বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

তৌহীদা ইয়াকুব


তৌহীদা ইয়াকুব

আটপৌরে উপাখ্যান

কিছু মায়া অন্ধকারের ছায়ায়
অটুট ছিল বাক্তিগত আলো
তোমার আমার সু-ডাকা ভোর এলেও
কু-ঢালে কেউ বহুল চক্রাকারে!

হিমের নীচে নির্জন দ্বীপ আঁকি
কফির ওমে কাটাই নিদ্রাহীন!
হাসতে পারি, এড়াতে পারি
মোটের উপর টিকে থাকা
মন খারাপের দিন।

মুখোমুখি দাঁড়াই অনায়াসে ।
তীক্ষ্ন বোধে রক্ত উঠে আসে
বয়স শুধু যোগ করে দেয় সময়
বৈভবে তার অন্য সবই ভাসে।

তোমার ভিতর জ্বলতে থাকা আগুন
উলটে পাল্টে দেখি, অবাক লাগে
কোথায় খুঁজি চেতন গলির মোড়?
ছায়ার টান অনেক দূরে গেলে?




মুমূর্ষ সময়

ভাল লাগা না লাগার প্রশ্নহিন , প্রচ্ছন্ন যাপন
এক খর নদী ।
সন্নিবিষ্ট হতে থাকা বিভ্রম দিগন্তের অপারে
বিভোর নিবিষ্টতায় কিছুকাল কেটে যায়।
এবং সম্পূর্ণ বিপরীতে -
দূর চরাচর জুড়ে আপাতকাল লিখে মূমুর্ষ সময়।

পাথর আর জলের লাবণ্য ধরে কি শূন্যতা ?
এবং -
এরপর উত্তরঙ্গ জোয়ার টেনে আনে
উঠতি গল্পের ঝড় জল।

এখানে অচেনা শহরের আনাচে কানাচে
যৌথ পরাবৃত্ত কুটপ্রবৃ্ত্তির কাছে
সহজ জল আর সরল সাতার
সাপ্তাহিক প্রার্থনা সঙ্গীতের আগে বা পরে
আপরাপর শ্রীহীন ভস্মনামে ফিরে এলে
নেমে গেলে কাদা-মাটি পঙ্কিলে
কি ভীষণ ক্ষুব্ধকণ্ঠ বলে -
এইসব কষ্টকে জীবনের ঠিকানা তুমি ই দিয়েছিলে।






একা আমি ও নিয়তি

নিয়তি হা বললেই সময়ের আগে
ফাগুনমুখি কবিতা,
আম চালতার তুষ্টি ঘনকাল।

সামনে পিছনে
কুয়াশা , মেঘ , বৃষ্টি, আকাশ
সব নীল, নীল বিস্তার।

যূথচারী আমি একা হলেই কাঁদি।







ফেব্রুয়ারীর মায়া -১

তোমার ইচ্ছে মেশে পাতায়
শিরায় উপশিরায় , সবুজে, সাদায়
কিম্ভূত ক্ষত এর মুখে ঢেলে দাও
নিরাময় সুধা।
ফেব্রুয়ারীর উত্তাল শব্দের ভিড়ে
কি গভীর মমতায় উত্তর মেরুতে বসে
গাও ফাগুনের গান ।







ফেব্রুয়ারীর মায়া -২

আমি মুক্ত পাব বলে সমুদ্র চলে আসে কাছে।
অচেনা অশ্লেষে, নিষিদ্ধ ঘোর
ঢেলে দিয়ে পূর্ণ করে আকণ্ঠ পিয়াস।
ভালবেসে প্রতিদিন শব্দের কাছে বসি
শব্দেরা অনার্য বাতাসে শ্বাস টানে
পরিযায়ী ডানা মেলে উড়ে আসে অন্য অবয়বে
এই হিম অচেনা শহরে অন্ধকারে
দেখি কোন রূপ, অনিন্দ্য পুরুষ সে এক
ফ্রেব্রুয়ারি দেখায় তারে
ইচ্ছে করে প্রতিদিন লিখি ভালবেসে, আর
প্রতিদিন ঘুরে ফিরে আসি সেই সব শব্দের ভিতরে।







মুক ও চৈতন্যের আবছায়

মাঝে মাঝে শব্দগুলো কে খুব খুঁজে পেতে কষ্ট হয় । মাঝে মাঝে বোধ গুলো নির্বাক । এসব মূক ও চৈতন্যের দিনলিপি লিখে ক্লান্তি বাড়ে । নিরেট বিষাদের ভারে নুইয়ে যেতে যেত পুরানো কথার ভাজ খুলে দেখি বা দেখতে ইচ্ছে করে । মুছে দিতে ইচ্ছে করে মুখর সারাবেলার অসঙ্গতি । এই সব আকুল অস্থিরতা মৃত্যু মুখ অবধি বিস্তৃত হতে থাকে । আর স্মৃতির গল্পে ভরে দু'চোখ। এলোমেলো হই । ভুলে যাই কোথায় কেমন এ জীবন ?! হৃদয় ওখানে নেই , কিছুটা হৃদয় থেকে দূরে । ওখানে বড় বেশি কুয়াশা জমে আছে । হিম , মেঘ , অন্ধকার । অতি তুচ্ছ ঝর জল আসে যায় । মৌনতার মাঝে পরে থাকা অনিশ্চয়তা কুড়াই । এক একবার জেগে উঠি । হাত পাতি মোহ মুগ্ধতার কাছে । ঠিক ঠাক হেটে যাব বলে দূর পাহাড়ের অবোধ্য ঘোরের খুব কাছে বসে জীবনপিয়াসী কিছু স্বপ্নের অনুবাদ শিখি......