সৌরভ
মজুমদার
যেমন যায় দিন
কথা বলও
রোববারের দুপুর -
হাঁটো...
হাঁটতে থাকো । জ্যৈষ্ঠ তেজে হাঁটতে
হাঁটতে
পেরোও এক একটা সাঁকো ।
পেরোও একটা
দুটো গেরস্থগন্ধ –
কালোজিরে
কাঁচালঙ্কা ফোড়নের
মসুর, চারাপোনা আদাবাটা রসুনের...
কচি পাঁঠার, মুর্গির মাংসের
বাঙালি ঝোলের
রাস্তা পেরিয়ে যাও - অনায়াস
আর বুক ভ’রে শ্বাস নাও
বুক ভ’রে শ্বাস নাও...
আর
হেলাফেলায়
পেরিয়ে যাও তাজা রুটির সুবাস ।
জল খাও...
ঠাণ্ডা হও... প্রাণ ভ’রে ঢেকুর তোলও
আর -
মনকেমনের নিজেকে বলও
... ‘কোই দিক্কত নাহি’ ।
বিষণ্ণশুদ্ধ
তোমার যাওয়ার
দিকে তাকিয়ে – কাকদ্বীপ,
কালিন্দী হ’য়ে অমরাবতীর বাগিচা…
বেলগাছিয়া
থেকে আটলান্টিসের জলজ সরাইখানায়
অনায়াস যাওয়া
। সেদিকেই অপলক…
কাজে যাও
তুমি । হয়ত একটু কম দেখা হবে
- এই যা ।
তোমার যাওয়ার
দিকে তাকিয়ে – নিজে
তুমিও তো
গেঁথেছিলে আলস্যগালিচা…
সম্পর্ক
খুঁড়ে আনা ছোট ছোট বিষাদ কণায় ।
বিষণ্ণতা
আসতে দাও । দিনে দিনে বিষণ্ণশুদ্ধ হই
হয়ত না-সুখ
কিছু বেশী পাওয়া হবে
এই টুকুই…
৭৮ আর পি এমে
পবিত্র
কুয়াশার আঙুল ছুঁয়ে দেখি
উঁকি দিয়ে
যায় ৭৮ আর পি এমে - মেও রোড । আশ্রয় ।
তেত্রিশ বা
পঁয়তাল্লিশ এর আশ্রমবাস । তুমি জানতেও পারনা ।
কারাবাস বা
নিষিদ্ধ ধোঁয়াশার রঙ শাদা নয় -
পরতে পরতে
ধূসর হতে থাকে বেঁচেবর্তে থাকা ।
তবু ৭৮ আর পি
এমে - মেও রোড । তুমি
না হয় আজ নাই
গেলে –
অন্ধ গলিগুলো
দিয়ে তোমারই সাথে বিকেলবেলা
হেঁটে আসব, ৭৮ আর পি এমে –
সমস্ত
স্তব্ধতার বাকল জড়িয়ে, ধুলোকাদা মাখা পায়ে
গাছের
সন্তানের মতো । চুপচাপ । দেখে নিও -
তারপর -
সময়স্নান সেরে তোমার কোলেই মাথা রাখব ।
জীবন শব্দ
দুটো জীবন ঘর
বাঁধছে - অনেক স্বপ্ন অনেক দ্বন্দ্ব
দুটো জীবন জল
ভাঙছে - অনেক দ্বন্দ্ব অনেক স্বপ্ন ।
একটা জীবন
প্রসব হল কাজল চোখে । রাত্রিকালীন
একটা জীবন
বেশ ছিল তো গল্পেগাছায়, গড়িয়ে যাওয়া
চাকার শিসে ।
অন্য জীবন আলতো ভোরে, অলিগলির
ছোঁয়াচ নিয়ে
রাজার হালে, সমকালে - রাজরাস্তা
পাশে ।
পাঁচটা ছ’টা বন্য জীবন
পর্দানশীন - দূরে কোথাও
দূরে দূরে ।
আরও দূরে - শব্দ থেমে যাওয়ার দেশে
প্রখর দিনে
প্রৈতি রাতে, দুইজীবনের অকালবোধন
-
সপ্ত-জনম
নীরব হাসে জীবনশব্দে – অনন্তলীন ।
কোথায় আমি ...
আজকাল আর ঘুম
আসেনা...
মশার কামড়সহ
রাত বেশ কেটে যায় ।
দিনগুলো
এলোমেলো, ছন্নছাড়া ... আমিও ।
ভেতর
ঘরের দরজায় হাত রেখে দাঁড়াই - খুঁজি
এখানে তো আমি
নেই । আমি নেই কোথাওই -
শুধু এক
স্পষ্টতর চিরন্তন ছবি ভেসে ওঠে -
মা-ছেলে
ঘুমায় শান্তিতে,
পৃথিবীর এক
প্রান্তে ।
আমি শুধু নেই
কোথাওই ...
কোথাও আমি
নেই ॥