হরিৎ
বন্দ্যোপাধ্যায়
কাজের
ছন্দ
যার যা খুশি তারই মতো বলুক মুখে
তুমি চলবে নিজের পথে আপন ছন্দে
বলছে যারা এসেছে তারা বলতেই
তুমি তো এসেছ কাজের ভার নিয়েই
বলার কথা হারিয়ে যাবে হাওয়ায়
কাজের ছন্দ বুকের মাঝেই দুলবে ।
*******
*********
ভাঙছে
যারা
এখান থেকে একটা
ওখান থেকে একটা
জিনিস
কুড়িয়ে কুড়িয়ে
কিভাবে তুমি বাসা বেঁধেছ
তা একমাত্র তুমিই জানো
আমার বাসাও তোমার মতো
একই মাটিতে উঠেছে দাঁড়িয়ে
তোমার কথা কিছুটা জানি আমিও
ভাঙছে যারা বাসা
তারা একবারও কী তাকায় মাটিতে ,
নিজের পায়ের দিকে ?
********
*********
মাটিতে
পা
গায়ে একটু ফাগুনের হাওয়া লাগলেই
মন উড়ে যায় গ্রামে
মনে পড়ে এই আমিই না একদিন
মাথায় ঘুড়ি নিয়ে আলে আলে ছুটেছিলাম
বুঝতে পারি শহর এখনও আমাকে
পুরোপুরি গ্রাস করতে পারে নি ।
রাস্তার ধারে একমাত্র কৌটোয়
গোটা চারেক বেকারির বিস্কুট আর
এক কেটলি গরম চা নিয়ে
বসে থাকা লোকটাকে এখনও আমি ঈর্ষা করি
জোর করে কেটলি নিয়ে মাটির ভাঁড়ে
নিজের চা নিজে ঢেলে নিই ।
বুঝতে পারি আমার ভেতরে
একটা মা বেঁচে আছে এখনও
এই মা নিজের দেশ, নিজের জন্মগ্রাম, নিজের পাড়া ।
আমার দু'পা এখনও মাটিতে
উড়ে যাওয়ার গল্প শুনলেও
মনে ওড়ার ইচ্ছা জাগলেও
পুরোপুরি উড়ে যাব না
কোনোদিন ।
**********
************
আমার
আকাশ
আমাদের ধনেখালিতে কোনো বাড়ি ছিল না
শুধুই আকাশ আর আকাশ
পায়ের নীচে জমির আল
পাঁচ পয়সার ঘুড়ির জন্য তখন
মাইলের পর মাইল দৌড়াতাম
আমি সাতাশ বছর আকাশ দেখি নি
এখন আমি বাড়ি থেকে বাড়ি
কোমরে বাঁধা মোটা দড়ি
এমন একটা ছন্দে দৌড়াই
কোমরের দড়িতে কখনও টান পড়ে না
নিজেদের বাঁচাতে মাথার ওপর আকাশ
পায়ের নীচে সবুজ আল হারিয়ে গেছে ।
************
***********
তোমার
মতো তুমি
সেই কোন সকাল থেকে ছুটে চলেছ
দৃষ্টি কিন্তু নিজের দিকে নেই একটুও
তুমি ছোটাচ্ছ তোমাকে
দৃষ্টি তোমার দু'পাশে
অথচ নিজের দিকে যদি একবার তাকাতে
দেখতে পা দু'টো তোমার কী ভীষণ কাঁপছে
সামনের মোড়ের আগেই পা আর নিজের পায়ে দাঁড়াবে না
ছুটছ তুমি
অন্যকে দেখে কেন তার মাত্রা নির্ধারণ
তোমার ছোটা -------
তুমি তোমাকে তোমার মতো করে ছোটাবে।
*************.
************