শর্মিলা মাজী
জলের কাছে
নদীর কাছে গেলাম, আমরা তিনজন,
পিকনিক হয়েছিল, গাছের ছায়া ছিল।
নদীর স্রোতে ভেসেছিল, মন উচাটন,
নৌকো বাঁধা ছিল, ছলাৎ-ছলাৎ জলও।
লাল-নীল সাদা-কালো, রঙের বাহারে,
রবিঠাকুরের গানে, সুরের মায়াজাল,
নদীর পাড়ভাঙা ডাকে, বিষাদ জড়ায়ে,
জলেতে ছায়া পড়ে, নৌকোতে চলাচল।
পাড়ভাঙ্গা বুকভাঙ্গা, একসাথে ধকধক,
কতকথা স্রোতে ভাসে, জলআঁখি টলটল।
নদীপাড়ে ধানক্ষেতে, সাদাঢেউ বক!বক!
মনে হয় বসে থাকি, নদীপাশে চিরকাল।
কতকিছু শেখা বাকি, জলের যে আছে প্রাণ,
একদিন মিশে যাব
মোহানায়,
মহাকাল!
সমুদ্র টেনে নেবে, যেখানে চির ঢেউগান,
নদী তুমি জীবনের, চেনা সুর-লয়-তাল।।
একা কিন্তু একা নয়
সবকিছু
ভালোবেসে থাকা যায়, ভালো বা খারাপ, সবুজ চাবাগানের ঢালুপথ বেয়ে ঝলমল রোদ্দুর অঞ্জলী ভরলে হাতের পাতা দুটি হয়ে
যায় একটি গোলাপ কুঁড়ি বা পদ্ম, খুলে দিলে একটি দোয়েল হয়ে উড়ে যায় এই চৈত্রপবনে দারুণ
সংকটদিনে। একা থাকলে অনেকগুলো আমি বেরিয়ে আসে, জীবনের প্রতিটি স্তরে যারা
কলকল্লোলে ভরিয়েছে ভিক্ষাঝুলি, না দান নয়, নয় উপহার, নয় বঞ্চনা, পথে পথে মিলেছে কত
স্নেহধন,
কত
ভালোবাসা সোনা! বেশকিছুদিন একা থাকলে অনুভূত হয় প্রতিটি স্তরের অবিরাম আনাগোনা।
ভালোবাসার মহীরুহ
এমন সংকটদিনে,
নিজেদের ঘিরে রেখেছি
চার দেওয়ালে,
ক্রমশ বুঝছি পথের
টান,
পথের দুপাশের মানুষ
নাহলে,
জীবন বলে কিছু হয়না,
এ কেমন বেঁচে থাকা
কিছু রসদের ভিড়ে!
কাজের ফাঁকে সময় দিত
উঁকিঝুঁকি,
অবসরের ছিল না সময়,
এখন সময়ের সাথে
ওঠাবসা তবু অন্তরঙ্গ কাটে না সময়!
এ কোন করাল
আতঙ্কছায়া বিশ্বজুড়ে! সভ্যতা
মন্থনের তীব্র বিষ!
আমরা চলেছিলাম
দ্রুতগতির রথে চড়ে,
মানবতার ভাষা পাঠ
করিনি কিছুই,
এখন বুঝছি ঈশ্বর, ধর্মের পরিভাষা,
হাসপাতাল হাসপাতালেই
ঈশ্বরের যাওয়াআসা,
কোনো ধর্মই এক করতে
পারেনি আমাদের!
শুধু বেঁচে থাকার
তাগিদেই,
আমরা নির্মাণ করেছি
দিগন্ত জুড়ে
এক ভালোবাসার মহীরুহ,
আমরা একটিই প্রাণ,
চারদেওয়ালের ভিতর
মাথা খুঁড়ে মরে অহরহ।।