ইন্দ্রাণী সরকার
স্বপ্নের ঘোরে
এই মন কেমন করা মেঘলা দিনে
মাঝে মাঝেই তোমায় ভাবি
জানলা দিয়ে ভিজে মাঠের দিকে তাকিয়ে
মনে হয় এই বুঝি তুমি এলে
অন্যমনস্ক, এলোমেলো চুল হওয়ায় ওড়ে
সাবধানী পা ফেলে ফেলে মুখ নিচু করে চলো।
তুমি হয়ত: আমার কথা ভেবেই হেঁটে আসো
সারা শরীরে যেন তোমার মেঘের নিবিড় ছায়া
হয়ত: তুমি হারিয়ে যাবে আর খুঁজে পাবো না
অপেক্ষায় থেকে থেকে দেখি কেউ ত’ এলো না !
চেয়ে চেয়ে ভাবি কেন এমন হয় না একদিন
তুমি স্বপ্নের ঘোরে বাড়ির পাশটুকু দিয়ে হেঁটে
যাও।
কবিতার মালা
নীল জ্যোছনায় টুপটাপ ঝরে যায় শিশির
রাতপাখিরা পথ ভুলে আমার উঠোনে ছড়িয়ে আছে
পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে জ্বলজ্বল করে
ফুটে ওঠে কিছু তারা।
তুমি শান্ত পায়ে এলে,
কবিতার মালা পায়ে জড়ালে
নূপুর বড় পায়ে বাজছিল আমার
তাই কবিতার কলি খুলে নিয়ে
আমার মনের পাতায় তোমার ভালোবাসা এঁকে যাই
প্রিয় ভুলো না আমায়।
উড়াল
একদিন তোকে উড়াল দিয়ে নিয়ে যাব
পাতার ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়
তোর পা কেটে রক্ত বেরিয়ে এল দু’ ফোঁটা,
আমার চোখেও জল এল তুই দেখিস নি ?
সেই কান্নার জলগুলো বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে
অন্ধকারের প্রয়োজনে একটা পর্দা চাঁদকে
আড়াল করেছিল, জলের দাগ লেগে তাতে
অজস্র ছিদ্র তারার মত ফুটে ফুটে ওঠে।
শিলালিপি
ভালো আছি কথাটা বলা যত সোজা
আসলে থাকাটা ততই দুরূহ ;
আলোকবর্ষ মাড়িয়ে মৃত্যু উপত্যকা
ক্রমশ: ঘনীভূত হয়ে আসে।
অস্তিত্বহীনতার অস্তিত্বে রচিত হয়
কুয়াশাঘন মিথ্যের বেড়াজাল ;
অবিন্যস্ত কিছু খোলা পাতায়
তাও মুদ্রিত থাকে প্রাচীন শিলালিপি।
চালসে কবিতা
অন্ধও নেই, বর্ষাও নেই, শুধু থাকে প্রিয় কবি
তুমি সিদ্ধার্থ বিবস্ত্র হও মিছরির ছুরিতে নবী।
বেরিয়েছে বই গোটা কতক আরও ?
ঝেঁটিয়ে ঝেঁটিয়ে কথা করো জড়
তব ভূমিকা কি? সংশোধন না কি বিভাজন ?
না কি একাই করবে মায়ের জলে অবগাহন ?
চোখেতে চালসে চশমা গলিয়ে
এদিকেতে চাও টেরিয়ে টেরিয়ে
খুঁজে নাও তব আপন প্রিয়া এদিকের পথ ছাড়ো
বেশি কিছু হলে যেতে হবে জেনো হরপ্পা মহেঞ্জদড়ো।