শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

মিজান ভূইয়া




মিজান ভূইয়া

সক্রেটিসের হাসি

পৃথিবী
যখন হীরক চোখে তাকায়
দাউ দাউ আগুনে পুড়ে যায় পাহাড়ি সবুজ
জানথিপির হাত থেকে জল পড়ে
কালো চাঁদ উকি দেয়
সক্রেটিস হাসতেই থাকে,
প্রাণ পায় দুই গোলার্ধের নদী
ফুল ফোটে
সূর্যডোবা বাড়ীগুলো
মায়ার্তকে খোঁজে।






চোখ

শহরের
সব পথ আমি চিনি
অথবা পথগুলো আমাকে চেনে
কারণ সারা শহরেই ছড়িয়ে আছে আমার টুকরো টুকরো
চোখ।
মাংসের দোকানে গিয়ে দেখি
কসাইয়ের চাকুতে কাটা পড়েছে
এক টুকরো, ভিক্ষুকের থালায়
পড়ে আছে এক টুকরো।
খবরে শুনলাম, দুপুরে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে
যে যুবক,
তার কাছেও পাওয়া গেছে আমার চোখের টুকরো অংশ!
আমি জানি
শহরের দালানে দালানে
উড়াল সেতুর গায়ে গায়ে রাতভর
চমকায়
আমার কাটা কাটা চোখের দৃষ্টি।
শুনেছি,
কসমেটিক্সের দোকান থেকে
এক তরুনী লুকিয়ে কিনে নিয়ে গেছে,
আমার চোখের
মসৃণ অংশ।






কালের পতাকা

জ্যোৎস্নায় রুপকথায়
মানুষের জীবনযাপন অসুখবিসুখ
কালের পতাকা হয়ে থাকে, ছোটমাছ হয়ে থাকে
চারিদিকে
শিশুচোখ হামাগুড়ি দেয়!
অবশিষ্ট ক্ষুধা
হাতের অংক রাখে পৃথক পৃথক
আয়ু।
তখন নীল ও লাল রঙ একসাথে
খেলা করে,
হাওয়ায় হাওয়ায় মুছে যায়
হাহাকার
কবিতা নিয়ে খোলা থাকে ঘরের
ছোট জানালা, ঘড়ির কাটায় ঘুরে
চাঁদ
সিঁড়ি থাকে, কিন্তু সিঁড়িতে কোন
শব্দ থাকে না।





লাজুক নোটিশ

খুব একা বসে
অনুবাদ করি জমানো শিশির।
এদিকে
চোখের ভিতরে
প্রজাপতির স্মৃতিপূর্ণ ছায়া!
অনুভব করি,
সামুদ্রিক শূন্যতায়
ভেঙ্গে ভেঙ্গে পবিত্র হয় কিছু
প্রহর। বলা যায়,
অসুখে অসুখে আমি খুব দূরে
চলে গেছি, দুই দেশের
পতাকা হয়ে গেছি।
কতো কষ্টে ভুলে গেছি একটি
গান
একজন মানুষ।
লাজুক
নোটিশ হয়, চিঠির কাগজে
পাখিদের পড়াশুনা দেখি।
নদী ও ভোর দেখি
মাছের
চলাচল দেখি।






ধ্যান করি

ছায়ার উঠোনে
হাসে গ্রীষ্মের রোদ
শেষবেলা ছুঁয়ে যায় সন্ধ্যার কাঠি
চোখের আলোতে জ্বলে মনের পূজো
সব ব্যথা জমা থাকে আকাশের
লালে
আমি মেঘের গান গাই
পাখির ঘরে বসে ফসলের ছবি আঁকি
আমার পায়ের কাছে ফুটে থাকে হয়ত সময়
না হয় শাপলা
চুপচাপ পাতা ঝরে
চোখ বুজে ধ্যান করি
যাবতীয় যোগ-বিয়োগ ধ্যানের
মাঝেই হয়
হাওয়া বাতাস প্রশ্ন করে করুক
তখন ঘুমের খাতা খুলে
                                        বিছানায় শুয়ে পড়ি!