বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
চার পাশ
রাজ পরোয়ানা এলে বদলে যায় স্বর
দ্রুত গোধূলির ছায়া সরে সরে
অন্য এক মুখ
নেমে আসে ।
পথের ওপাশে যারা ফুটপাথের পাপোশ মাড়িয়ে
শুয়ে থাকে , দু চার টাকার অনুগ্রহ
ঠোঁটের সীমান্তে নিয়ে হাসে – পেয়ে গেছি বিজয়
আস্বাদ
শব্দের আড়াল
শিল্পের ভাস্কর্য ছাড়া আর কোন রঙ নেই
সব ধুয়ে গেছে ।
মহার্ঘ সকাল
আজকের মহার্ঘ সকালে
অভিমানউদ্যত
ঠোঁট কেবল গোঁফের ফাঁকে
আর সব চাপা পড়ে গেছে ওই দু লাইন আনন্দ সংবাদে ।
চায়ের কাপের ধুয়ো উড়ে যাচ্ছে যতদূর
খবর কি তার বেশি সম্প্রচারিত ?
বাতাসে গন্ধ থাকে ব্যক্তিগত
যে যার নিজের মত ছুঁয়ে থাকে
ঘ্রাণের মহিমা
আমি জানি উল্লাসের ধ্বনি বেশি দীর্ঘ নয় ।
ছৌ শিল্পী
ছৌ এর মুখোশে রাবণের বিক্রম
ঢাকা পড়ে আছে নিরন্ন ঐ মুখ
দুঃখ সাঁতরে মোহনা তলাশ শ্রম
উপোষী সেলেটে মগ্ন শিল্পসুখ ।
তিন ভুবনের তিনবিঘা জমি তার
কাঁকুরে মাটিতে পুড়ে ফসলের মোহ
মাথায় আকাশ ছুঁয়েছে শ্রীলঙ্কার
তাকে কি মানায় অন্নের বিদ্রোহ ?
লেখার টেবিলে অক্ষর সারি সারি
গোধূলির ফ্রেমে নীলিমা শাসন দম
কুয়োতলি মেঘে তুমি দূর দেশে পাড়ি
উদাসীন চোখে
রাজকীয় বিভ্রম ।
রাত বাড়ছে
শীত নামছে রোদ চশমায়
কী রোমাঞ্চ আহা তৃপ্তি !
চেনা পথঘাট তবু
বদলায়
নেই উজ্জ্বল সেই দীপ্তি ।
রাত বাড়ছে
কাঁথাকম্বল
যেন গর্তেই
সাপ বিশ্রাম
চোপ প্রতিবাদ
কথা কম বল
হর সন্ধ্যায় পেটে দিস রাম
জাদু চশমায় কি যে দেখছিস
সব মায়াময় অতিভৌতিক
কারা হাঁটছে
হাত নিশপিশ
রাত নির্জন ঘড়ি টিক টিক ।
রাত্রির জানলা
জানলা ডিঙিয়ে আকাশের ভাষা
পড়ি
বিহ্বল চোখে নীরব আলোর
স্নান
জ্যোৎস্না ডিঙিয়ে কথার
বিচ্ছুরণ
রাত্রি সাঁতরে শব্দেরা
বহমান ।
নীরবতা ছুঁয়ে ভাসতে ভাসতে
এসে
চেতনার স্তরে মুছে দেয়
ধুলোবালি
শূন্যের দিকে চেয়ে থাকে
দুটি চোখ
সকলই মিথ্যে কুৎসা বা
হাততালি ।