শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

অরুণিমা মন্ডল দাস




অরুণিমা মন্ডল দাস

বৈশাখী কবিতা
“এক”

হাঁড়িভর্তি রসগোল্লা,পান্তুয়া ,বিরিয়ানি চিকেনের বহুল আনন্দিত চলাফেরা--
জামদানি শাড়ি,পাজামা পাঞ্জাবির ঘর্ষনে নতুন সন্তান
পয়লা বৈশাখের আঁতুড়ঘর-হালখাতা --¡
#
মোটা সিঁথির সিঁদুরে ভেজাল পারদ --উচ্ছের দুদিক কাঁচা মধ্যেখান পাকা--
রাস্তায় ভরা ভক্তের হরে কৃষ্ণ নাম-  পাশে বসা ছেঁড়া জামার ভিখারীর  উড়ে যাওয়া পুরোনো পাঁচশ টাকা--
বৈশাখের গাঢ় রোদের গোলটেবিল বৈঠক
নীতির সাম্প্রদায়িক প্রেশারকুকার ফেটে আধা সিদ্ধ জনগন-ডাল
পাঁপড় ভাজার উল্টোদিকে ভিনিগার------
পাউরুটির পিছনে কোলতার?
              





“দুই”

ঘামছে--শুকনো আমের ছালে
কেটে খাওয়া তরমুজের জলে কবিতার উচ্ছৃাস--?
চন্দনের টিপ হাতে কালোজামের থালা  নীল আবিরে ভর্তি মাথা
ঠোঁটে লিপস্টকের আলিঙ্গন?

#
পাখিশাড়ির খুলে যাওয়া বাথরুম ---হোটেলের গরম চাটনি
চেটেপুটে খাওয়া দাম্পত্য বেডসীট --- ফার্স্ট ডেটের ফার্ষ্ট ইমরান হাসমি কিস--?
#
পাখা ঝাপটানো বাদুড়ের ঝলসানো প্রেম
ট্যাক্সিতে চেপে বসা আদর---পার্কের উল্টোদিক থেকে পড়ে যাওয়া ক্লান্ত মচকানো ওড়না-

#
 



“তিন”

দুদিক থেকে ছুটে আসা পেনসিল হিলের থাপ্পড় ,গড়িয়ে যাওয়া আইসক্রীম,ফুচকার আলু জড়ানো তাজমহল--
ফুটপাতে ছুটে যাওয়া ভিখারী--বালক
পাঁচটাকার  মুড়ির স্বাদে শুকনো চানাচুর
হাতে থাকা বাসি মিষ্টি--মাছি ডুবছে বাংলায় --মুখে পুরে ট্রেনের ভিখারী চুষছে--পচা গন্ধে ভাপসা নববর্ষ ”?-
-- বাংলার নববর্ষ ধনীদের ইমিডিয়ার রান্নাঘরে সেলিব্রিটি গন্ধে খাদ্যচুষন--?


পয়লা বৈশাখ বাঙালীদের জীবনে এমন একটি দিন যা বলে বোঝানো যায় না ।

   



“চার”

গামছা নিঙড়ানো জলে উঠোন স্নান
বয়ে যাওয়া এক ইঞ্চি যৌবন
পাশ ফিরে বসা ব্রেক আপের নির্লজ্জ মিসডকল
হাত চেপে বুকে টেনে নেওয়া দখিনা বাতাস

কাছাকাছি থাকা এক বালতি সুখ হারিয়ে যাচ্ছে
চিমটি কাটা তেজ রোদ্দুর কামনায় ছটফট প্রথম স্টেজে ওঠা  বেনামা তরুন কবি
কবিতায় গলার স্বর ক্রমাগত প্রেমিক যুবকের কঁাপা ঠোঁট
এক পৃথিবী মায়ের হাত  মাথায় হাত বুলোচ্ছে
হানি সিংয়ের  ডেসপারেট ফিলিংসগুলো ঝড়ো হাওয়া
চারিদিকে ইংলিশ ফিল্মের বাস্তবতা ঘিরে ফেলছিল,
তৎক্ষনাৎ,
এক আলিঙ্গন বাড়িতে পাতা দই,নলেন গুড়ের সন্দেশ,বাবার হাতের মার বিকেলের বাউলের গন্ধ
স্নায়ুর উত্তেজনা বাড়িয়ে সোজা সিঁড়দঁাড়ার বক --
ঢিলেঢালা  প্রেম সাপ্লায়ার এস টিডিবুথের গায়ে--¡
#
    




“পাঁচ”

হালখাতা
যে বইটি বৈশাখের প্রথমে আমাকে দিলে---মিষ্টির দোকান
বাড়িতে এসে মিষ্টিপ্যাকেট খুলে দেখলাম
প্যাকেটে কোন নতুন দিনের গন্ধ পেলাম না
কাগজটাকে উল্টে পাল্টে দেখে রাখলাম
কয়েকমিনিট পর খুশির ন্যাপথ্যালিন ছড়িয়ে কাগজটিকে আবার দেখলাম
নতুন যীশুখ্রীস্টের হজরত মহম্মদ চৈতন্যদেবের মধুর এক লরি আশ্চর্য  সন্ধ্যা রজনীগন্ধা গন্ধ পেলাম
হাত দিয়ে ধরার অনেক চেষ্টা করলাম
বৈশাখের রোদ আমাকে ঠেলে মাটিতে ফেলে দিলো
রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতেই স্মার্ট জামা হাসি ভঙ্গিমা  পীরিত গুলো গ্রামে থাকা ঝোপঝাড় মনে করিয়ে দিল
দঁড়ি নোড়া, দুর্বল হবে কিন্তু ছিঁড়ে পড়বে না--?