অনিন্দিতা গাঙ্গুলী
আগুন
তোমাকে ছুঁয়েছি বলেই
আমার আজন্ম সন্ধান বৃথা যায়নি।
তোমাকে ছুঁয়েছি বলেই
আমার আবর্জনা আহুতি হয়েছে।
তোমাকে ছুঁয়েই আজ
বুকভরা লেলিহান হুতাশ জেগেছে।
তোমাকে ছুঁয়েই আজ
সপ্তপাদ মস্তকে পরম মিলেছে।
স্টেশন
এক চুমুকেই শেষ করে ফেলা
পেয়ালায় রাখা ভোর।
তারপরেতেই পড়ে থাকা কিছু
টুকিটাকি কথা তোর।
কেমন আছিস? আমিও ভালোই...
একলা স্টেশন ফাঁকা।
ট্রেন চলে গেছে রাত দুপুরেই
নিদ্রাবিহীন একা।
রেল লাইনের ঝিকিমিকি জল
বৃষ্টির বড় দায়।
ভিজিয়ে চলেছে একলা একাই,
সে যাক যে যেতে চায়।
চশমার কাঁচে লেগে থাকা জল
বর্ষার নয়? ঠিক?
নিঝুম দুপুর বর্ষা মেদুর
দুঃখ এ সাময়িক।
সকাল ১
সুগন্ধি রোদের সাথে রয়ে গেছে ফুলেদের ঢেউ।
আজও কেন জানলায় নিঃসঙ্গতা ছোঁয়নি পাখিরা !
যে আলোয় বেগুনী রঙে বসে থাকে চিরচেনা কেউ,
সে জানে প্রথম দিনে মরণ কে ডাকেনি মাঝিরা।
জীবন বহতা নদী যার প্রতি বিন্ধুতে আলো,
যে দেখেনি মেদুরতা বিষাদকে বাসেনি সে ভালো।
সকাল ২
আজও যদি রোদ পিছু রবিকর গুণে দিতে হয়
তবে আর অকারণ কেন এই ব্যর্থদিন গোনা।
যে আলোয় রাতের ক্লান্তি কিম্বা তার নির্ভারতা
ঘোচে,
তারও কি নিজস্ব কিছু পথশ্রম আছে? নেই জানা।
আলোকে অগাধ বেসে ভালো তবু রাতকেই খুঁজি,
আমার প্রাণের গতি শুধু এক রাত্রিই বোঝে।
সকাল ৩
সমুদ্র মাছের গন্ধ জাহাজ মাস্তুলে মেখে নিয়ে
অভিজ্ঞ নাবিক এক নামিয়েছে হৃদয়ে নোঙর।
তারাফোটা রাত্তিরে বুক চিরে এগিয়েছে পথ
কখনও চলার গতি থামেনি তীরের কাছে গিয়ে।
আরও দূর ঘননীল চেতনার দুস্প্রাপ্য ভূমি
স্পর্শ হবে জেনে তাই নিশ্চিন্ত দিনেতে নেমে যাই।