আশরাফুল মোসাদ্দেক
অবহেলায়
উত্তুরে শহর থেকে ভেসে আসে হাওয়ার বর্ণমালা
রচনা করবে এক ক্ষুদ্রবার্তা
যা লেখা হয়নি আজো বিশেষ একজনকে
এ শহরেই ও থাকে— থাকে নাকি
হাওয়ায় হাওয়ায় হাওয়াই যোগাযোগ
বিভ্রান্তির ফেঁসো ঢোকে নাসিকায়
বিশ্বাসের বৃক্ষ থেকে পাতা ঝরে
কাঠপোকার গুঞ্জন ভেসে আসে
দ্বিধার পেয়ালা উপচে পড়ে অবিশ্বাস
উত্তুরে হাওয়ার ভেসে আসা বর্ণমালা
রচনা করতে পারে না ম্যাসেজ
উড্ডীন রক্তিম সময় ভয়ঙ্কর নির্মম
সময় পেরিয়ে গেলে বিশেষজন হয়ে যায় অন্যরকম জন্তু
চেনা অবয়বে অচেনা তাম্রলিপি
চাবি দেয়া এক প্রভুর পুতুল
অবহেলায় থাকা লোহায় লেগেছে মরিচা
বিজন রাসায়নিক কারুকাজ
কখনো ফিরবে কোনোদিন যেমন ছিলামে
পায়রা নদী, অক্সকমিস এবং মানুষ
আপাদমস্তক বেদনা পরিবহনে ক্লান্ত পায়রা নদী, অক্সকমিস এবং মানুষ— সুবিশাল শূন্যতাকে
কোলে নিয়ে পার করে মানুষ এবং মালসামানা।
উশখুশ ডানহাতের কবজি যেনো পেয়ে গেছে শৈশবের সেই
দা— এবার বৃক্ষের কিছু কচি ডালপালা এবং চুতরাগাছ হতে পারে নিধন! আকাশিনীল এর সাথে
গলাগলি কিছুটা গোলাপিমেরুন। দীর্ঘ যাত্রার পর অমায়িক নুডুলসের সাথে প্রশান্ত
চিকেনের কুড়মুড়ে ফ্রাই। আহা তার পরিবর্তে এই ঠোঁট যদি তুলে নিতো নিশিন্দারসের
সাতটি পেয়ালা।
মাকড়শা-সুতোর মতো অবিরাম যন্ত্রণা বুনন করে
পিরান। শীতবৃক্ষের মতো হরদম পাল্টে যায় বাকল। ঘর থেকে কোনো এক গৃহহীন পতিত পাহাড়ে
বসে থাকা। এবার কি অভিগমনের কাঠি
সাইকেলের রিং ঘুরিয়ে থেমে যাবো কোনো বুকে।
ডাউনলোড মন কিছুতেই বের হতে চায় না ফোল্ডার থেকে— ঘুপচিতে লুকোনো
লেবেন্টিস। পায়রা নদীর ঘোলা জলে এরোবিকনৃত্যরত ইলিশের ঘুঙুর— মনে পড়ে প্রিয়মুখ, নীল উপচানো কালো টিপ
এবং মানুষ— মানুষের ভীরে লুকোনো এক মানুষ।
অপরাহ্ন ও তন্দ্রাতুর ছায়া কোলাকুলি করে বিদায়ের
সিঁড়িতে। হায় নদীতে কে লুকিয়ে রেখেছে এমন গোপন জাল!
মানুষ
কাগজের মতো মানুষে লিখতে থাকো
মস্তকের চুল থেকে শুরু এবং শুরুর থাকে গন্তব্য
পায়ের আঙুলে সমাপ্তি— গন্তব্যের পরেও থাকে
পথ
এভাবেই মিলে কাগজের দৈর্ঘ্য বা উচ্চতা
কমবেশি একশত আঁকাবাঁকা দেহরেখা।
মানুষের গন্তব্য আকাশ, ভাঁজকরা টুপি— অর্ধচাঁদ
শিশিরের শয্যায় ঘুমন্ত জ্যোৎস্না কিশোরী
লক্ষীপ্যাঁচার মতো ভেংচি কাটা নক্ষত্রের
পোস্টম্যান।
জন্মনাড়ি থেকে বিচ্ছন্ন হলেই হাতছানি দেয় পথ
হাওয়াইমিঠাই নুনমিঠাই অথবা কাঠবিস্কুট।
কাটা ঘুড়ির পিছু অপরাহ্নের দৌড়ঝাঁপ
একদা মনে হবে ওটাই গন্তব্য চূড়ান্ত
সময়ের সাথে পাল্লা দেয় উচ্চতার ঘোড়া।
এভারেস্টে পতাকা উড়লেই শুরু হয় অবরোহণ
পাল তোলা অসীম আকাঙ্ক্ষায় সসীম ডিঙ্গির গলুই
অভিমানী বালিকা থকে দূরে সরে যায় ভাতের থালা।
একটি মানুষ হলো কাগজে লেখা একশত লাইন
সূচনা দিয়ে শুরু অথচ যার নেই কোনো উপসংহার।
সভ্যতার রথে
হীরে দিয়ে টুকরো টুকরো করেছো কাঁচ— সবাই তাই করে
ভ্যানওয়ালাও দা দিয়ে টুকরো টুকরো করে
মিষ্টিকুমড়ো
দু’টো লাঙ্গলের পর একটি মই দিয়ে প্রস্তুত
আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো তেড়ে আসে বোমা
অনন্তের বাসে বাদুড়ঝোলা যাত্রীর মনের পকেটে হাত
দিয়ে
সন্তর্পনে ছিনতাই করে নেয় হৃৎপিণ্ড
যেনো তেনো ভাবে হোক আকাঙ্ক্ষার বাগানে ফোটাতে
গিয়ে ফুল
সবাই যা করে তুমিও তাই করেছো জীবনের প্রয়োজনে
ম্যাসেঞ্জার-ভাইবার-ইমোতে রাত ১২-২৩ মিনিটে
কিংবা ভোর ০৪-৫৫ মিনিটে ফুল তুলিতে যাও
বকুল গোলাপ টগর বা যুঁই
সপুষ্পক উদ্ভিদের প্রতীক্ষার বাতি নিভে গেলে
মালাবদল পর্বে পরাগায়ণ
পাথরে আজ আর কোনো যুগল ছায়া ফোটে নেই
পৃথিবীতে কোনোদিন কেউ আর কারো হাত ছুঁয়ে বলবে
নাঃ ভালোবাসি
অসভ্য মানুষ প্রবেশ করেছে আজ সভ্যতার রথে
হাইকু
কেটে ফেলেছো
ঐক্ষিক সম্পর্কটি
তীক্ষ্ণ ছুরিতে