নুরুন্নাহার শিরীন
আকাশভরা মেঘ জেগেছে
এক।।
অনেকটা অভিমানী গুমোটের পরে
দগ্ধ পদচিহ্নগুলো ভিজলো হঠাৎ করে !
যেরকম ছমছমে সময়ের চাপ খুলে
প্রেমান্ধ জ্যোৎস্নারাত ঝলমলে !
তখন দেখেছিলাম পুড়ে যাওয়া হাওয়া এসে
রূপালি জলের পাশে ঢলে পড়ে হেসে !
তখন বুঝেছিলাম এইভাবে এইদেশে
শ্রাবণের নিমন্ত্রণ আসে অবশেষে !
দুই।।
অবশেষে আমাদের তাপিত দিনের ঘোরে
যা কিছু কবিতাময় বাতাসের রঙে ওড়ে ...
তাহার জলীয় ভাষা প্রেমিক শ্রাবণজলে
ঝরোঝরো বরিষণে জ্বলে !
অন্যদিকে অন্তহীন আগুনিয়া আঁচে
হৃদয় পুড়িয়ে কেউ মৃতপ্রায় বাঁচে !
এই যে এমন করে দিন ভেসে যায় ...
তাহাতে কাহার তরে প্রাণমন ধায় !
তিন।।
তাহারে বলেছিলাম চলো যমুনায় যাই ...
বলেছিলাম যমুনায় চলো দুচোখ ভাসাই।
যে নৌকো পৌঁছুতে চায় সুদূরের ঘাটে ...
আমি কী তাহারে পাই ধূলিবালিকার হাটে !
আমার দেখার আগে আকাশমনির সনে -
চুপিসারে প্রেম ঘটে চন্দ্রমল্লিকার বনে !
বরষা নামার পরে যত মেঘ ছিলো মনে -
তুমুলধূমল তারা তাতানো ঘুমের ক্ষণে।
চার।।
চারপাশের হতাশ মুখচ্ছবি বৃষ্টিমুগ্ধ হলে -
মুগ্ধতায় আমিও ভাসি শত কোলাহলে।
ঘুমহীন জলহীন আমাদের কতকাল -
গেছে সেতো জানে মহাকাল।
আজ যে এসেছে এমনও ঘনঘোর দিন ...
আজ শুধু রিমঝিম গান শুনিবার দিন ...
কাল কী হবে হিসেব রাখবোনা বলে -
কাল কে ভাসাই চলো বেহিসাবি জলে।
পাঁচ।।
যদি না জীবন এত এষণারঙিন হতো তবে -
কী আর আমরা ভুলি বেদনাহত কে কবে !
কে কবে বরষা চেয়ে চলে গেছে অগ্নিদগ্ধ -
সে ছবি ভুলেছি তবু কিছু থাকে অশ্রুবদ্ধ !
বরষাবিধুর দিনে ছবিগুলো ভিজে যায় বলে -
আমাদেরও অশ্রুতলিপি ভেসে যায় কলরোলে।
তখনইতো পাঁজর কাঁদিয়ে মেঘলা দিন -
তখনইতো আকাশফাটা অঝোর বাদল দিন।
আষাঢ়। ১৪২৪ বঙ্গাব্দ।।