বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

অশোক রায়



অশোক রায়

ছেদ

দিনটা এসেছিল ভেতর বাহির হয়ে
ঘণ্টা মিনিট মুহূর্তগুলোকে নগ্ন করে
কি এমন দায় ছিল তার কে জানে।
কিছু একটা চাষ করছিলাম ক্ষেতে
হাঁসেদের প্যাঁকপ্যাঁক বিছানো রোদ্দুরে
শুয়ে পড়েছি কখন মনে নেই।
পড়বেলায় চোখে ধরল রঙ যেই
চেয়ে দেখি আমার শরীরে আঁকিবুকি অজস্র
ঘড়ির শব্দ মাছের কাঁটা তারাদের জোনাকি
আমার মধ্যে এক শব্দ জন্মায়
দিনটা এসেছিল যেমন গেল তেমন
গোটা গোটা আখরে বিভেদের সাগরে ঢেউ
লুটোপুটি খায় বাঁধনহারা, দিশাহারা, এলোচুল
টিক টিক টিক, চলে ভেন্টিলেটর,
নিভু আলোয় স্পুটনিক, আবহের আকাশ।।




দামাল মধুবন

কালো টপ আর নীল জিনসে ম্লান গোধুলি 
বছরের শেষ দিনটায় আমি যেন আবিষ্ট মীন
সুন্দরকে গাঢ় করে কালো
এখানে সেখানে গভীর কুয়াশার হাতছানি
স্মোক্‌ড স্যালমন আমার পাতে কিন্তু
আমি চেয়ে আছি অচেনা চেনার বাঁকে
কখন দেখা দেবে আলো ফুটবে আঁধার
শর নিক্ষেপে বিগত যৌবন ফের ধাবমান
সহজ সুর ঠোঁটের নাগালে
আমি ঢেলে দিই সুধা পারাবারে
মখমল রোমহীন রোমক ত্বক রোমাঞ্চ
বিহ্বল সবুজকলি ধরে থাকা একফালি রোদ...




অন্তরীক্ষ-গো

ঘুম ঘুম চোখে ফ্লাইট ডেকে
নাইটি ছেড়ে কোনোরকমে
চোখের তারায় বিষণ্ণতা
আর মুক্তো হাসি পরে
মিষ্টি স্বাদের টুকরো টুকরো
কোমলতা ভালোলাগা 
তোমাকে আমাকে খাওয়ায়
অনেকটা সময় নিয়ে, আকাশে ।
লাস্যতার উদগ্র শিখরে
সহ্য করো জন্তুটাকে 
কখনো শরীরে কিসের টুকরো লেগে থাকে।
বেলা যায় রাত বয়
সিট্‌ বেল্টটা আরো চওড়া হয়ে
কোমলতাকে চেপে ধরে,
আলোড়ন নেই চোখে ঘুম নেই শুধু
মধ্য রাতের রক্তাল্পতায় ক্লান্ত শরীর জ্বলে।।




লং শট

অনেক দুরের পাহাড়ে একটা কালো পাথর
আলসের ওপরে পায়রা
ক্যামেরার ভেতর দিয়ে আলো আর আঁধার
রঙীন স্বপ্ন কাইট্ ওড়ে মাঝখানে
আমাদের মধ্যে ভালবাসা
কিলবিল করে অজস্র মুখ ফানুস মোমবাতি
সপাট ধামাকা ভাঙ্গে রাস্তা গাড়ি নরনারী
নিস্পন্দ আভেন্যু বুলেভার্ড
লং-শট ক্লোজ-আপ ফ্রিজ স্বপ্ন দুফাঁক।।





সম্পর্ক

দিতে চেয়েছিলাম দিন রোদ বাতাস
যাতে সে বড় হয় একান্তে 
নিজের আঙিনায় ফুলে ফলে শাখায়
বিস্তৃত সবুজ নীল প্রান্তরে
তাকে জড়িয়ে একে একে বছর
কেটেছে কত রাত স্বপ্নের সাথে আলাপ
ভেবেছিলাম ভিত বেশ পোক্ত হয়েছে
কিন্তু না উচ্ছল নদী আজ গ্লেসিয়ার
পত্রহীন শুকনো অলিভ শাখা নিয়ে
দূরে ঘুরে পরিশ্রান্ত আমি
আর লড়াই নয় এসো শান্তি
জীবন প্রান্তে বৃদ্ধাশ্রম নয়
প্লীজ শৈবাল প্রস্তরে এসো আবার প্লাবনের আগে।। 





বইয়াঁ না ধরো

খুসরো না গালিব কে ধরা পড়লো
তোমার রক্তাক্ত ঠোঁটে না কি
ঈষৎ আদ্র সবুজ রোঁয়াগুলোতে
সকালবেলার লেক মিচিগান
ধরা দেবার ভয়ে উত্তেজনার কাবাব 
তোমার চোখে ডুবিয়ে খাই।
ঘন নীল সন্ধ্যা রসঘন বদনাম
আমি শ্যাম সাকি রাধা নামে
জর্জর আলিঙ্গন বেয়ে বিবশ যমুনা নহর
সেই কবে ভোর আবেশে বিভোর
রিভিয়েরার জমাট জলে তালে তালে
আছি একটানা বেহুঁস নাদান রঈস...।।