ইন্দ্রাণী
সরকার
তুমি যে এত সুন্দর
নুড়ি-চমকানো
পথে নিত্য
তোমার অবুঝ
যাওয়া আসা
গোলাপী তোমার
এত প্রিয় কেন ?
গোলাপের
সৌরভে ভরে থাকো তাই ?
চোখে স্বপ্ন
নিয়ে চলে যাও শুধু,
যমুনায় দেখো
বসে আছে রাই
রূপের ভিতর
থেকে ফুটে ওঠে
লাবনী মাখা
গোলাপের পাপড়ি
আমার মুঠোয় ভরা
একরাশ
ক্রিসেনথিমামের
ঝরা কলি
মৌন
পরিক্রমায় পৃথিবী ঘুরে নেয়
তার আমিকে এক
দিন এক রাত
নিঃশ্বাসে
তোমার গন্ধরাজ
মেঘ কালো
চুলে পাহাড়ের নীরবতা
রক্তিম ঠোঁটে
ঝরা মেপলের আল্পনা
একদিন ঠিক
খুঁজে নেব সেই পথ
যে পথে
শকুন্তলা হরিনশিশু খুঁজে নেয়
যে পথে
ডাকহরকরা ভৈরবী গায়
দেখো একদিন
ঠিক তোমায় ছোঁব
এই সমস্ত
আমার আমিকে নিয়ে
আকাশের
নীলিমায় ভরে যাবে
সোনালী সুখের
অপরূপ কারুশিল্প
উজ্জ্বল আলোর
অবাক ছন্দময়তায়
খুঁজে পাব
আরব্যরজনীর চুম্বন
তুমি যে এত
সুন্দর,
তাই তোমায়
চেয়ে চেয়ে দেখি |
চিত্রকল্প
বাইরে অলৌকিক
অপার নিস্তব্ধতা
অচেনা
রহস্যের মত সাদা সাদা বালুকণা
পথ প্রান্তর
জুড়ে ছড়ানো অসীম উদাসীনতায়
সবুজ ঘাস
পাথর কুঁচির মত চাপা পড়েছে বালুকণায়
তুষারপাতের
চিহ্ন পাতাবিহীন শাখায় শাখায়
প্রেরণার মত
উড়ে যায় ঝোড়ো বাতাস
নির্জন
পথঘাটে স্বর্গের শান্তি যেন উপচিয়ে পড়ছে
চিত্রকল্প
বর্ণনায় এ আমি আজ মৌনী আত্মস্থ।
নতজানু সত্তা
অনন্তকাল
শুকনো বাঁশপাতার মত
কাঁপে মনের
এলোমেলো চিন্তাগুলো,
যে ভাবনাগুলো
কেউ যেন গুঁড়িয়ে
পায়ে দলে
গিয়েছিল আদিম ইচ্ছেয়,
কেন জানিনা
তারা আবার ফিরে এল।
সুদূরপ্রসারী
দুটি ধ্যানস্থ চোখ নতজানু,
স্তব্ধতা
ছুঁয়ে যায় রাতের সহস্র তারা।
তুমি কি এলে? মায়া না কি
স্বপ্নছায়া ?
শত শত ঢেউ
আছড়ে পড়ে সমুদ্রতটে
তুমি কি করে
একটি ঝিনুকই কুড়োলে?
তোমার
ইচ্ছেগুলোকে মুঠোয় রেখে
আমি একা
হেঁটে যাব সামাজিক পথ
তবু আঁচড়
লাগতে দেব না তার গায়ে
যে
দ্বিখন্ডিত সত্তাকে সযত্নে জুড়ে দেয়।
ধরা ছোঁয়ার বাইরে
আমার কোনো
নিজস্ব দেবতা নেই
যাকে ধূপ
ধুনো দিয়ে রোজ আরতি করি,
যার ওপর আমার
সীলমোহর লাগানো আছে।
যে সব
দেবতাদের একাধিক দেবী আছেন,
যারা ধরা
ছোঁয়ার বাইরে, তাদের আমি ভালোবাসি
কারণ তারা
আমায় প্রথমা দেবী করে রেখেছে।
দ্বিপ্রহরের আড়ালে
অসহনীয় ভালবাসায়
পুড়ে যায় ওদের শরীর
প্রকাশের
ভাষা খুঁজে না পেয়ে তারা হয় মূক, বধির
চোখের
খরস্রোতা বানে ভেসে যায় আমার মনের ঘর।
যেখানে
সারাদিন শুধু আনন্দ আর গানে ভরে উঠত
সেখানে আজ
খাঁ খাঁ শূন্যতার স্তব্ধ মরুভূমি
রাত্রি তুমি
নিশ্চুপ থাক, ডুবে যাও
দ্বিপ্রহরের আড়ালে
আমি অসম্ভব
চন্দ্রিমা, অসম্ভব খররৌদ্র
আমায় লুকোবে
কোথায়, এত আভিজাত্য তোমার
আছে কি?