স্বপন কুমার দাস
ফুরিয়ে যাবার আগে
প্রত্যেক বুকের গহনে কোন জীবাশ্ব।
তার বিকিরণকে অস্বীকার করতেই
সভ্যতার পোষাক পরা।
সে কোন কালে কার কপোল বেয়ে
গড়িয়েছিল প্রথম অশ্রুর ধার
জীবনের পরিভাষা বদলেছিলো।
আজও সেইসব নিসঙ্গ জলাশয়ে
কোন কম্পন নেই।
সব কাহিনী চুঁয়ে চুঁয়ে জমা আছে
পৃথিবীর গর্ভস্থ গভীরে,
সিলিকনের কনায়।
এখন বুঝি কেন
দাবানলের আগুনে ঝলসে
অঙ্গার হয়েছে আমার ইচ্ছেগুলো।
ফুরিয়ে যাবার আগে
এই সতেজ যৌবন..রক্তোচ্ছাস..
এসো নিঃশেষ করি।
অর্কিডের ভাবনা
গলি থেকে রাজপথ
মিছিলে মিছিলে অবরুদ্ধ।
অথচ আমি কবিতার সঙ্গেই হাঁটতে চাই।
সব ব্যালকনিতে পরাশ্রয়ী পরজীবি অর্কিডেরা
যাদের পাতায় উজলা আকাশের উচ্ছিষ্ট আলো।
সে আলো মেখে আমার রাত্রি কাটে
বিনিদ্র রাতের বিধান মেনে।
রঙ্গমঞ্চের গ্রীনরুমে
তৈরী আছে
চরিত্র এবং সংলাপ।
এবার শরীরের সব কটি ঠিকানায়
আঘাতের আস্ফালনে এগিয়ে আসবে
"শেষ সামুরাই"।
হয়ত দু একটা শব্দ যারা টুকরো হয়নি
কোনদিন ঘাম ও রক্তে ভিজে
আবার অংকুরোদগম
গাছপালার ইতিহাস।
সোনার সংসার
না কারোর কথাই শোনেন নি
আমার বাবা সোজা পথেই হেঁটে গেলেন
সারাটাজীবন..
সমান্তরাল রেললাইনের পাশাপাশি।
মাঝেমাঝে মায়ের ফুল কাটা রুমালে
মাইনাস পাওয়ারের চশমাটা মুছে নিতেন
এইটুকু বিলাসিতা।
একদিন সব পথ শেষ হয়ে গেল
কোন সমুদ্র উপকূলবর্তী স্টেশনে।
ফিরবার সময় নেই।
সায়াহ্ন।
সামনে সাগরের গর্জন।
বলে গেলেন সোনার সংসার রেখে গেলাম।
অনুষ্টুপ ছন্দ
অনুষ্টুপ ছন্দে নিবিড় হয়ে
সমান্তরাল দুটো উত্তরীয় দুলছে
ফাগুনের ফেরারী হাওয়ায়।
সংপৃক্ত দ্রবনে আরো কিছু ইচ্ছে মিলিয়ে দিলে
অধঃক্ষেপন স্বাভাবিক।
জটিল কোন প্রেমকাহিনী দেখলে
হাততালি দিয়ে উঠে
মাল্টিপ্লেক্সের দর্শক।
নিস্প্রদীপের মহড়া আজকাল মনের গহনে।
চোখ বন্ধ থাকলেই অন্ধকারে মরুঝড়
সেখানে সবাই মুখ ঢেকে মরূদ্যান খোঁজে।
হাইওয়ে থেকে যেখানে গ্রামের দিকে পথ দ্বিখন্ডিত
হয়েছে
সেখানে একটু
অন্যরকম হাওয়া
হয়ত বেঁচে থাকার অনেকটা কাছাকাছি।
রামেশ্বরম ২০১৭
সমুদ্রস্নানের পর ভেজা বালির পাওটা হেঁটে চলে
গেছে আস্থার প্রতিষ্ঠানের দিকে।
পূণ্যলোভীর মিছিলে নিজেকে হারিয়ে বার বার খূঁজে
বের করা....
ন হন্যতে….
দিনের শেষে সাগরের ঘোলা জলে পাপ পূণ্যের ঘনত্ব
বাড়ে।
আমি একা আদুল মনে ক্লান্ত দেশের সূর্যাস্ত দেখি।
শান্ত কোলাহলে আকাশ ভরা তারাদের হাতছানি।
কে কার ঈশ্বর...
সেতুবন্ধনের সময় এখন।