মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২০

মীনাক্ষী ঘোষ


মীনাক্ষী ঘোষ

আগ্নেয়গিরির সংকেত

এভাবে চমকে উঠলে কেন তুমি?

আমার আনত চোখের দৃষ্টিতে কি ছিল
আসন্ন ঝড়ের সংকেত?
অথবা
আমার পেলব কাজল পল্লবে তখনি কি
লেগেছিল আগুনবর্ণের ছোঁয়া?

তোমার পৌরুষদৃপ্ত  মুখ কেন হলো
ভয়ার্ত কাতর?
অশ্রুবাষ্পে ভিজে ওঠা কাঠবিড়ালীর মতো
আমার প্রতিটি বিভঙ্গ তোমার কাছে
হঠাৎই অচেনা কেন হলো?

আমার দুচোখের উথাল পাথাল ঢেউয়ে
সহসা কি শুনেছিলে সমুদ্র গর্জন?
তোমার বীরত্ব উজ্জ্বল মুখ তাই
মূহুর্তেই ছাইমাখা ধূমকেতু হলো

এতদিনে সম্ভবত বোধগম্য হলো
প্রত্যেক মেয়ের বুকের ভেতরে
কখনো না কখনো
ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠে

গলন্ত লাভা জমে জমে
এতদিন যা পাথর হয়ে ছিল।







না বলা কথা

সব কথা সকলকে বলা যায়না। 
সব দুঃখও প্রকাশের নয় সবসময়। 
সমস্ত চোখের জলও হাসির মোড়কে মরুভূমি হয়।

নৈঃশব্দ্যেরও একটা ভাষা থাকে। 
তার ছায়াময় আলিঙ্গনও কখনো কখনো
দিতে পারে অনির্বাণ সুখ।
আপাতচঞ্চল বুকে যেমন ঢেউ এসে ক্রমাগত জমা হয়
তেমনি, শুক্তির অন্তরেও জমা হতে থাকে
সমুদ্র সংক্ষোভের দীর্ঘশ্বাস ।

 একথা কুলুঙ্গিতে তোমার জন্য ই
সঞ্চয়ে রেখেছিলাম এতদিন
শুধু তুমিই তার সন্ধান জানতে চাইলেনা কখনো।







রাতকাহন

এমন করে সাঁঝবেলাটি কাঁকাল নিলে
তারার মালা লুকোই কোথায় এই অনিলে
মুক্তোছড়ায় কোথায় বাঁধি কালপুরুষে
কোন আঁচলে আলপনা দেয় শীত কুরুশে

সন্ধ্যা নামে তুলসীতলায়,পদ্মিনী রাত
কোন মহলে কোথায় করে কার সওগাত
দশমহলা কোন কোটরে অন্ধ ঘরে
বিষের বাঁশি কন্যেকে তার ছোবল মারে

সাঁঝের প্রদীপ নিবছে রাতের কাল- আঁধারে
নিরাবরণ মৃত্তিকাকে বরণ করে
মুক্তো দানায় সাতনরী হার হয়নি গাঁথা
অগ্নিদাহে পুড়ছে রাতের ছিন্ন কাঁথা।