পল্লবী দাস
মৃত্যুর আগে
মৃত্যুর আগে যে মৃত্যু হয়, বড্ড শোষক ,
অস্থিমজ্জাকে বরাবরই শুষে ;
ভুলভালের ধার ধারেনা ,
ইষ্টনামও জপেনা ;
এক ঘায়ে সোজা বাপাশের দরজা ভেঙ্গে
সব লুটে নিয়ে পালায় ,
পারলে একজোড়া করতাল ঝুলিয়ে রেখে যায় ,
ছিটকিনিটাতেও জংকার পরা ,
বৃষ্টি পড়ে পড়ে শুকায় ;
অবাধে ঘুরে নিতান্ত বুর্বক !
পাঁচিল
আমার গল্পে মাত্রা নেই --
অভাব যে দাড়িপাল্লাকেও কিনে নিয়েছে
বিষটা জমাবো কোথায় ?
থেকে থেকে ঘরের ভিটেটাও
পচতে শুরু করেছে ,
আর দিন দশেক বাকি--
এরপর যে আলতা মুখে মাখতে হবে গো ;
ছন্দ তো বেমিল বুঝলাম ,
একটু শ্বাস ধার দেবে ?
আয়না মুছবো !
বৃষ্টিভেজা বিকেল
বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি
,
কফি হাতে বারান্দায়
নিশ্চুপ
কতগুলো খাম ,
ভালবাসার ক্ষতিতে চাপা পড়া ;
সঙ্গে একটা জ্বলন্ত চুরুট ,
নিকোটিনে চেনা একটা গন্ধ;
অল্প আধটু স্মৃতিচারণ ,
পুরোনো এলবামে মাথা গুজে ;
তারপর আবেগকে
বাস্তবতা বুঝানোর মিথ্যে চেষ্টা ,
আবেগ অভিযোগ,
এরা না সত্যি
মাইগ্রেনের মত ,
না সারলেও একসময়
অভ্যেস হয়েই যায় ,
আজকাল আবেগ নেই ,
অভিযোগও নেই
হয়ত ভালোই আছে ,
ভেবে কফিটা শেষ করা ,
খারাপ থাকার শুরুটা বোধয় এভাবেই !
কী দারুণ
বৃষ্টিভেজা বিকেল ,তাই না ?
চিরকুট
সে কবেই চুরুটের ধুঁয়ায় শ্বাস আটকে গেছে ,
নীল থেকে নির্জনে
প্রতিটা গোধূলি আজও এভাবেই অন্তঃসার ,
শেষ কবে বৃষ্টিতে ভিজেছি ঠিক মনে নেই ,
সাদামাটা পরিত্যক্ত শহুরে অভ্যাস
কিছুটা হলেও গায়ে লেগেছে,
শহরটা কেমন যেন ,
বদমেজাজী , আঁকড়ে ধরে, তারপর গলা টেপে ;
ডায়েরিটা কাঁধে মাথা রেখেও হাঁসফাঁস করে ,
অ্যালজোলাম খুঁজে তন্ন তন্ন করে ,
কি বিশ্রী আনাগোনা ,
বারান্দায় একঝাঁক স্মৃতিরঙ্গা রোদ উঁকি মারে ,
তবুও কলমটা কেমন যেন অসাড় হয়ে বসে আছে
দু পা কোলে তুলে ;
চিরকুট তুই সাক্ষী হবি?
ভাসানের ......
হয়ত কোনো একদিন
যেবার তুমি পিছু ফিরে ডেকেছিলে-
আমার আঁচলের গিঁটটা খুলে
শুকনো পাঁপড়িগুলো দেবো ভেবেছিলাম ,
কিন্তু দূরত্বটা বড্ড বেশি ছিল ,
নাগালের বাইরে ,
শুকনো পাঁপড়ি দিনে দিনে
আরও শুকনো হয়ে এসেছে
,
এখন হয়ত হাতে নেওয়া অসম্ভব ,
গুঁড়ো হয়ে যাবে ,
তাই খাতার ভাঁজে
রেখে দিয়েছি যত্নে ,
কোনো একদিন হয়ত কাগজে মিশে যাবে ,
তখন না হয় কাগজটুকু ছিঁড়েই তোমায় দেবো ,
যদি নাগালে পাই,
এই রাস্তা যে বড্ড পাষাণ !