তৈমুর
খান
অন্য এক অবকাশে
__________________
কোনও অবকাশ ছিল না যদিও
তবুও এক অবকাশে চলে যাচ্ছিলাম
জলোচ্ছ্বাস থেকে উঠে আসছিল
জলের
সন্তানেরা
আবেগের তীব্র ধ্বনি
শিস দিতে দিতে
আবার নেমে যাচ্ছিল জলে
তেপান্তর পেরিয়ে চলে
যাওয়া
কোনও রাজপুত্র হচ্ছিলাম মনে মনে
ঘোড়াটিও ছুটছিল দুরন্ত গতি
রাজকন্যার মুখ মনে ছিল
চোখে মুখে তীব্র আলোর ঝলকানি
কোন্ শক্তি জেগে উঠছে
এমন ?
সমস্ত সীমানা ভেদ করে
চলে যাচ্ছি , চলে
যাচ্ছি দূরে.....
আমাকে যেতে হবে
_________________
চোখে শুকনো অশ্রু নিয়ে এসেছি
কলামন্দিরের পাশে তুমি দাঁড়িয়ে
আছ
তোমার মাথায় নেমেছে
বিকেল
এখনও আমি বৈরাগ্যকে খুঁজছি
কেউ চিৎকার করে ডাকেনি আমাকে
অপেক্ষার দিনরাত পার হয়ে
একটি নিজস্ব আয়নায় এসে
দাঁড়িয়েছি
তুমি কলামন্দিরের পাশেই রূপক
ডানে বামে ঘাড় ঘোরাচ্ছ অতীত
ও ভবিষ্যত
মাঝখানে
স্বর্ণময়ী রোদ
তোমার
মুখের আলো
তীব্র নিয়ন্ত্রণের ভেতর
ছুটে যাচ্ছে ট্রেন
আমাকে যেতে হবে অন্ধকারের দিকে
নিশ্চুপ কথারা সব ছুটোছুটি করে
কিছু কি বলতে চায় শেষ কথা
তোমাকে ?
কাঁপন
_________
একটি কাঁপন লিখি
কাঁপন কি লেখা যায় ?
হুহু শব্দের কাছে
দীর্ঘশ্বাস রাখি
দীর্ঘশ্বাস কি রাখা
যায় ?
যারা গোপন আলো জ্বালে
নিজেদের মুখ দেখবে বলে
আয়নার সামনে দাঁড়ায়
আমি তাদেরই কেউ হই
বাদাম ভাজা খাইনি
কোনওদিন
যাইনি গড়ের মাঠে
মাটির দাওয়ায় ভাঙা
সূর্য পেলে
কুড়িয়ে নিয়েছি তপ্ত
রোদের ঢেউ
বিষাদের স্বাদ যতই তেতো
হোক
দুর্ভিক্ষে খেয়েছি তাই
ক্রীতদাসের মতো চাবুক
খেয়ে
রাত জেগে বাজিয়েছি বাঁশি
আগুন আমার কাছে এসে
ভিজতে ভিজতে ফিরে গেছে
কথা চলে গেছে বহুদূর
কাঁপন ঢেউ তুলেছে আকাশে
নিশিবেলায়
____________
পাখির মতো ক্লান্ত দিন
চলে যায়
যেতে যেতে ডাকে
ডাকার সংকেতে
নিভে যায় আলো
আঁধারের চুলগুলি জড়াই
প্রিয়ার মতোন চোখেমুখে
আমার ঘর
____________
এখানে শহর নেই
মাটির বাড়ির দাওয়ায়
নিঃস্ব পিতার ছায়া পড়ে
আছে
মায়ের নিকোনো উঠোনে
বৃষ্টির দাগ
আমাদের কিশোরবেলা আজও
ছুটোছুটি করে
অদূরে মাটির কলসি ঠাণ্ডা
জল নিয়ে বসে আছে
পিপাসা পেলে যাই তার
কাছে
পাতার জ্বালে সেদ্ধ হয়
ভাত
নতুন ধানের গন্ধে ঘর ভরে
আছে