বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

বৈদূর্য্য সরকার



বৈদূর্য্য সরকার

শ্রেণীসংগ্রাম

জোড়াসাঁকো বাসস্টপে কবিতার বদলে গণিকা, ঈশারা হাসিতে
ভয় পাই ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর সুতানুটির বন্দরে ।
নাম হারানোর পর নির্ভরতা পাবে ঈশ্বরেতে
ভীষণ গম্ভীর কথা শোনা কানে ভাবতে বসেছি
কার জন্য বাঁচিয়ে রেখেছি বৃষ্টি সন্ধে
প্রতিটা উড়ে যাওয়া ওড়নাকে ভাবি লাল নিশান’ !
কোথায় যেতে পারো তুমি ঠিকানা খুঁজেছে আহাম্মক
যে রাস্তায় একদা মধ্যপ্রাচ্যের তাড়া খাওয়া গোষ্ঠীপতি
রিলিফের ভরসায়, কান্নায় যে পথ ডুবে গেছে জলে
সেই পথ দিয়ে জন্মভূমির বিশ্বাস তোমার বিশ্বাস
মনুসংহিতার সব কোটেশান নিয়ে লোফালুফি খেলি ।
খিদে চাপতে চাপতে বৃষ্টি মাপতে মাপতে মেধাবী মেয়েরা
ব্যালান্স করে এগোতে বিপদে পড়েছে চামচেগুলি কম্পিটিশানে,
গোটা শরীরে বৃষ্টি ঘাসের কোমলতা ঘাম গন্ধ...

এবার কি থামতে পারবো !






প্রিয় কাল্পনিক

শরতের বৃষ্টির সকালে একা একা ঘরে বসে থাকা
শুধুমাত্র কিছুটা সময় একা থাকার জন্যই
নিজেকে লুকিয়ে রাখি, ইচ্ছে করছে না দুপুরে বেরোতে,
সামাজিকতা রক্ষা করার সম্পর্ক রাখার কথা
কল্পনায় বেশী ভাল লাগে ।

তোমার কান্না অন্য কাউকে মনে করাচ্ছে বলেই
আমি বারবার দেখতে চেয়েছি তার প্রাণখোলা হাসি,
নিজেদের বোঝাতে চেয়েছি স্মৃতি কিংবা খোয়াবের
বদলে মানবীয় সঙ্গের পথ চেয়ে বসে থাকা...

কে যে বেশী প্রিয়
                তুমি নাকি তোমার জন্য অপেক্ষা !

     



মুক্তি

ছিঁড়ে গেলে সূক্ষ্ম যোগাযোগ কিসের কম্পিটিশান
শীতের শেষ বৃষ্টিতে যখন আসতে পারবে না
আমার ক্লান্তি আশ্রয় পেল গণিকার বিছানায়,
ছাপোষা সব চাওয়া পাওয়ার এ দেখন হাসি
দুঃখ জাগানিয়া বসন্ত বাতাসে তুমি এতো ক্যাসুয়াল !

গায়ে পড়া লোকজন ভিড় ঘাম দৈন্দদিন হাসি
দেরী করে বাড়ি ফেরার গঞ্জনা ঘোর ডিপ্রেশানে
তোমাকে মুক্তি দিয়েছি, নিভু আলোর অনুশাসনে
নিয়তি হারিয়ে ফেলা বারবার,
ছুটি দিতে পারি সকাল নটার বাসে গ্লানি থেকে
কিভাবে মুক্তি পেয়েছ এক ঘরে রোজ ফেরার মলিনতা ।






হিজিবিজবিজ

অজস্র কাটাকুটি রাস্তায় অঙ্ক না মেলার সন্ধে
নেমে এসেছে যখন আমার ঠোঁটে বৃষ্টি হয়েছ,
অতীতের সাথে আমি লড়তে পারবো ভবিষ্যতে ।

কতদিন ধরে ভাবি কবে শীত আসবে শরীরে
আদর মাখবে কোল্ড ক্রিম তোমার আমার ঠোঁটে
কথা থেকে যাবে, কথা বলা হয়ে থেকে যাবে তুমি ।

একমাস ঠান্ডা পরবে বলে এগারো মাসের প্রস্তুতি
আমরা লুকোতে চাই নিজেদের থেকে, আলোর গভীরে
সূর্যের থেকে যাওয়া আলো হয়ে ।

নির্জন খোঁজার জন্য আমি থেকে যাবো এ জনঅরণ্যে,
আমার নাম হিজিবিজবিজ
তোমার নাম হিজিবিজবিজ
আমাদের সম্পর্কও হিজিবিজবিজ ।






সহবৎ

আমার ছোটবেলায় মন্দিরে অনেক দেবদেবী
সেসব কথা এখন শুধু পুরনো হওয়া গল্প 
মুছে যাওয়া মিথ্যে মিছিল এখনও মনে পড়ে
নগর সংকীর্তনের সুরে কাকে টানতে চাওয়া !
রোজ প্রশ্ন ওঠে কোন যুদ্ধে আমরা যাত্রী ছিলাম
এতদিন পর কাকে খুঁজি
কে যে হয়েছে মাথার ছাতা,  এ অঘ্রাণের বিকেলে
একসাথে পথ চলা মানে দু'টো গন্ধ হাত ধরে
বেলা পড়ে এলে । 
কারণ সিস্টেম ছিল প্যারাডক্সিকাল
ছোট থেকে শেখানো হয়েছে অযথা  হীনমন্যতা, 
তার ফলে নিজেকে ক্রমশ ছোট থেকে ক্ষুদ্রতর - 
দাঁতের ফাঁকে ঢুকে যাওয়া সামান্য টুকরো সব
তেমন অস্বস্তি হয়ে থাকে...
আমাদের ছোটখাটো কথা হাসি কান্না  গান প্রেম ।
ছবি জিনিসটা খুব বিভ্রান্তি তৈরি করেছে বলে 
হাসি মুখে পোজ দিই  নয়তো ক্যামেরা রাগ করে  !