শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

অদিতি চক্রবর্তী





অদিতি চক্রবর্তী

আটপৌরে

মুহূর্ত কে সঙ্গ দাও
মুহূর্ত কে বলো ভালোবাসি
মিনিট, ঘণ্টা দল বদলে এলে
মুহূর্তরা ইতিহাসে কবেকার সেই কাশীবাসী।
প্রাণপনে ঘ্রাণ চেয়ে
যখনই বলেছি ছুঁয়ে দাও
মাথা নেড়ে চলে গেছো দূরে
ফিরে এসে কিছু পরে আঙুল বাড়াও।
আজ কেন পেছনে ফেরা?
কি হবে খুঁজে চালচুলো?
সময় গিয়েছে সরে নিজের মতো
জলে ফেলা নুড়িটির মুছেছে ধূলো।
দরজার একপাশে দাঁড়িয়েছো দেখি,
পারো যদি ধীর পায়ে এসো
সময়কে সাময়িক সাম্পান দাও
প্রতি রোমকূপে ঘামে ঘাম হয়ে মেশো।





কুমড়ো ফুল

ভোরের দিকে উত্তরের জানলাটা ভেজানোই থাকে।
ঝাঁপিয়ে পড়ি কুমড়ো ফুলের সমারোহে।
দক্ষিণের টুকরো জলায়
ফুলে ফুলে তাতানো খসড়া...
বোঁটার গল্প যতো,
জমা রেখে পিরিতের কালিতে
পিঁপড়ের গোল্লায় রিলিজ করি মৃতদের
ফুল্লকুসুমিত ...
কাঁচা রঙ নিয়ে আমার তুমি হয়ে
শিঙা বাজাতে বাজাতে
সংকেত দিতে থাকে
চলাফেরার শাকান্নের ভাগে।
এসো শীত,শ্বদন্তের ধার বাড়াই
ইচ্ছের কলকাকলিতে...





প্রতীক্ষা
- অদিতি চক্রবর্তী
একবার আসবি নিখিলেশ?
একদিন বলেছিলি জ্বরের ঘোরে,
আবার যদি দেখা হয়---
জলকথা শুনছিস বসে দামোদর তীরে?
আবারও গর্ভ ধরে সেই থেকে জলমগ্ন আমি
বৃক্ষমাতা লাল লাল দুল ফুল নিয়ে
সূর্য চেটে নিলো,হোলির রঙটুকুও শেষ
কীর্তনীয়া গান ধরেছে কোনো এক পাহাড়তলীতে
আজ শেষঘুমে যাবে তার পাহাড়বিনোদ
যে নাকি চোখের লাল গোধূলি
এক ফুৎকারে উড়িয়েছিলো।
শিসপাখির দল নীড় ভালোবেসে আদিডুবে মজেছে
আমাদের আরো বাকী ছিলো নিখিলেশ
তুই জানলিনা অভিশপ্ত হতে হতে
কেমন করে অগ্নিকাণ্ড শুরু হয়
তোর পতঙ্গডানার চরিত্রদোষ শেখাবিনা আরও একবার





শিলালিপি

মুছে গেছে আজকাল সব চেনা রঙ
ক্যামেরা,অ্যাকশন আর রিপ্লে, রিমেক
এই যেন ছুঁয়ে ফেলি ওমনি উধাও
দুই- দুইয়ে এক, বাঁয়ে শূন্য অনেক।
বিছানা ছেড়েছি দেখে শুয়ে আছে রোদ
কালকের যোগ-ভাগ খাতা খুলে লিখি
নদীটা ঘরের থেকে দুই ক্রোশ দূরে
তারই মাঝে আঁতুরেতে কালবোশেখী।
পাথরের খাঁজে খাঁজে ইতিহাস কত
কারা যেন সেখানেও বাড়িয়েছে থাবা
মুছে গেছে আজকাল সব চেনা রঙ
একে একে দুই মানে ভুল হয়তোবা!
স্মৃতিরা পাঁশুটে চিল চলমানতায়
জল ক্ষত চোখ চায় শিলালিপিটায়।





দোলায়িত যুঁই

তোমার কথার মাঝে
চোখে,ঠোঁটে, কানের লতির ভাঁজে
নগ্নতার আরো রঙ মাখতে থাকি এরপর।
বরং জীবিত আছি এতটুকু জেনে
তুমিও জানাতে চাও খবরাখবর।
আমার জলসায় শ্বাপদের ঢক্কানিনাদ
হাতের গ্লাসের জল চলকে ওঠে
ঝড়ের উথাল তুমি কখনো বোঝোনি কালাচাঁদ।
অথচ সেদিন ছিলো শেষ পাতাটির বৃন্তচ্যুত ক্ষণ
সবপাখি চলে গেছে সুপ্রাচীন অরণ্য ছায়ায়।
তোমার কথার মাঝে একা এক শিশু সাপ
খেলা শেষে ঝাউবনে, বিষ উগড়ায়।
বহুবার আগেও ঘটেছে,ঠিক এ'রকম
অসুখ জেনেছে শুধু জানলাটুকুই
কেননা জানলা জানে বিগত হাওয়ারা
খননস্মারকে রাখে দোলায়িত যুঁই।






চু কিৎ কিৎ

ডাঙার খেলা খেলতে গেলে
বাণের জলে দিন ভাসে
মেঘের কালোয় বৃক্ষজীবন
হাততালিতে জোড় হাসে।
এক,দুই,তিন, বসতঘরে
খিল এঁটেছে নন্দিনী
কে ভেসেছে সব্বোনেশে
রোঁয়ায় ভরা বন্দিনী?
তিড়িং বিড়িং ইচ্ছে ফড়িং
একজোড়া পা'য় ঠোঁট চাটে
বলতে গেলে বলাই ভালো
ব্লাউজের হুক হাফশার্টে।
হামলে পড়া সজনে ডালে
গুটিকতক তালবাবুই
তাঁতের শাড়ি, হাওয়াই চটি
ফটফটিয়ে চললো কই?
এক নিমেষে জল শুষে খায়
তেরো নদীর ডুবপাহাড়
প্রশ্ন ছিলো উত্তরে তাই
চাল দিলো তিন ছক্কা কার!
ধোঁয়া ধোঁয়া আবছা বিকেল
ঠিক যেন তুই রংধণু
কলঘরে কোন্ ডিমের খোলায়
সাঁতার শেখায় শুক্রাণু?
উনিশবিশের গলায় পেষে
চটজলদি বিলম্বিত
ডাঙার খেলায় রোজ খেলছি
                           জলের দাগে চু কিৎ কিৎ।