বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

তৌহীদা ইয়াকুব



তৌহীদা ইয়াকুব

বর্ষা

 ঘুম লেগে ছিল অনভ্যাসে

মেঝের ঝালর থেকে মুছেনি  তখনও সবটুকু রাত।

খবর হোল এই পরবাসে সারাদিন ধরে 

পাহাড় ছুঁয়ে থাকা মেঘের মেয়ে 

অতলান্তে সে খুব নেমে যাবে আজ ।

স্মৃতির বৈভবে -

বর্ষাতি সুখ বিলাসী স্নান গল্পের চিলেকোঠা

সব থেমে থাকে নিঃশব্দ অসুখ

টেনে জুড়ে দিয়ে সেলাই করে দূর ও সময়।

বিস্ময় প্রকার উন্মেষ শুধু ভাষাহীন এক

আদেখলা ঋতু মত্ত মাদল নিপ বন জাগে। 

   
কোথাও তখন স্যাঁতস্যাঁতে ঝোপ কিংবা অথৈ,

ঝুলে থাকা খর, সেখানে শুধুই ক্ষয়ে যাওয়া বিভা

ক্ষুধা আর জরা নিবিষ্টতা মেপে

আয়ু দেখে যায় বোধ হীন চোখ

প্রকৃত সংকট  কেবলি জলজ

কলমি-শালুক নিপাট লতানো 

জীবন সমিপে।







দহন

সূর্য ও সমুদ্র দহন দেখি
বৃষ্টির ফোঁটায়
বড় শান্ত করে
শিতল করে খরায় ডোবা
চৈত্র দুপুর।

বেশ জানাশোনা লেখা পরিচিতি পৃষ্ঠা
 শ্যাওলার চোখ আর নিমঘ্ন জল।


এবেলায় কখনও কি
স্পর্ধিত অহম কেউ জ্বালায় ?
তেমন উদ্ধত আক্রোশ দেখা দেয়  দুচোখে? 

সমুদ্দুর ঘুরে আসা
হিমেল হাওয়া
শহরের মুখেই পড়ে নেয় মন্দরাতের উপাখ্যন।







সংকল্প
 
বিহ্বলতায় ঝুলে থাকে
সু -ডাকা পাখি
পোস্ট দানা সুখ ...

আর লোমশ ঘাতক হাত
নীতিকথা ছিঁড়ে ফেলে ।
তুচ্ছাতি তুচ্ছ ভুলও এড়াই নি রক্তচক্ষু।
ব্যথা আর কস্টের  অনুবাদ
অসঙ্গত, চেতন প্রকোষ্ঠে 
পাকে প্রকারে এই সব কিছু থেকেই যায়
আঘাটায়, সন্ন্যাস বাতাসে।

বিবেচনা মত -
গন্তব্য জানা থাকলে,
রাস্তা চিনে নেয়া সহজ হয়।







 অপর পক্ষ

যখন আমাকে নিয়ে চলে গেছে দূর
অন্ধকার নিয়ে বসে আছে একলা
ঘরের কোণ রক্তের মায়া। 
অকপট কিছু নাম দুদাতের নিচে ফেলে পিশে নিব ...
টুকরো করে ছিঁড়ে
ছুঁড়ে দেব ভাড়ারের পঁচায় ।


অক্ষর গড়েছে এক নিরাময় আশ্রয়
তখন আমি এক পায়ে শুধু তোমার পাশেই দাঁড়াই।
প্রজাপতি উড়ায় দিন
জোনাকের ডানায় রাত্রির ঘুম
তখন আদৃশ্য আবহ, স্মরণ কোষে
বিকেল-দুপুর-সন্ধ্যে গুলো বর্তমানের কৌটো ভরে ।


অভিসন্ধির ফাঁদ স্থির ভঙ্গিমায় ধরে রাখে ভেংচি 
সমস্ত সংকোচ থেকে মুক্ত করি হুংকার।

নাড়ির টান করতল ছুঁয়ে গেলেও
সবার আড়ালে রক্তের ভিতর ভর্ৎসনা শুনে 
ঘুরে দাঁড়ায় নি কেউ, দাঁড়ানো কি সহজ ?
যখন বিবিধ যতি চিহ্নে আটকে থাকে
যাবতীয় কষ্টের জমিন! 








বাঁধা সূচীপত্র

চক্রাবর্তে অন্তরালের অনুজ্ঞা
আপেক্ষিকতায় দুর্বোধ্য ধাঁধাঁ মনে হলেও
হতে পারে
মূলত একই বিবমিষা ছেনে ঘেঁটে
স্থির বিন্দুতে ফিরে আসে।
আঙিনার আবছায়া সাথে চলমান গল্পেরা
জড়াতে থাকে বিষণ্ণ শাড়ির কারুকাজে।

এভাবে সময় কেবলই ঝিমায়,
কেবলই পার করে আসা রাত
থেমে থাকে সকালের মেঘে ।

যখন তোমার কথা ভাবি
সহজ জলের সুর বেজে চলে,
সহজ ভ্রমন যখন
নির্জন প্রান্তরে এসে থামে
বাস্তবিকই এলোমেলো হই।
বাস্তবিকই ছন্নছাড়া অনুনাদ
গেরস্থালীর বাঁধা সূচীপত্রে ঝুলে থাকে !







উৎসব


হলদে পাতার নিচে চাঁপা পরে আছে যে সবুজ
তাকে ফিরায়ে দিয়ে যায় অন্তরিক্ষের স্পৃহা।
বন বনানির কাছে হাওয়া গিয়ে বলে বৃষ্টির কথা
এক চিমটি আনন্দ পথের বাঁকে হা করে আছে
নবান্নকে  নিয়ে আসে গৃহস্থালির চড়ুই ।

চক্রযান  বিষণ্ণতা নিয়ে  উবে গেছে ।
ক্ষীণ আলোর নিচে রাত্রির ঘুম
স্বপ্নের বরাবরে উৎসব জেগে থাক -
রুগ্ন হাত , নগ্ন কপাল আর লাল  সবুজ এর সমান্তরাল।