ্গ গিরিখাতে
ভবিষ্যৎ উঁকি
মারছে :
কী সুন্দর
মাজা,
পুলক মাখা পলক
ঠোঁটে ঠোঁটে
নতুন চুমুর অভিঘাত
ধৈর্যের
স্বরলিপি আর দূরের দর্শক আমি
যদিও
অভিযাত্রী,
যদিও বশংবদ
সময়ের কাছে
রেখেছি সমর্পণ
নিঃস্ব ঝরনায়
ধুয়ে নিয়েছি হাত মুখ
লক্ষণাক্রান্ত
মরে যাচ্ছে
যেতে যেতে
কান্নার বিলম্ব কিছুটা সয়ে নিচ্ছে
ভাতের গন্ধ
এখনও ঘরময়
কথাবার্তায়
কোনও গরল নেই
ফাঁকা জলের
গ্লাস সান্নিধ্য চাইছে
এক পলক চেয়ে
দেখা
যেদিকে জীবন
যায়
দিঘির পাড়ে
রাতের সরীসৃপ
রাত্রির কালো
পাড়ে আকাশ থ হয়ে আছে
খবর দাও
জল আনো
ঈশ্বরের নাম
ডাকো
কম্বল আলগা
করো
ঘাম…
কে দুয়ার
ধাক্কায় ?
এখন চুপচাপ
পতন শুরু হল
বেরিয়ে পড়ল
দীর্ঘশ্বাস…
লালপদ্ম শ্বেতপদ্ম
বিকেলের জামা
গায়ে বসেছি একাকী
আমার ভেতরে
কেন আলো নিভে আসে ?
যার পথ চেয়ে
দিন গেল
সেও কি পাথর
হয়ে ডুবে গেল জলে ?
বিরামবিহীন
চোখ অশ্রুর ভেতর চেয়ে থাকে
দূর নিসর্গ
পথে উড়ে যায় রহস্যের কাক
ভূমণ্ডল
জুড়ে তীর্থক্ষেত্র,
আকাশও পরেছে
গেরুয়া পোশাক
লীলাজল থেকে
আমি কাকে তুলতে চাই ?
যমুনার
স্রোতে ভাসে দশমীর রাই
কে কাকে দেয়
বিসর্জন ?
লালপদ্মের
কাছে শ্বেতপদ্ম ফুটে ওঠে
পৃথিবী জেগে
ওঠে,
পৃথিবী ঘুমায়….
ছায়ারোদে লেখা চিঠি
তোমার বাড়ির
সামনের উঠোনে ধান শুকোচ্ছে
আর তোমার
ছোটছেলেটা হামাগুড়ি দিচ্ছে
কৃষ্ণ নেই
মাঠে গেছে ?
সোনামুখী
স্বর্ণচাঁপা ধান কার কথা বলছে এত ?
তোমার উঠোন
জুড়ে লক্ষ্মী সমারোহ
সুখ আর সুখের
সাম্রাজ্য শুধু !
ছেঁড়া জীবনের
পাণ্ডুলিপি নিয়ে চলে যাচ্ছে মেঘ
আকাশের
নীলঘাসে মেঘের হরিণ চরছে
হরিণের শিঙে
দ্যাখো ফুটছে আবেগ
আজ সব
ছায়ারোদে লেখা চিঠি
আনমনা তুমি
পড়ে নিও —
কতকাল ধরে
লিখছি তোমাকে
স্কুল পালানো
তোমার গোপন যুবক !