বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০

বিকাশ চন্দ


বিকাশ চন্দ

জন্ম মুখ

অধোগত শরীরে কি নেশায় ছুঁয়ে যায় মরশুমি ফুল
নিশিথ সময় কুয়াশার রঙে ভেজে,
অনবদ্য ভাব ঘোর আলোময় জ্যোৎস্না---
প্রতিচ্ছবির আড়ালে শরীরময় জোনাকি নক্সা কাটে।


সংসারী উঠোনে সব ঋতু ফেলে গেছে ছায়া
তুলসী তলার সকল প্রতিকৃতি বারোমাস একা,
ধারে কাছে ঘুরে বেড়ায় ছায়া নাকি সভ্যতা---
কিছু বিমুগ্ধ গাছ প্রতিদিনই একই রকম পরকীয়া,
অনুভব প্রিয় চাঁদ ছায়া লোফালুফি আকাশ জুড়ে।


নীল সাদা মেঘেদের আড়ালে লুকোনো আলোর ঝলক
কিছু অসহিষ্ণু পাখিদের পালক গাছের পাতা,
ঢেকে রাখে মাটি ও মানুষের অজস্র বুকের ক্ষত---
কখনও সখনো বন বসতির মহুল গন্ধ মাখে নগ্ন গায়।


আত্মকথার ভেদাভেদ ভালো বোঝে মোহময় কাল
অন্ধকার প্রতিদিন খুঁজে দেখে অন্ধ জীবন স্পর্শকাতরতা,
এখনও তো মৃদু সুর ঘুম পাড়ানি গান চলে আবহমান---
ক্ষতময় জ্বালামুখ প্রতিদিন ভেসে যায় জলের অতলে,
স্রোতের ভেতরে জাগে জন্ম মুখ ভাঙে ঢেউ আলোর বলয়ে।






অন্য ফেরিঘাটে

 খেয়া পারে এলেই কেবল জল হয়ে মিশে যাই---
অন্য শরীরে নেহাতই হাতের চেটোতে দৃষ্টি উপাখ্যান,
মিলেমিশে যাবজ্জীবন প্রতিদিন ভসে যাই,
ভেতরের স্রোতে নির্বাক বিধান খেলে যায়----
কখনো আগুন কখনো জল খেলা,
মন আর মানুষেরা সবাই একটু একটু শ্বাস ফেলে---
এপারের ফেরিঘাট পাড় তুমুল  উচ্ছাস অন্য পারে।    

দূরত্ব এড়াতে হাত ধরে টেনে নিল একটি মেয়ে----
অস্ফুটে বলে ছিলাম ধন্যবাদ, চোখ দুটো মায়া ময়,
অনিঃশেষ দু'টো ঠোঁট নড়ে ছিল উষ্ণতর সুখ----
জল পেরিয়ে প্রতিদিন ইট পাথরের ঘরে,
যে কাজ শেষ না করে পালাই কিভাবে---
খেয়া পারাবার ওপারের হাত চোখ মুখ
বুকের ভেতর উত্তাল জঙ্গল হঠাৎই নড়ে ওঠে---
কেড়ে নিতে চায় সমস্ত সুভদ্র সম্ভ্রম সকল।

তার চেয়ে পালাই বরং অন্য কোন সামাজিক ঘরে---
না হয় দেখার প্রত্যাশায় ফিরে যাই অন্য ফেরিঘাটে।







চেনা মানুষের ছায়া

হাত আর হৃদয়ের কতখানি যোগ---
পাথর চাপা কপালে করাঘাত,
বর্ণ অক্ষর শব্দাবলী মানবিক সংযোগ----
জন্ম কথার গভীরে অবিরত সংঘাত।

কুলুজি--ঠিকুজির হিসেব খুঁজছে কেউ---
ক্ষয়িষ্ণু সময় বোঝে না কুয়াশার বুক,
বালুচর বোঝে বেদনা মাখানো ঢেউ---
অমোঘ সময় জীবন মরণ শস্য সুখ।

এখন প্রভুরা দাস খত দিতে বলে---
অভাবিত শূন্যতায় বর্ষাহীন ফাঁকা মাঠ,
কাটা কুটি খেলা অর্থ আর লোক বলে---
এসে দেখো খোলা বুক শুকিয়ে কাঠ।

রাজাসনে লোভ চেনে আলোর বিলাস---
অজুত প্রশান্ত রানী আড়াল করেছে ক্রন্দন,
চরম সময়ে ধুলো ঝড়ে উড়ে যায় বিশ্বাস---
শূন্য সময় তত্ত্ব কথায় রৌদ্র ছায়ার বন্ধন।

জীবন জেনেছে অকথিত আত্মকথা---
সবুজ গন্ধী বাতাসে নাচে গাছের পাতায়,
ভাবী কালের কথারা থমকে বিদ্ধ ব্যাথা---
মানুষেরা বেঁচে থাকে চেনা মানুষের ছায়ায়।