শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

ঈশানী ব্যানার্জী





ঈশানী ব্যানার্জী

শেষ বিকেলের বৃষ্টি

আমি ফাগুন হাওয়ায় ভেসে
মেঘ হতে চাই শেষে,
আমি ঝড় হতে চাই
কালবোশেখির বেশে।
কালবোশেখির মাতাল
হাওয়ায় ভেসে
তোমায় উড়িয়ে নিয়ে যাব
মেঘের দেশে, নিরুদ্দেশে।
বৃষ্টি হয়ে ঝরব অঝোর ধারায়
তোমার বুকে,তোমার মুখে,
শেষ বিকেলের বৃষ্টি আমি
ঝরব তোমার চোখে।
ভালবাসার পরশ দিলাম এসে
শান্ত তুমি, রিক্ত তুমি, নিঃস্ব তুমি
আমায় নিয়ে ভাবো? আমি
শেষ বিকেলের বৃষ্টি হব
তোমায় ভালবেসে ।।






ছেঁড়া তার

আমি ছিনু তোর
পরাণ বীণার তার,
সেথায় দিলি না
একটিও টংকার।
ছিঁড়ে দিলি তার
সুর বাঁধিবার ছিলা,
সে ছিলা বাঁধিতে
বয়ে গেল মোর বেলা।







প্রাপ্তি

ভালবাসার আশ্রয়ে হারিয়েছি
আজ তোমার বুকে,তোমার
মনে, গানে, সুরে, ছন্দে, সূর্য ওঠা
ভোরে, তোমার বালুকা বেলায়,
তোমার উদ্দামতায়, তোমার
আলিঙ্গনে, রোমশ বুকে, ওষ্ঠ স্পর্শে,
চুম্বনে, তোমার বাহুর, শরীরের নিষ্পেশনে
আমি হারিয়েছি  আমার সবকিছু
তোমার মাঝে, তোমার বিস্তৃত বক্ষে
অসীম আকাশে, পাখির ডাকে
ও আমার নীল আকাশ
নীল চোখেরই তারা।।







ইচ্ছে

ইচ্ছে করেগাঁথতে মালা
তোকে ঘেরা স্বপ্ন নিয়ে,
ইচ্ছে করে, আকাশ ছুঁতে
চাঁদের সাথে হাত মিলিয়ে।
ইচ্ছে করে, তারা হয়ে
তাকিয়ে থাকি মিটমিটিয়ে,
ইচ্ছে করে, গড়তে বাড়ি
আকাশ মাঝে মেঘের গায়ে।
ইচ্ছে করে, লুকিয়ে থাকি
আগুন হয়ে রবির বুকে,
ইচ্ছে করে, ভেসে বেড়াই
জ্যেৎস্না আলো গায়ে মেখে।
ইচ্ছে করে, গান গেয়ে যাই
তোরই সুরে সুর মিলিয়ে,
ইচ্ছে করে, স্বপ্ন যত
তোরই চোখে দিই বিলিয়ে।
ইচ্ছে করে, তোরই বুকে
ছটফটিয়ে মরতে পাখি
ইচ্ছে করে,শশ্মাণ তলে
তোরই হাতের আগুন মাখি
ইচ্ছে আমার এটুকুই
যে রইল বাকি,
ইচ্ছে আমার, পূরণ করে
দিবি তা কি?
থাকব আমি তোরই
আশায় জীবন ভরে,
ইচ্ছেগুলো তোরই মনে
তোরই সাথে নিলাম জুড়ে
জানি আমি, সবকিছু তুই
দিবি আমায় পূরণ করে।।






অপদার্থতা

একদিন তোকে উপহার দিয়ে যাব
আমার ভালবাসার নিদর্শন; সাজিয়ে
গুছিয়ে তোর হাতেই তুলে দেব,আমার
ভালবাসার সবটুকু।সত্যি, অপদার্থ আর মানুষ
হল না! না রে, মানুষ হতে পারলাম কই?
মানুষ হতে, পদার্থ হতে দিলি কই? এ উপহার
কিসের জানিস? তোকে নিয়ে গড়া আমার
প্রেমের স্বর্গ, গড়া কল্পনা, স্বপ্নে গাঁথা
কবিতার মালাগুলো বড় প্রিয় ছিল জানিস;
সেই কবিতার গাঁথা মালাগুলো থেকে একটা একটা
করে স্বপ্ন ছিঁড়ে, আগুনে পুড়িয়ে, তার সাথে তোকে
নিয়ে গড়া সব কল্পনাগুলো মিশিয়ে এই উপহার
অপদার্থ তো অপদার্থই রয়ে গেল, মানুষ হল কই?
তাই তোকে দিয়ে গেলাম আমার ভালবাসার
শেষ নিদর্শন; আমার হৃদয়ের শেষ কামনাই
তোর হাতে তুলে দিলাম আমার ভালোবাসাটাই,
তাই তোকে দিলাম আমার অপদার্থতাটাই!
মনে করলে, অন্তত একটুও ভালবাসলে
ভাসিয়ে দিস ব্রহ্মপুত্রে অথবা গঙ্গোত্রিতে,
আমার অপদার্থতা, আমার ভালবাসা।
যেন পরজন্মে তোর জীবনে পদার্থ হয়ে
আবার ফিরে আসতে পারি! তখন তোর কাছে
গ্রহণ যোগ্য হব মনে হয়;এখন না হয়
ভেসে যাক তোর আমার ভালোবাসার
নিদর্শন একত্রে অনন্তের পথে আগামীতে।।