কবিতাউৎসব
সাক্ষাৎকার ১৪২৪
কবিতাউৎসব: কবিতাউৎসবের পক্ষ থেকে আপনাকে
স্বাগত। কবিতা আর বাঙালি: বাঙালি আর উৎসব’ এ যেন এতটাই স্বতঃসিদ্ধ যে, এই নিয়ে কোন সংশয়ের অবকাশই থাকে
না। আমরা কবিতা লিখতে ভালোবাসি। কবিতা পড়তে ভালোবাসি। কবিতায় থাকতে ভালোবাসি। আর
কবিতা নিয়ে উৎসব তো আমাদের বারোমাস্যা। তাই কবিতা নিয়ে বাঙালির এই উৎসবকেই আমাদের
শ্রদ্ধার্ঘ মাসিক কবিতা উৎসব,শুধু মাত্র কবিতার জন্যে কবিদের
মাসিকপত্র। বাংলার জনজীবনে কবিতার এই যে একটা বিপুল প্রভাব এই বিষয়টি আপনাকে কীভাবে
প্রভাবিত করে। এবং আপনার লেখকসত্ত্বা গড়ে ওঠার পেছনে এই প্রভাব কতটা ক্রিয়াশীল ছিল
বলে মনে করেন আপনি?
জাকিয়া সুলতানা: আপনাদের অভিনন্দন কবিতাউৎসবের পক্ষ থেকে আমার
সাক্ষাৎকার গ্রহণ করার জন্যে। আমি একজন
সাধারণ মানুষ। বলতে পারেন কবিতার একজন পাঠক। নিশ্চয়ই কবিতা আমি ভালোবাসি। এখন কবিতাই আমার জীবন। বাংলার জনজীবনে কবিতার প্রভাব অপরিসীম। কবিতাকে শুধু কয়েকপঙক্তির
ভাবের প্রকাশ হিসেবে দেখলে চলে না। একটি জাতি
তথা বিশ্বের মানুষের কথা ফুটে ওঠে কবিতায়। কবি কবিতায়
তাঁর হৃদয়ের কথা বলেন। আর তাতে ফুটে উঠে হাজারো
হৃদয়। বাংলার আনাচে-কানাচে, জন থেকে হাজারো জনের ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে কবিতা। বাংলা জনজীবন বাদ দিলে তো আমি আর আমি থাকব না। আমি হয়ে যাব অন্য কেউ। আমার লেখক সত্তার পেছনে বাংলার জনজীবন ক্রিয়াশীল। বাংলার জনজীবন থেকেই আমি কুড়িয়ে আনি কবিতা।
কবিতাউৎসব: কবিতা লেখার শুরুর সময় থেকে আজ অব্দি সময় সীমায় কবিতা
সম্পর্কে আপনার ধারণার বিশেষ কোন পরিবর্তন হয়েছে কি? এই
প্রসঙ্গেই জানতে চাইব আমাদের বঙ্গসংস্কৃতিতে কবিতা লেখা কতটা হুজুগ সর্বস্ব আর
কতটা সাধনা সাপেক্ষ বলে মনে হয় আপনার।
জাকিয়া সুলতানা: নিশ্চয়ই কবিতা লেখার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমার
লেখার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমাকে
প্রতিটি শব্দ, বাক্য নিয়ে ভাবতে হয়। কারণ, আমার কাছে
মনে হয়, কবিতা তের-চৌদ্দ বছরের বালক-বালিকার
আবেগ নয়। সত্যিকার কবি হতে হলে সাধনা
ছাড়া বিকল্প নেই। কবিকে ধ্যানী হতে হয়। কবিতার জন্য নিজেকে জীবন ও জগতের সঙ্গে মিলাতে হয়। কবি আগুন নিয়ে খেলেন। একটি শিশু
জানে না আগুনের ব্যবহার কিন্তু কবি জানেন। কবি নিজেকে
অনবরত আগুনে পুড়িয়ে পুড়িয়ে বর্ণমালার ফুল ফোটান। কবি যদি কবিতার কণ্টকময় পথে না হাঁটতে পারেন, তাহলে তিনি বেশি দূর এগোতে পারবেন না। আর হুজুগে কে কবি হতে চান, তা আমার জানা নেই। তা কি সম্ভব?
কবিতাউৎসব: কবিতা লেখার প্রেরণায়
স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ না কি অভিজ্ঞতাজাত জীবনবোধ সঞ্জাত চেতনার নান্দনিক বিকাশ, কোনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় আপনার কাছে? যদি
একটু বিস্তারিত আলোচনা করেন এই বিষয়ে।
জাকিয়া সুলতানা: দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। আবেগহীন মানুষের পক্ষে তো কবিতা লেখা সম্ভব নয়। তবে আবেগে ভেসে গেলেও চলে না, তাহলে কবিতা মান হারায়। লেখার ক্ষেত্রে
অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। জীবন জগৎ সম্পর্কে ধারণাহীন
মানুষ কীভবে লিখবেন। তবে অভিজ্ঞতা ছাড়াও কবিতা
লেখা যায়। আসলে কোনোকিছু নিয়ে লিখতে
হলে সেই বিষয়ের সঙ্গে লীন হয়ে যেতে হবে। কবিতাকে
জয়ী করতে গেলে অন্য সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন না হলে হয় না।
কবিতাউৎসব: কাব্য সাহিত্যে শ্লীলতা
অশ্লীলতার বিতর্ক চিরন্তন। একবিংশ শতকের প্রথম পর্যায়ে দাঁড়িয়ে এই বিষয়ে আপনার
মতামত জানতে আগ্রহী আমরা।
জাকিয়া সুলতানা: কাব্য-সাহিত্যে শ্লীলতা-অশ্লীলতার বিষয়টি সমাজ কর্তৃক
আরোপিত। একজনের কাছে যা শ্লীল, অন্যজনের কাছে তা অশ্লীল। আসলে বিষয়টি আপেক্ষিক। কাব্যের মধ্যে মানব হৃদয় কতটুকু ধরা পড়েছে, সেটাই বিচার্য বিষয়। সত্য ও
সুন্দরই কবির লক্ষ্য। আমি শ্লীলতা-অশ্লীলতার মানদণ্ডে কাব্যকে বিচার করা অযৌক্তিক মনে করি।
কবিতাউৎসব: বাংলা সাহিত্যের আদিগন্ত জুড়ে
যে তিনজন কবির ভুমিকা বা প্রভাব সবচেয়ে বেশি, সেই
রবীন্দ্রনাথ নজরুল ও জীবনানন্দের কাব্য ভুবন ছাড়িয়েও বাংলা কাব্যসাহিত্য আজ
অনেকদূর বিস্তৃতি লাভ করেছে। সেইখানে দাঁড়িয়ে আজকের বাংলা কাব্যসাহিত্য সম্বন্ধে
আপনার সামগ্রিক মূল্যায়ন সম্বন্ধে যদি কিছু বলেন বিস্তারিতভাবে।
জাকিয়া সুলতানা: বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল জীবনানন্দ দাশসহ অনেকের অবদান অপরিসীম। তাঁদের কাছ থেকে আমাদের অনেককিছু শেখার আছে। তবে বাংলা কবিতা এখন রবীন্দ্র-নজরুল ও জীবনানন্দ দাশ পেরিয়ে অনেক দূরে এগিয়েছে। বর্তমানে অনেক শ্রদ্ধেয়জন ভালো কবিতা লিখছেন। এভাবেই কবিতা এগিয়ে যাবে। রবীন্দ্রনাথের সময়ের কবিতা আর এখনকার কবিতার মধ্যে অনেক পার্থক্য। এটা সত্যি যে পুরাতনকে ধারণ করেই সামনে এগোতে হয়। পুরাতনকে অবজ্ঞা বা অবহেলা করে নয়।
কবিতাউৎসব: কবি আর কবিতার পাঠকের মধ্যে
যোগসূত্র হিসাবে সাহিত্য সমালোচকদের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আপনার কাছে?
জাকিয়া সুলতানা: কবি আর কবিতার পাঠকদের মধ্যে যোগসূত্র হিসেবে
সাহিত্যসমালোচকের ভূমিকা ব্যাপক। একজন প্রকৃত
সাহিত্যসমালোচকই পারেন কবিকে সামনে এগিয়ে নিতে, একজন থেকে হাজারো জনে কবিতাকে ছড়িয়ে দিতে। যত বেশি সমালোচনা হবে, তত বেশি ভালো সাহিত্য সৃষ্টি হবে বলেই আমি মনে করি।
কবিতাউৎসব: কবি হিসাবে একজন কবির সামাজিক
দায়বদ্ধতা সম্বন্ধে আপনার অভিমত কি? আপনি কি কবিতার সামাজিক
দায়বদ্ধতায় আদৌ বিশ্বাসী?
জাকিয়া সুলতানা: কবির তো সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকতেই হয়। যে সমাজে তিনি আছেন, তাকে একেবারে উপেক্ষা করলে চলে না। তবে কবিরা
সমাজ ভাঙেন, নতুন সমাজ গড়েন। কবি যদি প্রথাবদ্ধ হয়ে পড়েন, তাহলে কে দেখাবে মানবমুক্তির নতুন পথ?
কবিতাউৎসব: নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শ
কবিতার সাহিত্যমূল্যের পক্ষে কতটা প্রতিবন্ধক বলে মনে করেন আপনি। না কি রাজনৈতিক
মতাদর্শের ভিত্তি থেকেও মহত্তর কবিতার সৃষ্টি সম্ভব?
জাকিয়া সুলতানা: কবিতা আর রাজনীতিক স্লোগান এক নয়। কবিতা যদি রাজনীতির স্লোগানে পরিণত হয়, তাহলে তা কাব্যগুণ হারায়। তারপরেও বলতে হয় পৃথিবীতে অনেক ভালো কবিতা রাজনৈতিক প্রেরণাসঞ্জাত। কবিকে ভাবতে হবে তিনি কবিতা লিখছেন, রাজনৈতিক স্লোগান লিখছেন না। কবিকে সব
মানুষের হতে হয়। মানুষকে ভাগ করলে তিনি হয়ে
পড়েন আঞ্চলিক কবি বা দলীয় কবি বা রাজকবি। এঁরা ওই
দলের মুখপাত্র, কবি নন।
কবিতাউৎসব: কবি শঙ্খ ঘোষের মতে, ‘সাহিত্যের,
সমাজের, আমাদের মূল্যবোধের, আমাদের জীবনযাপনের সামূহিক ক্ষতি করাই এস্টাবলিশমেন্টের কাজ’। আপনিও কি সেই মতে বিশ্বাসী? আবার আমরাই দেখতে পাই এই
এস্টাবলিশমেন্টেই অনেক কবি সাহিত্যিককে খ্যাতির শিখরে পৌঁছিয়ে দেয়। একজন
সত্যিকারের কবির পক্ষে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কতটা দুরূহ বলে আপনার মনে হয়?
জাকিয়া সুলতানা: শ্রদ্ধেয় কবি শঙ্খ ঘোষের মতের সঙ্গে আমি একমত। তাঁর কবিতার আমি একজন পাঠক। দুঃখের মধ্য দিয়েই রচিত হয় প্রকৃত কবিতা। সুখে কবিতা হারিয়ে যায়। তবে আর্থিক যন্ত্রণার চেয়ে কবিতা সৃষ্টি করার যন্ত্রণা একজন
কবির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কবিতা লিখে না খেয়ে থাকার জন্য কেউ পৃথিবীতে আসেনি। নিদারুণ অর্থকষ্ট মানুষের মনুষ্যত্ব নষ্ট করে দেয়। একজন কবি কবিতা লিখবেন কিন্তু তাঁর বেঁচে থাকার জন্য সচ্ছলতা
প্রয়োজন। অন্যথায় স্বাধীনভাবে বেঁচে
থাকার জন্য কবির দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। রাষ্ট্র কবির স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কারণ, কবি ও কবিতা
স্বাধীন। কবিকে শৃঙ্খল পরালে আর কবিতা
থাকে না।
কবিতাউৎসব: বাংলা কাব্যসাহিত্যের উপর
বিশ্বসাহিত্যের প্রভাব সর্বজনবিদিত। আপনার কাব্যচর্চায় এই প্রভাব কতটা সচেতন ভাবে
এসেছে?
এই প্রসঙ্গেই জানতে চাইব, আপনার
খুব প্রিয় বিদেশী কবি কারা?
জাকিয়া সুলতানা: বাংলা কাব্য-সাহিত্যের ওপর বিদেশি কাব্য-সাহিত্যের
প্রভাব থাকলেও প্রকৃত কাব্য-সাহিত্য
বাংলারই, এটাকে বিদেশি প্রভাবিত বলা ঠিক হবে
না। আসলে আমি লিখি আমার কবিতা। পৃথিবীর কোনো কবির কবিতা দ্বারা আমি প্রভাবিত নই। বিদেশি কবিদের মধ্যে পুরাতন ও নতুন উভয়েই কবিতা পড়েই আমি অনুপ্রাণিত
হই।
কবিতাউৎসব: কিন্তু বাংলা কাব্যসাহিত্যের
প্রভাব কি বিশ্বসাহিত্যের কোন অংশের উপর দেখা যায় আদৌ? না
গেলে কেন?
জাকিয়া সুলতানা: সে রকম কি মনে হয়? পৃথিবীতে বাংলা ভাষা সীমিত পরিসরেই ব্যবহৃত হয়। কোনো ভাষার কাব্য-সাহিত্যের
মাধ্যমে অন্য ভাষার কাব্য-সাহিত্যকে
প্রভাবিত করতে হলে সেই ভাষার শক্তি থাকা জরুরি। তা না হলে কীভাবে অন্য ভাষাকে প্রভাবিত করবে? বাংলা ভাষার যে শক্তি নেই, তা আমি বলছি না। বাংলা ভাষা আরও বিকশিত করা
প্রয়োজন। সেজন্য বাংলা ভাষার কাব্য-সাহিত্য যত বেশি অনূদিত হবে তত বেশি বিদেশি কবি-সাহিত্যিকের মাঝে তার প্রবেশ ঘটবে। তবে অনুবাদের কাজটি এগিয়ে নেবার জন্য অনেক শ্রদ্ধেয়জন ভালো কাজ
করছেন।
কবিতাউৎসব: একজন প্রকৃত কবির কাছে প্রাতিষ্ঠানিক
পুরস্কার কতটা মূল্যবান? পুরষ্কারের খ্যাতি কবির
প্রতিভাকে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেয় না কি এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে আরও?
জাকিয়া সুলতানা: পুরস্কার তো নিশ্চয়ই মূল্যবান। প্রাতিষ্ঠানিক পুরস্কার প্রকৃত কবিকে আরও বিকশিত হতে সহায়তা
করে। কবি আরও সৃষ্টির প্রেরণা লাভ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক পুরস্কার অকবিকে থামিয়ে দেয়। কারণ, পুরস্কার
পাবার পর অকবির আর কাব্য রচনার প্রয়োজন পড়ে না। একজন প্রকৃত কবি পুরস্কারের প্রত্যাশায় লেখেন না। তিনি তাঁর কাব্য সৃষ্টির মধ্য দিয়েই জয়ী হন। প্রকৃত কবি কখনোই তৃপ্ত হন না।
কবিতাউৎসব: আজকের বাংলা কবিতায় ঐতিহ্য ও
আধুনিকতার মধ্যে সমন্বয় সাধন কতটা জরুরী বলে মনে হয় আপনার? এই
বিষয়ে তরুণ প্রজন্মের কবিদের ঠিক কি পরামর্শ দিতে আগ্রহী আপনি?
জাকিয়া সুলতানা: বাংলা কবিতার ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মধ্যে সমন্বয়
তো রয়েছেই। কারণ, প্রকৃত কবি পুরাতনকে ধারণ করেই নতুনের পথে হাঁটেন, পুরাতনকে এড়িয়ে গিয়ে নয়। নিজের ঐতিহ্যকে ভুলে গেলে নিজেকেই ভুলে যাওয়া হয়। আর কবিকে কখনো পরামর্শ দেওয়া যায় না। কোনো কবিই কারও পরমর্শ শুনতে বাধ্য নন, দেওয়াও উচিত নয়। প্রত্যেক
কবি তাঁর নিজের পথেই হাঁটবেন। অন্যের
গড়ে দেওয়া পথে অকবিরা হাঁটেন। প্রকৃত
কবি পথের প্রতিবন্ধকতা দূর করেন। নতুন পথ
তৈরি করেন। কবি ভাঙন আর গড়নের কারিগর। পুরাতনকে না ভাঙলে নতুন ইমারত তৈরি করা করা যায় না। পুরাতনের ওপরে নতুনকে ধারণ করালে তা ভেঙে পড়বে। নতুনকে হাঁটতে হবে একেবারে নতুন পথে। সে পথ কেউ পছন্দ করুক আর না-ই করুক। সে পথ সবার থেকে আলাদা।
কবিতাউৎসব: আজকের বাংলা সাহিত্যের দিগন্তে
কবি খ্যাতির যে একটি বাজার মূল্য দাঁড়িয়ে গিয়েছে সেটিকে আপনি কিভাবে দেখেন। অর্থাৎ
এর ভালো মন্দ দুই দিকের বিষয়ে যদি বলেন।
জাকিয়া সুলতানা: বাজারমূল্য দিয়ে কবিকে বিচার করা যায় না। খ্যাতির পেছনে ছোটাও কোনো কবির লক্ষ্য হতে পারে না। তবে অকবিরা খ্যাতির পেছনে ছুটতে পারেন। প্রতারণার মধ্য দিয়ে কোনো পুরস্কার বাগিয়ে নিয়ে আত্মতৃপ্তি লাভ
করতে পারেন। প্রকৃত কবির কাছে প্রাতিষ্ঠানিক
পুরস্কারের চেয়ে মানুষের ভালোবাসা গুরুত্বপূর্ণ। আসলে কাব্যরসিকেরাই প্রকৃত কবিকে পুরস্কৃত করেন। সেটাই আসল পুরস্কার।
কবিতাউৎসব: কবিতাউৎসবের পক্ষ থেকে আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। পরিশেষে জানতে চাইব বাংলা
কাব্যসাহিত্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
জাকিয়া সুলতানা: অবশ্যই আশাবাদী। অনেক আগে রবীন্দ্রনাথ বাংলা কবিতাকে সম্মানিত করেছিলেন। বাঙালির জন্য এটা বড়ো গৌরবের। আশা করছি, ভবিষ্যতে
কেউ না কেউ বাংলা কবিতাকে নতুনরূপে সম্মানিত করবেন। বাংলা কবিতা
এখন সে পথেই এগোচ্ছে। বাঙালির ভাষা আন্দোলন এখন
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একদিন বাংলা
ভাষায় রচিত কাব্য-সাহিত্য বিশ্বের বুকে নিজের
সম্মান প্রতিষ্ঠিত করবে। আমি বাংলা ভাষার সেই বিশ্বজনীন
কবির জন্য কান পেতে আছি। পরিশেষে এটাই বলব: কবিতার জয় হোক। সত্য ও
সুন্দরের জয় হোক। আপনাদের প্রতি আমার আন্তরিক
ধন্যবাদ ও শুভ কামনা।