শীলা বিশ্বাস
জাদুবাস্তবতা
শহরের প্রাণকেন্দ্রে লাল বাড়ি, কাজের দিনে আমার ঠিকানা
কাঠের সিঁড়িতে পা রাখতেই বাতাসে অতীতের ঘ্রান
হেঁটে যান লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ও তার সভাসদগন
আস্তাবল থেকে ভেসে আসে হ্রেষা , বৃংহণ
তিনতলার জানলায় একটা ছাতিমগাছের মুখোমুখি আমি
ছাতিমফুলের গন্ধে বাড়িটাই একখণ্ড ছাতিমতলা হয়ে যায়
রবি আর হেস্টিংস
হেঁটে যান সেন্ট জোন্স গির্জার দিকে
গির্জায় ঘন্টায় সময় থমকে যায়, মন জাদুবাস্তবতায় ।।
আতসকাচের নীচে
প্রত্ন ডায়েরীর ধূলো ঝেরে শুরু হয়
আতস কাচের চিরুনী তল্লাশি
সূর্যের আলো লেগেও আনন্দপঙক্তিগুলি
কিরকম নিস্প্রভ নিঃসঙ্গ
হলুদ দুঃখপঙক্তিগুলি কাচের নীচে
আশ্চর্যরকমের বড় হয়ে যায়
তীক্ষ্ণ আলোকরশ্মিতে ভালোবাসার উচ্চরণগুলি
প্রথমে নিজে জ্বলে তারপর ডায়েরীটা ,
তারপর ক্রমশ জ্বলে যাই সমগ্র আমি ।
জানে
আমার বিছানা বালিশ সব জানে
কবে আমরা মুখোমুখি কবে উল্টোদিক
লুকিয়ে কখন কাঁদি কখন ভাব জমেনি ঠিক
কবে আমরা এক হয়ে যাই কবে চীনের প্রাচীর
ছুঁয়ে থাকা
এও এক অশরীরী ভাষা
এও এক বিনির্মাণ
এও তো কিছু বলতে চাওয়া
অকারণ মেতে ওঠা
তুমি যখন কাছে আসার
উপায় বলো
আমি তোমায় হান্ড্রেড মাইলস
গান শোনাই
তুমি যখন তারাপদ রায়ের
‘এক জন্ম’ বলো
আমি তখন এক থোকা
প্লেটোনিক ভাবনা ছুঁড়ে দিই
এইভাবে সম্পর্কের ত্বরন মন্দন
সংঘর্ষে সংঘাতে
বেড়ে যায়
নৈকট্যের নিবিড়তা
কাছে এসে যাচ্ছি
রোজ রোজ
একটু একটু করে
তোমার কাছে এসে যাচ্ছি
যখন তোমায় ছোঁব বলে
হাত বাড়াই
দেখি তোমায় ছুঁয়ে আছে
সহস্র হাত
তুমিও কি কাউকে ছুঁয়ে নেই ?
মোমঘর
নিষ্প্রদীপ ঘরে একলা মন
অযাচিত কিছু আনন্দ
বেঁধে রাখে মোমঘর
প্রশ্নের ঢিল চাক ভাঙে
শ্বেতপত্রে লেখা এপিটাফ
ছায়া হারায় অন্ধকারে
বেদনার বিনীদ্র ঝরোকায়
প্রাসঙ্গিকতা খোঁজে
জীবনের ।