রীনা
তালুকদার
বিস্মৃত হয়ে যায়
পৃথিবী
যাবার আগে সব
মায়া ছেড়ে যায়
এই নশ্বর
জীবনের দেহ
পরম প্রিয়
মানুষেরা পর হয়ে যায়
বস্তুগত বিষয়
চেতনা চিহ্ন গৃহ
কেবলই অন্য
এক পথের দিকে ধাবিত সময়
আলোর কণা
ভাসতে থাকে দুÕচোখের তারায়
ঝিলমিল
পর্দার পর পর্দা ওঠে
বিস্মৃত হতে
হতে আর মনে থাকে না কিছুই
তারপর না
থাকাটা সত্য হয়ে ওঠে
এই
হাসি-কান্না, মান -অভিমানের খেয়ায়
ভেসে ভেসে
মানুষ মৃত্যুকে স্বাগত জানায়
আপন আপন
সম্পর্কের অদৃশ্য ছেদ আঁকে
এইভাবেই হয়ে
যায় বিস্মৃত মায়ার পৃথিবী।
জীবন এক দামাল মেঘ
বেঁচে থাকা
অপার বিস্ময় !
চিতা দৌঁড়ে
সময় হাটে
কখনো কাম্য
নয় ধোঁয়াটে অন্ধকার আকাশ
বাঁচি যতদিন
দীর্ঘ জীবনের গান গেয়ে যাই
নক্ষত্র পোড়া
চোখে পৃথিবীর যৌবন রূপ ফোটে
সর্বজনীন
লোভী জীবন এক দামাল মেঘ
অগণিত দামাল
মেঘ কোথায় যায় ?
খুঁজে খুঁজে
দিশেহারা হই
আমরা সংকীর্ণ
হয়ে ওঠিএকে অপরের কাছে
অ্যাথেনার
মন্দিরে পুজো ছাড়া বাঁচি না
উর্ধ্বে
গ্রীবা মেলে উত্তপ্ত মরুতেও
কালশীটে উঠ
চলে অজানার দিকে
হৃৎপিন্ডের
গোঙানিতে না ফেরা জীবনকে কাছে ডাকি
আমাদের পঞ্চ
ইন্দ্রিয় আমাদের হত্যায় মেতে ওঠে
অমাদেরই আমরা
ভালোবাসতে নির্বোধে কৃপণতা করি।
না ফেরার দেশে ...
আমাদের দুঃখ
সুখে জড়িয়ে থাকে অসংখ্য মৃত্যু
চারপাশের
অনাকাঙ্খিত পাহাদার
অবহেলা যায়
না করা না ফেরার গন্তব্যটা
জীবন জাগিয়ে
রাখে জন্মের আনন্দ
ভয়াল আঁধারে
আলো ছড়ায় জীবনের ফসল
ধাবমাল কাল
বাঁচে কর্মে
ঝাঁক বেঁধে
আসি আমরা সুবজের দেশে
ইত্যকার
দাবীতে মিছিল মুখর সংগ্রামে থাকি
পৃথিবীর খাতা
লেখে উত্তরাধিকারী ইতিহাস
দলছুট হয়ে
যাই যাবার বেলায়
অনাদিকালের
ফিরতি গন্তব্যে
পা বাড়াই
শুধুই একা !
প্রতিটি
মৃত্যুই মানুষের মধ্যে আত্মহত্যা করে
টুকরো কাঁচের
এ পাশ ওপাশ
এ পাশটা
স্বচ্ছ জগত জ্যোতি
ও পাশটা জলের
ছাট্ কুয়াশা কুয়াশা
যেতে যেতে
পিছনে থাকে পড়ে
অতৃপ্ত
স্বপ্নের পায়ের ছাপ !
আঁধার তিমিরে আলোর কণা
যেখানে থাকো
তোমার মূল যেনো প্রকৃতিতে
কবিতার শিরায়
শিরায় মিছিলের ধ্বনিতে
এই না দেখা
কোনো ব্যাপার নয়
তুমি আছো
কবিতায় নিশ্চয়
কারো কারো
হৃদয়ে প্রোথিত শব্দে
উচ্চারিত হয়ে
ওঠবে দু:খে, নির্যাতনে
কবি সে তো
হারিয়ে যাবার না
আঁধার তিমিরে
আলোর কণা।
ঘরহীন ঘর
অতৃপ্ত
জীবনের সুখ খোঁজা যাযাবর পাখি
শূন্য লতায়
বাঁধে হলুদ আশার অঞ্জলি
কে বলে অমল
সুখ আছে নির্মল ভূবনে
ধূসরিত আলো
আঁধারি ছবি দূরে দূরবীণ আঁখি
সুখ তো- আকাশ
মাটির মিতালী প্রতিবিম্ব আয়নায়
অসুখের আগুনে
পোড়ানো একরোখা দিয়াভূত
তন্ন তন্ন
খুঁজে বেড়ায় নির্মেদ স্বপ্নে হীরামন
ঘর থেকে বের
হয়ে ফের ঘরহীন ঘরেই ফিরে যায়।