বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

সৌরভ মজুমদার



      সৌরভ মজুমদার

যেমন যায় দিন

কথা বলও রোববারের দুপুর -
হাঁটো... হাঁটতে থাকো ।  জ্যৈষ্ঠ তেজে হাঁটতে হাঁটতে  
                       পেরোও এক একটা সাঁকো ।
পেরোও একটা দুটো গেরস্থগন্ধ
কালোজিরে কাঁচালঙ্কা ফোড়নের
               মসুর, চারাপোনা আদাবাটা রসুনের... 
               কচি পাঁঠার, মুর্গির মাংসের
বাঙালি ঝোলের রাস্তা পেরিয়ে যাও - অনায়াস 
আর বুক ভরে শ্বাস নাও  
বুক ভরে শ্বাস নাও... আর 
হেলাফেলায় পেরিয়ে যাও তাজা রুটির সুবাস ।
জল খাও... ঠাণ্ডা হও... প্রাণ ভরে ঢেকুর তোলও
আর - মনকেমনের নিজেকে বলও
                           ... ‘কোই দিক্কত নাহি     






বিষণ্ণশুদ্ধ

তোমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কাকদ্বীপ, 
কালিন্দী হয়ে অমরাবতীর বাগিচা 
বেলগাছিয়া থেকে আটলান্টিসের জলজ সরাইখানায়
অনায়াস যাওয়া । সেদিকেই অপলক 
কাজে যাও তুমি । হয়ত একটু কম দেখা হবে
                               - এই যা ।

তোমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিজে
তুমিও তো গেঁথেছিলে আলস্যগালিচা 
সম্পর্ক খুঁড়ে আনা ছোট ছোট বিষাদ কণায় ।     
বিষণ্ণতা আসতে দাও । দিনে দিনে বিষণ্ণশুদ্ধ হই  
হয়ত না-সুখ কিছু বেশী পাওয়া হবে  
                                এই টুকুই






৭৮ আর পি এমে

পবিত্র কুয়াশার আঙুল ছুঁয়ে দেখি 
উঁকি দিয়ে যায় ৭৮ আর পি এমে - মেও রোড । আশ্রয় ।   
তেত্রিশ বা পঁয়তাল্লিশ এর আশ্রমবাস । তুমি জানতেও পারনা ।

কারাবাস বা নিষিদ্ধ ধোঁয়াশার রঙ শাদা নয় -  
পরতে পরতে ধূসর হতে থাকে বেঁচেবর্তে থাকা ।
তবু ৭৮ আর পি এমে - মেও রোড ।  তুমি   
না হয় আজ নাই গেলে

অন্ধ গলিগুলো দিয়ে তোমারই সাথে বিকেলবেলা
হেঁটে আসব, ৭৮ আর পি এমে
সমস্ত স্তব্ধতার বাকল জড়িয়ে, ধুলোকাদা মাখা পায়ে
গাছের সন্তানের মতো । চুপচাপ । দেখে নিও - 
তারপর - সময়স্নান সেরে তোমার কোলেই মাথা রাখব । 






জীবন শব্দ

দুটো জীবন ঘর বাঁধছে - অনেক স্বপ্ন অনেক দ্বন্দ্ব
দুটো জীবন জল ভাঙছে - অনেক দ্বন্দ্ব অনেক স্বপ্ন ।  

একটা জীবন প্রসব হল কাজল চোখে । রাত্রিকালীন 
একটা জীবন বেশ ছিল তো গল্পেগাছায়, গড়িয়ে যাওয়া
চাকার শিসে । অন্য জীবন আলতো ভোরে, অলিগলির 
ছোঁয়াচ নিয়ে রাজার হালে, সমকালে - রাজরাস্তা পাশে ।    

পাঁচটা ছটা বন্য জীবন পর্দানশীন - দূরে কোথাও     
দূরে দূরে । আরও দূরে - শব্দ থেমে যাওয়ার দেশে
প্রখর দিনে প্রৈতি রাতে, দুইজীবনের অকালবোধন - 
সপ্ত-জনম নীরব হাসে জীবনশব্দে অনন্তলীন । 






কোথায় আমি ...

আজকাল আর ঘুম আসেনা...
মশার কামড়সহ রাত বেশ কেটে  যায় ।
দিনগুলো এলোমেলো, ছন্নছাড়া ... আমিও ।

ভেতর ঘরের  দরজায় হাত রেখে দাঁড়াই - খুঁজি
এখানে তো আমি নেই । আমি নেই কোথাওই -

শুধু এক স্পষ্টতর চিরন্তন ছবি ভেসে  ওঠে -
মা-ছেলে ঘুমায় শান্তিতে,
পৃথিবীর এক প্রান্তে ।
আমি শুধু নেই কোথাওই  ...

কোথাও আমি নেই ॥