অনিন্দ্যকেতন গোস্বামী
বৃষ্টিদিনের চিঠি
সৃজিত,
তোমায় চিঠি লিখছি-
তুমি এবার বাড়ি এলে
আর আমার সঙ্গে দেখা করতে এসো না যেন।
এ কথা ম্যাসেঞ্জারে বা স্কাইপে বলতে পারতাম,
পারিনি কারণ দুর্বৃত্তরা ফোন কেড়ে নিয়েছে।
উত্তপ্ত কথা আর হড়পা বানে
ভেসে গেছে তোমার এত দিনের দেওয়া উপহারগুলো...
আমার হাত পা দেহের অস্তিত্ত্বকে তুলে দেওয়া হয়েছে
বড় আদুরে এক রাজ্য সরকারী চাকুরের হাতে।
বসার ডাল নেই ভেবে মন প্রেতাত্মার মত উড়ে গেছে শুধু।
বায়বীয়....
আমার মনের ভেতরে বাবা ভাইয়ের ‘রাজি’
আমার মনের ভেতরে লক্ষ আঁতস বাজি।
বারুদে ভরে গেছে বাতাস, আমার ঘর...
পরাণ ফেটে দুম্ দাম্ আওয়াজ বেরিয়ে আসছে শুধু...
কারণ
আঁতস পুড়ে
মন পুড়ে
সাতপাক ঘুরে
মহা ধূম করে আমার বিয়ের বন্যা এসেছে
সাতদিন সাতরাত বৃষ্টি।
সৃজিত,
তোমায় চিঠি লিখছি-
এই ভেবে, যাতে তুমি কষ্ট না পাও।
তবু তুমি বাড়ি এলে
পাগলের মত আমাদের এপাড়াতে এসো না যেন।
কদিন বৃষ্টি হয়েছে খুব
বৃষ্টির ছাঁট্ লেগে ভিঁজে গেছে আমার নতুন আঁচল।
বারবার মনে হচ্ছিলো তুমি কি বেকুব,
সংসার পাতবে বলে পয়সা কামাতে গেছো খুব...
এভাবেই বুঝি বৃষ্টির দিনগুলো চলে-
এখানে যে অবিরাম শিলাবৃষ্টিতে নেমে আসবে
আগুন ছোঁয়ানো বরফের কালসিঁটে দাগ।
হড়পাবানে আমি ভেসে যাবো
ভাবতেও পারোনি তা তলে তলে,
............বৃষ্টির
দিনগুলো চলে
সৃজিত,
তুমি কি
বোকা।
এ পাড়াতে এসো না কিন্তু আর...
এখানে থেকো থেকো পলি পড়ে আছে
জেদ ও প্রতিহিংসার...
দাদা কাকা বাবার জিভ থেকে ঝরে গেছে
দলমা পাহাড়ের ধ্বস। তার পলি...
তবু যদি তুমি জেদ করে আসো এ প্রান্তে
দেখবে যা কিছু চিঠি তা কিছু সত্যি বটে
সাতরাত সাতদিন ধরে অবিশ্রান্ত বৃষ্টি ধারায়ৃ
ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে
শুধু যে ধারাটি পড়ে আছে
তা শুক্ন......নিরাস বালি......
খটখটে......
সহন
এবার এসি চালাও
বিছানায় পশম পশম ঠান্ডা ঢালা প্রয়োজন
বালিশ আর পরাণের খাটে হাত দেওয়া যাচ্ছে না
মনকে ঢালাও করো ঢালাও
বিছানায় দু'বছর ধরে করছি
প্রমের পালন....
ঊর্ধগামী
বহুদিন বাদে দোকানে ঝোলানো দড়িতে
আগুনের ঊর্ধমুখী দেখলাম।
কেউ বিড়ি তো কেউ সিগারেট....
আগুন পুড়ে পুড়ে সুখের বদহজম ঊর্ধমুখী
আমি শুধু দড়ি দেখছি.....
কি ভীষণ ছোট হচ্ছে...
আমি বেটো হয়ে যাচ্ছি ক্রমশ।