অলভ্য
ঘোষ
সুজাতা
আমি
তোমার বুক তচনচ করে দিতে চাই।
চাই
উন্মাদের মত হাল কর্ষণ করতে ।
তুমি
কি কিছুই বোঝ না।
আমি
আমার পৌরুষে আপাদমস্তক তোমায় সিক্ত করতে চাই।
আমি
চাই অভিষিক্ত হতে অনুভূতির চরম শীর্ষে ।
তুমি
কি বোঝ না টসটস করে যে রস গড়িয়ে পড়ছে;
অন্তর্বর্তীকালীন
স্ফীতি ঘটাবে।
তোমায়
লেহন করে; মর্দন করে; তোমায় মন্থন করে; আমি অমৃত পাই।
নিস্তরঙ্গ
তা থেকে তোমাকে এক এক বিন্দু নিকড়ে পৃথিবীর সব সৃজন
তরঙ্গময়।অন্ধকার
থেকে তোমাকে প্রজ্বলিত করে নক্ষত্রমন্ডলী আলোকিত।
তুমি
রামধনু তোমার সাত রংয়ে পৃথিবীটা রঙ্গিন।
আর এই
সাত রংয়ের মিশেলে তৈরি হয় অন্য যে কোন রং।
আমি
বাতিওয়ালা তুমি সাঁঝবাতির রূপকথা।
তুমি
কি কিছুই বোঝ না।
তুমিই
অন্তর্ঘাত ঘটাও শরীরে মনে।
তুমি
কি জানো না তুমিই আমার চালিকা শক্তি আমাকে আত্মায়;
আত্মাকে
পরমাত্মায় পৌঁছিয়ে দাও।
তুমি
কি ভুলে গেছ তুমি তথাগতর সুজাতা।
তুমি
ছাড়া বোধিসত্ত্ব লাভ হত না।
তুমকি
ভুলে-গেছ তোমার পায়েস খেয়েই
মাতা
মায়াদেবী ও বিমাতা গোতমী পুত্র সিদ্ধার্থ
গৌতম
বুদ্ধ হয়েছে।
তুমি
মৃতসঞ্জীবনী।
তুমি
জ্ঞানীর মনি ।
পুণ্যাত্মার
মৃগনাভি
বা
মহাত্মার কস্তূরী।
আধার
আমাকে
পতঙ্গের মত প্রলুব্ধ করে; নিভিয়ে
দাও আঁচ।
পুড়ে
মরতে না দিয়ে। চাঁদপানা হেসে বাঁকা ছাউনিতে
আহবান
করে এনে মাঝ পথে ফেলে যাও ভোরে।
তারা
জাগা রাতের প্রদীপ উস্কে দিয়ে কেটে পড়ো চাঁদ।
এবার
আমি জোর খাটাবো পাগল মেঘের মত।
দমকা
হাওয়ায় ঢেকে দেব তোমার চাঁদ বদন।
মুহূর্তে
আমি পূর্ণিমা গ্রাস করি।
ছাতার
আড়ালে চুমু খায় যেমন লোকে।
তোমার
কোনও কথাই আমি শুনব না।
একটা
কথাও দেব না আর বলতে।
মুখটা
হবে ব্লক আমার ঠোঁটে;
জিভ
কামড়িয়ে ধরবো আমার দাঁতে।
অক্টোপাসের
মত আঁকড়িয়ে তোমায়
আমি
আকাশের বুকে খেলব জলকেলি।
শিমুল
তুলার মত আমার বুকে
মিশবে
তোমার স্নিগ্ধ আলো আছে যত।
খোয়া
যাবে তুমি এক উদ্ভ্রান্ত মেঘে।
ভেসে
যাবে তুমি সন্দিগ্ধ চারটে উরুর ফাঁকে।
এক
লহমায় যখন আকাশ কুসুম ভেলায় জল খসে পরে।
মহাবিশ্বের
ললাটে তখনই কেবল তোমার আধার জুটবে।
তারারা
তখন মিটিমিটি করে ফিচেল হাঁসি হাসবে।
বুঝবে
তুমি বুঝবে.....তরোয়াল খাপে।
খাপ
তরোয়ালে এমনি করে মিসবে।
বুঝবে
তুমি বুঝবে…..
গন্তব্য
উৎস
তুমি অবসানের দিকে এগোচ্ছ।
সব শেষ
থেকেই সব শুরু হয়।
শূন্য
মানে হতাশা নয় পূর্ণতার সূচনা।
ব্রহ্মাণ্ডের
প্রত্যেক অণু পরমাণু পূর্ব নির্ধারিত
ভাবে
পরস্পরের দিকে ছুটছে।
সব
রাসায়নিক বিক্রিয়ায় উৎপন্ন যৌগিক
পদার্থের
ভেতর মৌলিক উপাদান থাকে।
জটিল
প্রক্রিয়ায় যৌগের মৌল ও ফিরে পাওয়া যায়।
বাস্তুতন্ত্রে
খাদ্য খাদক, সোশালিস্ট-ইমপেরিয়ালিস্ট,
সাধু-অসাধু, ধনী-গরীব মানুষের কোন অবস্থা স্থায়ী নয়!
একটা
অবস্থা আসলে আর একটা অবস্থার দিকে অগ্রসর।
পরিবর্তন
চক্রাকার।
সুমেরুর
বিপরীতে পৃথিবীর অপর প্রান্তে আছে কুমেরু ।
তবু
উত্তর মেরুতে সকল দিক দক্ষিণ দিকে নির্দেশিত হয়।
দক্ষিণ
মেরুতে সমস্ত দিক উত্তর দিকে নির্দেশ করে।
ভৌগোলিক
স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় পৃথিবীর যেকোনো স্থানের অবস্থান
সুনির্দিষ্ট
করে অক্ষাংশ ফাই এবং দ্রাঘিমাংশ ল্যাম্বডা।
সব
গলিপথ রাজপথে গিয়ে মেশে।
ঊর্ধ্ব, মধ্য, নিম্নগতি
অতিক্রম করে
সব নদী
গিয়ে পড়ে সাগরে।
পৃথিবীতে
অনবরত দাহ্য হচ্ছে যা কিছু
বাষ্পীভূত
হয়ে মিলছে মহাকাশে।
আবার
মেঘেরা ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি ধারায় আকাশ
নেমে
আসছে পৃথিবীতে।
যেন
লীলা করতে মর্তলোকে নেমে আসছেন
ভগবান।
গলে পড়া মোমগুলো জড়ো করে গলিয়ে
আবার
হয়ে যায় মোমবাতি। মাটির ঠাকুর বিসর্জনের পর
গঙ্গার
মাটি হয়। সেই পলিমাটি কেটেই ফিবছর
আবার
হয় প্রতিমা নির্মাণ। দিকচক্রবালে প্রতিদিন
সূর্য
পূর্বে উদিত পশ্চিমে অস্ত যায়।
তবে
কেন তুমি এত চিন্তিত।
জন্ম
তোমার গন্তব্য মৃত্যুতে।
আত্মা
তুমি পরমাত্মায় মিশবে।
এই
পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণী প্রতিটি পদার্থ
এগিয়ে
চলেছে অনন্তের দিকে।
মুক্তি, সুখ, আনন্দ, ভালবাসা ও ঘৃণা
নিজেকে
ভুলে যদি পারো কর্তব্য পালন করে যেতে।
তার
চেয়ে মহৎ বৃহৎ মুক্তি পৃথিবীতে আর কিছু নেই।
সুখ
আনন্দ রসো গোল্লার মত টুপ করে মুখে তুলে খাবার জিনিস নয়।
ওটা
ডাবের জলের মতো। নারকেলের শ্বাসের মত।
ওপরের
শক্ত আভরণ ডিঙ্গাতে হয়। একটা স্ট্র দিয়ে চুক চুক করে খেলে;
দেখবে
এক ফোঁটাও নষ্ট হবে না। সুখ হাত ফেরত হয়ে আসে;
সেকেন্ড
হ্যান্ড।
ভালবাসা
এত গতিশীল কয়েকশো আলোকবর্ষ দূরেও পৌঁছে যেতে পারে।
কয়েক
ইউক্টোসেকেন্ডে। ঘৃনায় বুকের ওপর নিশ্বাস ফেলা লোকটাও
অনেক
দূর সম্পর্কের। বিশ্ব তত্ত্বীয় দশক দূরে অবস্থিত।
কবর
যে
লোকটি সবার কবর গড়ে
তার
কবরেরও জমিন রাখা আছে;
মাত্র
তিন হাতের বেশী
এক চুল
সে পাবে না!
যে
লোকটি;
কবরের
মাটির বেদীতে
কোদাল
ঠুকে ঠুকে
লুকিয়ে
ফেলতে চায়
কুমারী
ধরিত্রীর পোয়াতি পেট;
ফিনিক্স
পাখির মত
সেও
যখন মরবে
মাটি
অপসারিত হয়ে উপচে পড়বে
গর্ভবতী
মায়ের মত ।
শেষ
ঠিকানা
সবার
একই জায়গায় লেখা!
তবু
অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজনে
কোন
খামতি নেই ।
মায়ের
পেট থেকে
পৃথিবীর
গর্ভে চালান
হয়ে
যাবার আগে যদি পারো
কারো
কবর গড়ো না !
কবর
দেখলে;
তোমার
হৃদপিণ্ড থেকে উপড়ে
দুটো
লাল গোলাপ রেখে তার উপর !