তৈমুর খান
স্বচ্ছন্দ
_________
পড়শির বিকেল ওড়ে সন্ধ্যার মুখে
ছদ্ম
ও ছন্ন দিন কেটে যায়
আমলকী বনে পাখি ডেকে ওঠে
নীল সরবত কার
? জলাশয় মাখামাখি
সাঁতারের বেগে ডুবে যায় সন্ধ্যার হাঁস।
মেরুন রঙের ফ্রকে আমার বালিকা বধূ
শাঁখ বাজায় । তার খালি পায়ে চুমু ঝরে —
চুমুতে চুমুতে সন্ধ্যা হয়
এখানেই আরোগ্য আমার
এখানেই ঘুমোনোর স্বাধীনতা আছে
শ্রাবণকুমারী
___________
আমাদের একফালি ছাদেই আকাশ নেমে আসে
শ্রাবণের কুমারী আকাশ —
তার অদৃশ্য নূপুরশব্দে জেগে থাকি সারারাত
আজ মন যদি ভিজতে চায়
ওকে ভিজিয়ে নেবো —
ফুলের গন্ধের মতো ফুটুক হৃদয়...
তৃষ্ণা
_________
কলসি নিয়ে বুকের কাছে দাঁড়িয়ে থাকো
কলসিতে জল রমণভাষা তারও বুঝি
বহুদিন তো গৃহছাড়া, এখনও কই
কেউ ডাকে না । ফাগুন মাসের আগুন
পেরোই । হাঁটুভর্তি নদীও কাঁদে —
দু'কূল বেয়ে কখন ছাপায় ?
সেই অনুরাগ দেখব এখন কলসি নামাও
তৃষ্ণার জল বইতে থাকুক মগ্ন ধারায়
শিরায় শিরায় ফাগুন ডাকে
তোমার জলে নিষিদ্ধ স্নান
তৃষ্ণা নিয়ে জেগে আছি
রাস্তা দাও পৌঁছে যাই
বিবাহ
_________
ঘরে ঘরে বেজে উঠছে শাঁখ
শ্রাবণ সন্ধ্যায় আমার বিবাহ হল
মেঘকুমারীর সাথে
জলে জলে সঙ্গম ছয়লাপ
চারিদিকে শব্দ ছড়িয়ে যায়
সন্ধ্যামাখা শব্দের আলোতে
মেঘের সংলাপ ঝরে বৃষ্টির ফোঁটায়
আমাকে ভেজাতে আসে মেঘকুমারীরা
অবলীলা এখানে পড়ে থাকে
জাগরণে ঘুমের বাতাস বয়ে যায়
শ্রাবণবিছানা জুড়ে জলীয় বিলাস
আমাকেও উষ্ণ করে আসঙ্গ লিপ্সায়
আরশিনগরের পাখি
_____________________
আরশিনগরে কত চাঁদ ডুবে যায়
বাঁশি থেমে যায়
কত রাধা ফিরে যায় বাড়ি
কৃষ্ণের দেখা নেই , অথচ কথা ছিল
কত কথা থাকে
কথারা গাছ হয় অবশেষে
কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে পাতাদের উৎসর্গ করে
শ্রাবণের জলে ধুয়ে নেয় মুখ
আরশিনগরে মানুষ থাকে না ?
ভেসে বেড়ায় শুধু মানুষের ছায়া
ছায়ারা পাখির মতো
খুঁটে খুঁটে খায় মায়া....