গোপাল চন্দ্র সাহা
শেষোক্ত
গলা পেচিয়ে রয়েছে সরু সোনালী নদী
কাঞ্চন ছটা যৌবনে
অথচ আমি বৃদ্ধ হই আমি বৃদ্ধ হই
আমি বৃদ্ধ হতে হতে ভুলে যাই
- এক অজ্ঞাতবাস
বিস্তৃত রয়েছে নদীটির বিস্তারে
এবং আরো কিছু আখর-মোহ অনির্বাণ হলে
আমি ভুলে
যাই
ওর স্নেহস্পদ আমার কোনো উৎসই নয়
আমি জেগে রই আমি জেগে রই
ট্রিগারে
ভোরে ফুরিয়ে আসা প্রহরের কলতান
মহাসদন থেকে ধীরে লয়ে নেমে আসে
আমার নির্বাপিত রাজবেশ ।।
যারা হেঁটেছিল গতকাল
যে চোখ হেলান দিয়ে থাকে তীর্থের
চূড়ায়
ওতে হেঁটে যায় সানুতলের ব্যর্থ
অন্ধকার
শরীরের কোষে কোষে ডুবে আছে সনাতনী
কোপ :
যেন কেউ হিঁচড়ে টেনে গ্যাছে চাবুকের
দাগ
চেয়ে দ্যাখ, চেয়ে দ্যাখ যেন পদাবলী
লিখে গ্যাছে শঙ্খমাছ
নিনাদে ভেসে আছে উজানের চূর্ণ স্রোত
আমি চিনি ওদের,
ওরা নীলকন্ঠ পরিচয়ে নগর পেরিয়ে
যায়
ওরা চোখে চোখে ঢেকে রাখে বিদিশার
জলাশয়
এই যে বৌদ্ধমঠ, এই যে লাজুক লতার
ক্ষেত্রভূমি
পেরিয়ে
এসেছে যারা
বারান্দায় ফেরার আগে পুড়ে গ্যাছে
পিঠ
পিঠে চাঁদ নেই, বৃষ্টি-মিথুন অঞ্চল
নেই
তবু পাঁজরে গাঁথা
অবিনাশ
এখানেই পড়ে ছিল ফুটপাতের অবনত মুখ
ছড়িয়ে ছিটিয়ে চলে গেছে ওরা, ছড়িয়ে
ছিটিয়ে পড়ে আছে খই
এই দ্যাখ, এই যে কুড়িয়ে নিলাম সব
এতসব বীতশ্লোক এইসব তোমারই
খেয়ে দ্যাখ বাছা, এতে বিষ মাখা
নেই
ওই দ্যাখ যারা হেঁটে যায়, তারা
হেঁটে যায় অবতল বুকে
তারা গতকালও হেঁটেছিল এই ফুটপাতে
যা কিছু মনে রাখেনি
তারা
তাতে বিভোর রয়েছে
সুখ
যদি দুর্যোগ আসে পুনর্বার, যদি ডুবে
যাও পুনরায়
যদি ডুবে যাও তুমি আয়ুর অন্তরে
!
-- খেয়ে নাও বাছা, খেয়ে
দ্যাখ
এই যে বিদায়ী খই এতে বিষ মাখা নেই ।।
ভগ্নরেখা
নিজেকে ভালবেসে দেখেছি :
আলোর জঠরে সম্মোহনী বাঁশি বাজায়
অন্ধকার
নদী পুড়ে যায়, পোত জ্বলে জ্বলে
যায় অনাঘ্রাত
বাতাসে
স্রোত ভোলেনি নৌকার গানে মোহনার
অভিমান
যে ঘরে জন্ম নিয়েছে পৃথিবীর মহাকাল
দেওয়ালের বেষ্টনী চারিপাশে
ছোট হতে হতে আমরা সবাই সিন্ধুর সমীপ
আনত বিন্দুস্থ বিভাজনে
ক্ষোভ নেই, স্বকীয়-ভুলে রেখেছি ক্ষমার
আঙ্গিক
তবু
এই সিন্ধুতে একটি আকাশ-বিভোর বাঁক
থাকলে
হয়ত
ইতস্তত বিন্দু জুড়ে অমর্ত্য-মালা
পাওয়া যেত ।।