মৃণালিনী
সম্পর্ক
১
সম্পর্কের শাখা-প্রশাখা
ছেঁটে বনসাই করে নিলে
মনে জায়গা দখল করে
প্রয়োজনের তুলনায় কম
নির্দিষ্ট অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে
আগাছা মুক্ত মাঝে মাঝেই
নিজেকে আবিষ্কার
স্বকীয়তায় অভিনব রূপে।
স্পেস অ্যান্ড
ভ্যারাইটি সম্পর্কের বেসিক নিডস
ব্যাল্যান্স না করতে
পারলে
আকাশ তুমিও
কখন লজ্জায় কাটা ঘুড়ির
মতো
লুটিয়ে পড়তে পারো
মাটিতে।
২
সম্পর্ককে প্রয়োজনের
দাড়িপাল্লায়
দাঁড় করালেই বর্নিল
প্রজাপতি
নির্দিষ্ট ওজনের পপর্কন
আকাশে ঘুড়ি
মাঞ্জা দেওয়া সুতো
শক্তিশালী হলেও যুক্তিহীন
তর্ক চলতে থাকবে মুরগির
আগে কী ডিম?
পুরুস্কার
প্রতিভাবানের নির্ধারিত
বয়সসীমা অযৌক্তিক
একে একে মঞ্চে আহ্বানে
উঠে আসবেন
দীপ্ত মহান প্রতিভা
যারা বাবা ও মাকে
পথোশ্রমে অথবা বৃদ্ধাশ্রমে রেখে
বিস্মৃতির অতল গহ্বরে
নিজের অতীত ভুলে
কর্তব্য পালনে নিজ সন্তানের
আদর্শ বাবা ও মা;
সম্ভাব্যময় উজ্জ্বল
ভবিষ্যতের প্রতীক্ষার অবসানে
সেই সব যোগ্য সন্তানেরা
বিশেষ সম্মানে পুরুস্কৃত
হবে।
পুরস্কার ফলকে সোনালী
অক্ষরে লেখা থাকবে “অকৃতজ্ঞ সন্তান”।
শ্রবণ ও রাম মুখ্য
অতিথির ভূমিকায়
শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং
সঞ্চালকের ভূমিকায়
পান্ডবেরা থাকবেন সমবেত
দর্শকের চেয়ারে।
চোরাবালি
১
তুমি এসেছিলে-
রূপ কথার গল্পের মতো
সঙ্গে এসেছিল সুপ্ত
প্রতিভা
কলম কে সঙ্গীত করে।
তুমি এসেছিলে-
বিশ্বাস ও সুরের ডালি
সাজিয়ে
সমুদ্রের চোরাবালিতে
মরীচিকাময় ধূ ধূ
মরুভূমিতে।
তুমি এসেছিলে-
বন্ধু 'অচল' শব্দের
আড়ালে
আমার তুচ্ছ জীবন পাঁচালী
বধির পৃথিবীকে শোনাবে
বলে।
তুমি এসেছিলে-
উজ্জ্বল স্বপ্নের আলোয়
চোখ ধাঁধিয়ে দেবে বলে
এখন জীবনের ক্ষীণ আলো
অতৃপ্তিতে পারাপার করে।
২
বালিয়ারির নিচে উঁই ঢিবি
করে না
চোরাবালি হাতছানি দেয়
নপুংসক জীবনে সন্ধ্যা
বীর্য উর্বর জমি খোঁজে আকাশে।
জীবন বাঁধা থাকে না,
চামড়ার শিরোনামে।
নপুংসক কলমের শেষ বিন্দু দিয়ে লেখা
বিকলাঙ্গ হতে নারাজ অক্ষর।
পৌঁছতে পারে না স্নায়ু-
রূদ্ধ জরায়ু
কল্পনার খেলাঘর আঁকে।
৩
আগুনের শিখায় মোমবাতি
গলে
শিখা জ্বালিয়েছ অন্ধকার
মাঠে
জোনাকিরা দীপাবলীর আলো
প্তিকূল হাওয়ায় মধুমাখা
শরীর।
জোনাকি অবাক; লজ্জায় পতঙ্গ জ্বলে
সঙ্গে জ্বলছি আমি
বদনামের শিখার কালিতে
কালিমালিপ্ত;
চন্দন কাঠের চিতা সাজিও
না
পবিত্র আত্মার গন্ধ
কুস্তরী হাওয়ায় ভাসবে।
রূপকথা
রূপকথার গল্প শুনে শুনে
একদিন বড় হয়ে উঠি
অবচেতনে রূপকথার
চরিত্রেরা ঘুরিয়ে যায় চাবিকাঠি।
কেন জানত!
জীবন একদিন পরিণত হবে
রূপকথায় ?
কাহিনিতে রাজকুমার নয়,
অহংকারী দৈত্য সুযোগ
হাতরায়।
ফুলের সৌন্দর্য
কক্সমেটিক নয় জটিল পরিধিতে খসে আলগোছে
পাপড়ি হারিয়ে
ক্যালকুলেশনে শূন্য
তবুও শিরির ঝরায়
সূর্যালোক।
পাপড়ি শালপাতা হলে ব্যবহৃত হত কাজে
এঁটো পাতার সম্মানে শেষ
গন্ধ বিলিয়ে অস্থি ডাস্টবিনে।
মহাসমুদ্রের তোলপাড়
বালিসের নীরব সান্ত্বনা
অন্ধকার শেষে সূর্যমূখীর
পাপড়ি সতেজ
বাগানে বাগানে ফুল, সৌন্দর্য ও গন্ধে ‘সেই’ রূপকথা!
কচিডালে কেন? ক্ষধার্ত
দানবের রোষানলে প্রশ্নেরা যদিও মাখন
বড় ডালের আগেই কেন
সৌন্দর্যের অনধিকার চর্চা
ভারে নুইয়ে
প্রভিভার বিকিরণ?
রূপকথার প্রশ্ন জটিল
জিলেপি
অনাবিল সৌন্দর্যে উঁচু
সিঁড়ির পরিবর্তে ক্যালেন্ডার
ট্রাফিকে হাত
তোলা-স্তব্ধ রাস্তায় বিবেকের প্রশ্ন
সিনিয়র হাটবাজারে, মধ্য বয়স যখন ডাঙ্গায়-জলে
সেখানে আর কত বড় হতে হবে?
আর
কত বড় হলে রূপকথা নয়
জীবন-বাস্তব অঙ্ক শেখাবে
শূন্যতত্ত্ব
রাক্ষসের নিয়ম
জনস্বার্থে
বৃন্তচ্যুত ফুল রূপকথায়
গাছের খোঁজে
ফুলহারা গাছ রূঢ় বাস্তবে
পলকহীন আবহমানে চোখ রাখে।
তুমি আর আমি
ভোরের শিশিরে
চুইয়ে পড়া দুধ
ঘাসের পালক কালো মাটির
চোখে
সূর্য যোগী নির্দিষ্ট
সময়ে ঘুম ভেঙে চড়ায়ের চঞ্চ গতিতে
মোরনিং টু ইভিনিং স্টিল
ওয়াকিং
অন্য গ্রহের পাশাপাশি
হাঁটতে হাঁটতে
চোখ বুলিয়ে যায় পৃথিবীর
কোন নির্দিষ্ট মানচিত্রের দিকে। সব এক।
গাছ ক্লোরোফিল সক্রিয়, নতুন পাতা চারা জুড়ে জুড়ে বৃক্ষ
সবার চোখ আকাশের দিকে, ওপরের সিঁড়িতে মেঘ
সূর্য বা গাছেদের ভুলে
গিয়ে আধুনিক সভ্যতার গতিচক্র বিপরীত দিকে!
'History
repeat its self' অতীত বসন্তের ঝরা পাতায় ভারে
শিউলি টুপটাপ বিজাতীয়
পোশাক শব্দ উচ্চারণে।
রণক্ষেত্র থেকে উঠে আছে
তোলোয়ারের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ
নখ আর জিভের ধারালো
অস্ত্রের আরামের আমদানি আরও অদ্ভুত সহজ
কত যে কৌশল, চক্রবিহূ দেয়াল ঠেলে এগিয়ে চলেছে কালো বাদামি ফরচুলা
কালো মাটি লাল সিঁদুরে
জমে জমে কয়লা।
সুপ্ত নীরব আগ্নেয়গিরি
উপরে ভাসমান দুধের নদী, মা গঙ্গা যমুনা সরস্বতী
সবার মধ্যে
নীরব তুমি আর আমি।