শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

অলভ্য ঘোষ



অলভ্য ঘোষ

স্বচ্ছ ভারত

সম্মতি নিয়ে করলে তা ধর্ষণ কোথায়।
ইভিএম বোতাম টিপে আমরা যে সুড়সুড়ি দিলাম
তাকি কম ইঙ্গিত বাহী ছিল!

সম্মতি নিয়ে করলে তা ধর্ষণ কোথায়।
কথা তো ছিল ক্ষমতায় এলে রামের নামে করব!
বাবরি মসজিদের নামে করব।
চিতা থেকে তুলে করব।
কবর থেকে তুলে করব।
এখন রোমান্স কে বলছেন ধর্ষণ।
রোমিও তো অনেক দেখলেন
অ্যান্টি রোমিও তে কেমন সুখ দেখুন।
ব্যথা লাগলে পতঞ্জলির তৈল আপনায়ে;
দেশকো আর্থিক আজাদি দিলায়ে ।
আজাদি না বরবাদি!
নয়া বোতাল মে পুরানা দারু।
উপরে চায়না র টুনি বয়কট
তলায় তলায় এটিএম মেশিন কেনার লটঘট।
কালো ধন কটা সাদা হলো।
ট্যাক্স ফ্রি! দেশীয় সংস্কৃতির যোগ
পাশ্চাত্য বিয়োগ ।
কেবল অমিতাভের দিয়ে শিখুন
সকালে মাঠে ঘাটে না যাওয়া।
ডিজিটাল হাগু যদি করা যেত
দেশীয় পদ্ধতিতে কি আরাম টাই না হতো।
বন্ধ সরাসরি লেনদেন!
সব ডিজিটাল করা হবে।
ধর্ষণ ও ?
রোজ দাঙ্গা দেখছি ডিজিটালে।
শহরে চুমু ও খাবার ডিজিটাল
ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ফ্রি।
গ্রামে দু ফোঁটা দুধের অভাবে মরবে শিশু।
গরীব অভাবী ছেলেটি খিচুরি স্কুলে গিয়ে
খাবার পাবে না আঁধার কার্ড ছাড়া।
এই তো অনুপ্রবেশ আটকে গিয়েছে।
মাঝারি ব্যবসায়ী খুচরা ব্যবসার বড়ো বাজার ফুঁড়ে
কেবল ঢুকছে বহুজাতিক কোম্পানি।
স্বচ্ছ ভারত।
গান্ধীর চশমায় শিল্পপতিদের কাঁচ লাগানো আছে।
কাঁচটা সময়ে সময়ে পাল্টে দেয় পুঁজি আর সাম্রাজ্যবাদের দালালরা।
সেই কাঁচ থেকে স্বচ্ছ ভারত দেখি আমরা।

সম্মতি নিয়ে করলে তা ধর্ষণ কোথায়।
ইভিএম বোতাম টিপে আমরা যে সুড়সুড়ি দিলাম
তাকি কম ইঙ্গিত বাহী ছিল!

© অলভ্য ঘোষ





ইচ্ছে করে

ইচ্ছে করে ড্রপারের মত তোমার চোখের জল চুমু দিয়ে শুষেনিই।
ইচ্ছে করে তোমার বুকে জমা কান্নার মেঘ আমি ভ্যাকিউম ক্লিনারের মতো ফুঁ দিয়ে সাফা করে দিই।
ইচ্ছে করে পৃথিবীর সব রং ছিনিয়ে এনে নিমেষে তোমার রংচটা হৃদয় টা আবার স্প্রে করে রাঙ্গিয়ে দিই।
© অলভ্য ঘোষ





সাজ

তোমার বাঁদিকে চিবুকের নিচে আঁচিল। ডান দিকের গালে টোল।
ধনুকের মতো জোড়া ভ্রু।দিগন্তের মতো কপাল।
টিপটা তুমি ছোট পরো বড়ো। সূর্যের মত একটা
লাল টক টকে টিপ দিয়ো ললাটে। মেঘ বরণ
কুঁচকানো চুলে কুসুম সুবাস কামনার জাল বিছিয়ে
রাখে মাকড়সার মত। আমি শিকার হয়ে পড়ি।
কানের লতিতে রাখা তোমার ভোমরার প্রাণ।
চুমু দিলে বুঝি কেমন পাগল হয়ে যাও তুমি।
নাক ফুসে ফুসে ওঠে যেন ক্রোধে কেশর ফোলায় সিংহ।
চোখ দুটো তীব্র আকর্ষণে টানে আমায় মাধ্যাকর্ষণের মত।
কুঁড়ি থেকে গোলাপ ফোটার মত ফুটে ওঠে স্তন।
দুই টুকরো চেরির মতো স্তন বৃন্ত কেঁপে কেঁপে ওঠে।
দুটো কীট যেন কামড়িয়ে বসে আছে আরামে।
কিশমিশের মত নাভি মূল; নাভির নিচে ছোট্ট এক চিলতে তিল।
উরুর উপর যেন উল্কি আঁকা জড়ুলে।
আর মানস সরোবর রাক্ষসতাল ও আছে তানপুরার মত ঠিক
কৈলাস পর্বতের পাদদেশে।

আমি যত সাঁতার কাটি পুলি পিঠের মতো হ্রদে জল স্ফীতি ঘটে।
সরোবর হয়ে যায় সমুদ্র আমি ডুব গেলে মনি মুক্তা কুড়াই।
পাহাড় সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ করি যখন একসাথে বুঝতে পরি
লজ্জাবতী তুমি পাতা মেলছ।
অক্টোপাসের মতো আঁকড়িয়ে ধরে তোমার হাত পা আমাকে।
মনে হয় আমার অবশিষ্ট তুমি কিছুই রাখবেন আফ্রিকার
রক্ত চোষা গাছের মত।

তবুও তুমি এ পৃথিবীর সেরা উদ্যান হে মানবী। তবুও আমার সাঙ্গ হয় না খেলা।
তোমার ডান স্তনের ওপর উত্তেজনায় ফুটে ওঠা নীলনদের মত শিরাটা আমি।
প্লিজ ওটাকে ও ভাবেই এঁকে বেঁকে বয়ে যেতে দিয়ো তোমার বুকে।

আমার মনে হয় বিধাতা তোমাকে সাজিয়েছে আমার জন্য।
আমার মনে হয় নিজে হাতে নিখুঁত সাজাই কাব্যের মতো তোমাকে।

আমার মনে হয়না পৃথিবীতে কেউ সাজে নিজের জন্য!

© অলভ্য ঘোষ






দেবতার প্রসাদ

আমি অন্যরকম
নিজের পৃথিবীতে
নিজের একার সংসার।
আচমকা বুঝতে পারি।
আমি একা নই।
কেউ একা নেই
অসংখ্য ভাবনার ছায়ার সাথে
আমাদের নিত্য সহবাস।
একটুও এড়ানো কঠিন।

আমাকে তারা শান্ত করে দেয়।
বুক দিয়ে আগলে রেখে।
না হলে কবে নিরুদ্দেশ
হয়ে যেতাম।
আমায় তারা খুব ভালো বাসে।
ভগবানের মতো
আমি যোগ্য নই
রক্ত মাংসের মানুষ
দৈহিক যান্ত্রিক।
সেখান থেকেই শরীরকে
স্বর্গীয় করে দেয় তারা
অপরূপ সৌন্দর্য সুষমায়।

প্রেম দেবতার প্রসাদ হয়ে পড়ে।

© অলভ্য ঘোষ





আঁচড়

কেউ মনে রাখে না কাউকে।
এই যে ঘটা করে বলা
তোমাকে ভুলবো না কখনো;
কোনদিনও!
আমি জানি চৌকাঠ পেরুলেই ভুলে যাবে।
আমার সাথে সাথে ঋতু বিদায় নেবে না।
নাম না জানা ইচ্ছের প্রজাপতি উড়বে
সেদিনো।
তাই আঁচড় রেখে গেলাম তোমার বুকে।
দাগ যতদিন থাকবে কিছুতেই
ভুলতে পারবে না আমাকে।
কি কেমন মজা!
ফোটা ফোটা কষ্ট রেখে যাবো আমি
খিদেয় তৃষ্ণায় অভাবে অভিযোগে।
আবেশে অভিযোজনে। চেতনে অচেতনে।
সেই সব চিহ্নের জ্যামিতিক আকার
তুমি ছাড়া কেউ পাবে না দেখতে।
আঁচড় রেখে গেলাম তোমার বুকে।
ভুলতে পারবে না আমাকে ।
"উৎসবে ব্যসনে চৈব দুর্ভিক্ষে রাষ্ট্রবিপ্লবে।।
রাজদ্বারে শ্মশানে চ য তিষ্ঠতি স বান্ধবঃ।।"

এ গ্রহে এসেছি কেবল তোমাকে
আঁচড়াব বলে।

© অলভ্য ঘোষ