সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য্য
টুকরো
কথা ১
গাঢ় দিঘীর মত
সজল দুচোখ
নাভিমূল থেকে উঠে আসা
অর্থহীন
দীর্ঘশ্বাসে
যখন মিশে যেতে চায়
ঠিক তখনই ধুয়ে যায় আমার গার্হস্থ্য সন্ন্যাস
টুকরো
কথা ২
স্বাহাতে নিমজ্জন
অগ্নি ও স্বাহা
অগ্নিতে মিশেছে সে
ওঁম্
স্বাহা
হে মিলন সাগর
মকর বাহিনী জল ধর
নিজরূপে
যে দিকে যাও
শুধু ছড়ানো কংকাল
সমিধ খোঁজার পালা শুরু
বল্কল ভাসিয়ে এসেছে মধুপরী
স্পর্শ কাতরতায়
টুকরো
কথা ৩
ধানের বুক ছুঁয়ে
উপুড় হয়ে আছে হাওয়া
মায়ের গন্ধ ভাসে
ধানের বুকে
নবজাতকের মত থিরথির কাঁপন
তোমার শরীরে
চৈত্র
দুপুর শুরু হওয়ার আগে
নিবিড় কর্ষন চায়
সসাগরা
আমি ভ্রাম্যমান মানুষের
রক্ত বহনকারি
কখনও হাস্নুহানা কখনও বকুল খুঁজি
জ্যোৎস্না ও জটিল অন্ধকারে
জীবনভর
অনিমেষ
এক পৃথিবী মেঘ
এক পৃথিবী আলো
এক পৃথিবী স্মৃতি
স্মৃতি নির্নিমেষ
মেঘ,আলো ও স্মৃতি
অশ্বগন্ধা পৃথিবী
তুমি আসবে ঠিক
চন্দ্রাস্তে।
অপেক্ষা চিরদিনের
অপেক্ষা সমাদরে
অপেক্ষা আজীবন
অপেক্ষা তোমারও
অনিমেষ।
থাকেই
.........
সম্পর্ক গোপন
সম্পর্ক উচাটন
সম্পর্ক উতল
সম্পর্ক শীতল
সম্পর্ক অধীন
সম্পর্ক উদাসীন
সম্পর্করা দুধেভাতে
সম্পর্করা একসাথে
সম্পর্করা রিনিঝিনি
সম্পর্করা বেজে যায়
সম্পর্ক রিমঝিম
সম্পর্ক ধারাপাত
সম্পর্ক সোজাসুজি
সম্পর্ক কল্পলোক
সম্পর্ক দুর্নিবার
সম্পর্ক আচানক
সম্পর্ক স্বাগতম
সম্পর্ক ব্যতিক্রম
সম্পর্করা আসে যায়
সম্পর্করা থেকে যায়
কুমুদিনী
আলগোছে রাখ হাত,
ঠোঁটের ভেতরে ঠোঁট
ডিঙিয়ে যৌবন পোড়ে
কুমুদিনী তোর
আলপথে বাঁশি বাজে
ছলাৎছল জল
নৌকো নেমেছে তায়
অলৌকিক টান
ঋতু,স্তব,আলো,গ্রহ,মালো ও ঈশ্বর
ধ্বনিমুখ মোহাচ্ছন্ন
খন্ড দহন
রেনু রেনু ইচ্ছে জ্বলে তুই জাতিস্মর
কুমু তুই কুহকিনী
বিরল জাতিকা
তোর প্রেমে তুই মজে
একলা রাধিকা
তুই বাঁশি তুই কানু
রূপ নেহারলু
পদ্ম আঁখিতে সাজ
তুঁহু মম শ্যাম
সমান
কুমুদিনী
২
কত আলোকবর্ষ পার হয়ে
নিজের কাছে এলি তুই কুমু
কুমুদিনী
উপগত হলি
নীচের ঠোঁট
কামড়ে কামড়ে
ফালাফালা
কতই বা বয়স তোমার
নিজের সঙ্গে বাঁচো
কখনও রাধা, রত্নাবলীর
অঙ্গরাগ মেখে
নিজ দেহে কৃষ্ণরূপ ধরো
রাইকিশোরী ছটফটায়
কাকজ্যোৎস্নায়
থির কৃষ্ণসায়র
উথাল
গোপবালিকা
নয়ন ন তিরপিত ভেল
বাঁশি ছেড়ে রাজদন্ড
সোনার মুকুটে,
কি করে এতটা পারিস কুমু
কুমুদিনী
ও আমরার
যোগাযোগের কুমুর লাখান
কুমুদিনী
৩
দোল পূর্ণিমা নিশি নির্মল আকাশ
ধীরে ধীরে বহিতেছে মলয় বাতাস
চন্দ্রাস্তে ভাত খাই সূর্যে অস্ত,
তুই এলে
তুলসীমঞ্চে রাখা উল্লম্ব প্রদীপ
আঁকা হলে
বিপদ নাশিনী তোর রূপ,
তুই নারায়ণী
কুমুদিনী
সৃজন পালন লয়
যাহার কটাক্ষে হয়
একই দেহে তুই নারায়ণ
নিরাভরণ
সাঁকোহীন সাগর প্রলয়
হরণ করেছে সময়,
লেলিহান সুধা বরিষন
ক্ষয়,লয়,
মৃত বালুচর
জনপদ,মাটি,কালীয় দমন
অখণ্ড চাঁদের আলো
শবরীর যাপনকাল
সন্ধ্যারাগ
মধুযামিনী,সব তোর
কুমুদিনী
মধু পারাবার
একই রঙে সাতরঙ
ছলছল
শ্যাম বিনা শ্যামলিমা
নিজ অঙ্গে নিজেই বিলীন