শাহানারা ঝরনা
সবার
ভালো হোক
কী দীনতা ! কেমনে বলি কী-ই বা চায় এ-মন
খঞ্জনি সুর বাজিয়ে কে ওই জানায় আমন্ত্রণ?
হেমাঙ্গিনীর হরিণ চোখে স্বপ্ন আঁকার সখ
জাগলে হঠাৎ পান করে নিই অমৃত হেমলক
প্রযুক্তির মেলবন্ধন বিশ্বায়নের ঢেউ
ভীষণরকম প্রলয় ঘটায় আমার আমিত্বেও
হালফ্যাশনের আগ্রাসনে পুঁজিবাদীও হই
বৃহন্নলা চেতন নিয়েই অসাড় হয়ে রই ..|
ভিনদেশিরা সেতার বাজায় আমরা শুনি সুর
ঘুমপাড়ানি মাসি পিসির আবাস কতোদূর?
সংস্কৃতির তীর্থপথে সম্প্রীতির ভিড়
অন্ধনেশায় খুন তবু হয় যুবক যুধিষ্ঠীর !
বহুভাষার ভার্সনে আজ বুদ্ধি টলোমল
জ্ঞানবিজ্ঞান আকাশ ছোঁয়া ইচ্ছেরা উচ্ছল
বোধবুদ্ধি নিয়ে যতোই মেধার করি চাষ
মন মননে ভেজাল মেশায় মঙ্গলীয় বাস
প্রজ্ঞা মেধার দখলে নেই ভেষজ অবস্থান
শুদ্ধিচারের নিয়ম নীতি করবে কে সন্ধান?
মান-বন্টন কর্মসূচির শেরপারাও আজ চুপ
নিঃশব্দে তাইতো পোড়ে মানবতার ধূপ
সাক্ষী আছে কাল মহাকাল দুঃসময়ের দূত
আমার ভাষার মাঝেই আমি হই আজো অচ্ছুত !
স্থপতি ভাঙে যখন লোকাচারের ভিত
আস্থা জুড়ে শুধুই বাজে অস্থায়ী সঙ্গীত
কৌশলে হয় বিবেক পাচার নেই কোন তার খুঁত
বিজ্ঞ হয়েও ব্যবচ্ছেদের ভিত করি মজবুত
মন প্রচ্ছদ উল্কি আঁকা শূন্যে ভাসে চোখ
দিব্যজ্ঞানে চাই . তবুও সবার ভালো হোক !!
রাঙা
বিকেলের গল্প
তোমার জন্য একটা বিকেল একলা বসেই কাটিয়ে দিলাম .
দূরের আকাশ ছুঁয়ে দেখা আর হলোনা !
বুকের ভেতর দগ্ধক্ষরণ সময় কিংবা অসময়ে ;
জেগেই বুঝি স্বপ্ন দেখি নিঝুম রাতে ঘুম আসেনা !
ছোট্ট নরম কথার কণা জমে জমে হয়যে বরফ...
বলব কাকে,কেমন করে,কখন,কোথায় তাও জানিনা!
দিন চলে যায ..আসন পাতে নৈঃশব্দের ঝিনুকগুলো
প্রিয় কোন শব্দধ্বনি শোনার আশায় প্রহর গুনি ......
অপেক্ষার এই অসুখ আমার ভেজা দেহে কাব্য সাজায় |
স্বপ্নগুলো নিয়মমতো কখনো হাসায় কখনো কাঁদায়
জোছ্না ঝরায় ..আবার পোড়ায় দহন চিতায় |
আমার মাঠের শস্যদানা অসময়ে খরায় পোড়ে,
ইচ্ছে পাখি শেকল ছিঁড়ে যায় পালিয়ে অনেক দূরে ...
করব কিযে তাও বুঝিনা ! ঝরা পাতার কান্না শুনে
কেন আমি হই উদাসী কেউ বোঝেনা |
বুকের ভেতর নষ্ট ব্যাথার ঘুণপোকারা বেড়ায় ঘুরে
দিন কাল মাস সব ভুলে যাই ! মৌরি বনের কুটুম পাখি
ডাক দিয়ে যায় চুপিসারে পড়শি আনে রাঙা বিকেল |
সেই বিকেলের সুখ নদীতে বেহুলা মন ভাসিয়ে দিয়ে
যাই হারিয়ে কোথায় আহা ..সেই কথাটি কেউ জানেনা।
জলছবি
দিনশেষে হেমাঙ্গী নর্তকীদল..
মোহভাঁজ ভেঙে ভেঙে
নিজ্যেকে মেলে দেয় নিয়তির জোছ্নায় |
নদীতে জোয়ার এলেই --
স্বপ্নের চিঠি নিয়ে উড়ে যায় হীরামন পাখি |
ধূপের গন্ধে পোড়ে হরিণী চোথ !
মাঝে মাঝে মৃন্ময়ী ভাবনারা নিরাভরণ হয় ...
আঙিনার সবুজে বুনি অনুভূতির বীজ |
নজরবন্দী বিবেকের তৎপরতায় .
অবাক বিষ্ময়ে দেখি সৌহার্দের সুনিপুন শিল্পকর্ম !
কেটে যায় অহমী আবেশ | অধোনত প্রেম নিয়ে
দেবিকা দর্শনে মাতে কালের দূত |
আবেগের নদীতে ভাসে পৌরাণিক কষ্টগুলো ..|
নদীও নারীর মতো সহানুভূতির বেনারসি পরে |
যৌবনা অতীত ভেবে ভাটফুলে সাজ করে আপন মহিমায় !
মাঝিহীন খেয়াঘাট ছুঁয়ে কখনো বসে থাকে নিশ্চুপ !
আমিও ইচ্ছের বেপরোয়া স্রোতে ভিজি ;
শতরূপা সময়ের গেরস্থালি নিয়েই .
কিশোরি মধ্যাহ্নকে ধারণ করি বুকের ভেতর |
ব্যস্ততায়- ব্যঞ্জনায় ঘুঙুর বিকেল হাসে .
অতিথি স্বপ্নকে ছুঁয়েই আমি হয়ে যাই পাহাড়ি ফুল |
অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ ...কোন কিছুই আমার থাকেনা |
বর্তমানের সুর-শ্রুতি নিয়ে পার হই নাগরিক নদী
...যে নদীতে লোকাচারের ঢেউ নেই ..
আছে শুধু আবহমান সুন্দরের ধারা .
যা আমার আমিত্বকে করে বহমান !
প্রযুক্তি এগিয়ে যায় |
বিশ্বায়নের তাপদহে প্রকৃতি পোড়ে।
জীবনের ক্যানভাসে আমি তবু আঁকি ...
শাশ্বত শুচিতার জলছবি !
দিন যায় দিন
আসে
নীলিমার চত্বরে নীল মেঘ খেলা করে
শূন্যতা ছুঁয়ে পাখি উড়ে যায় দূরে
পরাহত পলাতকা ..নিদারুণ দুখে একা
বেদনাতে গান গায় অভিমানি সুরে.!
মমতায় মিতালিতে ..কিছু কিগো চাও দিতে?
বেশ তবে দিয়ো যত সুখ.গাঁথা আছে
মানুষ তো চলে যায়..অ.দেখার সীমানায়
স্মৃতিগুলো শুধু হায় অমরতা যাচে !
আঁকাবাঁকা প্রান্তরে..উচ্ছাসে কলস্বরে
মৌনতা নিয়ে বুঝি কাঁদে ঝরাপাতা
দিন যায় .দিন আসে..মন ছোটে পরবাসে
অলেখাই থেকে যায় কত খেরোখাতা ..!!
আমি আমার
আমি আমার আমিত্বকে নিয়ে কোথায় যাবো?
তোমার বোধের ঘরে একটু বসতে দাও .!
ইদানিং ভালোবাসাও আবর্তিত হচ্ছে
ডিজিটালের নিষ্ঠুর রিমিক্সে ..!
পয়মন্ত ইচ্ছের শুচিময় ছোঁয়া নিয়ে
আমি তো ফুল হয়ে ফুটতে চাই তোমার বাগানে..!!
তুমি যদি তা না চাও ..বেশতো..
আমি না হয় আবার নিলামে দাঁড়াব....
বলবে
নাতো ...মেয়ে, তুই ভুল করেছিস ..!!!!