বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

নাসির ওয়াদেন


নাসির ওয়াদেন
           
পলাশের ডানা 

প্রত্যেক ভোর চেয়ে আছে সন্ধ্যার দিকে
একটা আকর্ষণ অনুভব করে মেরুদিগন্ত
বিকেলের বৃষ্টিতে
গানের কলি ভাসছিল
অবেলার সুর কাঁধে বয়ে বেড়াচ্ছে ফাল্গুন

হয়তো, কোন এক আলো আশাদীপ জ্বেলে
বিদ্যুৎজ্বরে পুড়ছিল কচি শৈশব
মেঘের প্রান্তদেশে বর্বরতাহাসি
একটুকরো শুকনো ঘাস জ্বেলে দেয় 

উষ্ণতা আর পরমভক্তি কীভাবে
টেনে আনে মধুমাস

অবলীলাক্রমে মানবী হয়ে ওঠে পলাশের ডানা




                  

ইনসাফের আগুন   

আকাশের করুণচাঁদ বনের শব্দে ডুবেছিল
হিংস্রদুরত্ব কলসির ছিদ্র পথে উঁকি মারে
নির্জনতা নিঃশব্দে মেপে দেখে, আর 
পা হিসেব কষেই হাঁটে হরপ্পার গলিতে  
ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে পায়ের ছাপ
ভুতুড়ে ঘুমের মাঝে খোঁজে কোমল স্বপ্নকে

স্বপ্নগুলো বারবার প্রতারিত করলেও
কেমন আপনজন বলে মনে হচ্ছে
সহ্যের সাদাজল রূপান্তরিত স্বীকৃতি, যা
মানুষের চোখে বিরল সমষ্টির মাঙ্গলিকচিহ্ন
যুক্তিরা মার্গের পথে ইনসাফ চেয়ে নেবে ---

ইনসাফের আগুনে পুড়ছে বনপলাশের কাব্যগাঁথা

        



ইতিহাস খুঁড়ে খুঁড়ে দেখা

দিগম্বর রাত্রির ভেতরে ঢুকে পড়েছি যখন 
তখনও প্রত্যূষ সাবালিকা হয়ে ওঠেনি
কিছু কিছু স্ফীতিকাণ্ড দেখি আনাচে-কানাচে

বেহিসাবী কদর্যগুলো রূপান্তরিত ডানা
ছড়িয়ে থাকা আকন্দফুলের নীরবতা

সকালের রোদ বড্ড মিষ্টি ফাল্গুনের চোখে
কাঁচাযৌবনকে ধরে রাখতে রাঙাদিদির
কী কঠোর আত্মত্যাগ••••

কচুবনে শেয়াল রাজা হলে
তালপাতারা ভেঁপু বাজায় আনন্দে
বীরপুরুষের তরবারিহাতে ষুদ্ধ নামছে

অগাধ জলে হাবুডুবু খাচ্ছে বুদ্ধির দৌড়
হিসাবের লালখাতা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটছে

ইতিহাস খুঁড়ে দেখো, ধূর্ততা কোথাও লুকিয়ে ---


       


বিচ্ছেদের ডুরে শাড়ি

কুঁড়ি থেকে ফুল ফোটার মুহুর্তেই
আমার জন্মছোঁয়া মাটি ঘ্রাণ শুঁকে 
একটা একটা ফুল ফোটে
ঝরে পড়ে সূর্যস্নাত আমার একটাদিন

ডোমবউয়ের ভূতের বেগ পেয়েছে মাথা
ওঝার হাতে মুড়ো ছাঁটা
বউকে বশ করতে পারেনি ডোমচাঁদ
হেলে সাপের মতো হিস্ হিস্ শব্দেও••••

পুরুষসিংহের মত গর্জন করতে গিয়ে
ল্যাজেগোবরে মাখামাখি ধর্মের চাঁদ

বাতাসে বিবেকহরিণ কৌতুহলী নৌকারপাল
তুলে ভেসে যাচ্ছে বিষাদের জলে
ধর্মবিশ্বাস আর কার্যকলাপ পরস্পরের বিপরীত
ধোঁয়াশা কাটেনি কে কাকে আগে ছোঁবে

আলিঙ্গনরোদ শুকিয়ে দিচ্ছে বিচ্ছেদের ডুরে শাড়ি

         



প্রজ্ঞার খাপতরবারি 

কেউ কেউ বলে ধর্মে বিশ্বাসী, আস্তিক নই
কিন্তু ওভাবে কী থাকা যায়
ধর্মেও,আবার জিরাফেও ---

মানবতা আমাকে টানে সাগরের গভীরে 
দু এক পশলা বৃষ্টি ছাড়া ভালবাসা
আস্তিক হয়ে যায় মননভূমিতে ---

বাতাহত বিশ্বাস ক্ষয়িষ্ণু ঝড়ের ছবি
আঁকছে আমাদের কোমল স্ফারিতস্পৃহা

ব্যাকুলবাতাস দিয়ে আঁকি আলোর আল্পনা
সিঁদ কেটে ঢোকে অভাবী ভালবাসা
হয়তো এভাবেই নিত্যসংসারে আমাপা জল
দেহকোষগুলো ফাণা করে পলাশের উত্তাপে 

এসো,প্রজ্ঞার তরবারি দিয়ে বেদনার আঁধারসমূহ কাটি