অমিতাভ কর
আমি
ভেঙেচুরে নতুন করে গড়েপিটে নিয়ে
নিজেকে হাজির করেছিলাম তোমার সামনে,
কিন্তু তবুও তোমার পছন্দ হলো না!
কি চাও, বলো তো তুমি?
একদম ঝকঝকে নতুন একটা আমি'কে,
না'কি - সময়ের আবর্তে পাল্টে নেওয়া
অন্য এক আমি - কে!!
আমি কিন্তু সেই আমি - ই রয়ে গেছি ॥
ভেঙেছি , চুরেছি , নতুন করে সাজিয়েছি,
কিন্তু সে সবই তো - আসলে বহিরঙ্গ ॥
পর্দা তুললে মঞ্চে সেই মূল আমি
- টাই
অভিনয় করে,
প্রায়ান্ধাকারে চেনাই যায় না ॥
তুমি বরং অন্ধকারেই কথা বোলো আমার
সঙ্গে,
দেখবে, তোমার সুরে সুর মিলিয়েই
বাজছে সব যন্ত্রানুষঙ্গ ॥
যন্ত্রীর যন্ত্রণাকাতর মুখটা নাহয়
ঢাকাই থাকলো, গাঢ় অন্ধকারের
নিঃসীম অতন্দ্রতায়॥
এগুলো কবিতা নয়
তুমি ভাবছো, এগুলো আমার কবিতা ,
মোটে.......ই না ।
এগুলো আসলে কালির আঁচড়ে তোমার বর্ণনা
॥
তোমাকে ভেবে অন্ধের মতো লিখে যাই,
তোমাকে তো আমি কোনদিন চোখেই দেখিনি!
তোমার কাজলচর্চিত চোখদুটো মনে হয়, কালো ভ্রমরের মতো ।
হাসলে তো গালে টোল পড়বেই ,
হাতের কাঁচের চুড়ি নিশ্চই রিনরিন
করেই বাজে ।
পায়ের নূপুরের নিক্কণ নিশ্চই
বুকে মাদলের তাল তোলে ॥
হয়তো , এসবই আমার কল্পনা ...
তা হোক , আমি
যেভাবে ভাবতে পারি
তোমাকে সেভাবেই সাজাই ॥
ঘোমটাটা না হয় মাথায় তুলেই দিই,
সিঁথিতে গাঢ় লাল সিঁদূর ,
কপালে থাক্ না , একটা গোল টিপ ॥
এভাবেই আমার কলম তোমায় ভেবে
ভরাতে পারে সাদা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ॥
তোমায় দেখার আকুতিতেই আমার লেখা
তুমি যাকে - কবিতা বলে ভুল করো ॥
সময়ের লাশ
চাতালে নামিয়ে রাখা নৈঃশব্দের লাশ
অপেক্ষা- চুলায় অগ্নি সংযোগের॥
শব শকটের নিঃশব্দ স্ট্রেচারখানা
পরবর্তী আরোহীকে টেনে নেবার
টানটান উত্তেজনায় প্রতীক্ষারত ॥
এর পরের পালা , বোধ হয় - সময়ের,
আগ্রাসী ক্ষুধায় সব কিছু আত্মসাৎ
করে
এবার অপেক্ষা নিজেকে আবিস্কার করার,
এক রহস্যময় চুল্লিতে,
যেখানে আগে থেকেই হাজির
নিঃশব্দ হারেমের বলিপ্রদত্ত অনুভূতির
লাশেরা॥