কবিতাউৎসবের সম্পাদক মহাশয় হঠাৎই যেদিন ফোন করে বললেন, "এটাই শেষ সংখ্যা"। আমি প্রথমত একটু অবাক হলাম! বললাম, সেকি! কেন? বেশ তো চলছিল। উনি উনার অসুবিধার কথা বললেন। প্রিয়জনের বিয়োগ ব্যথার মতই আমার নাকের পাটা নিজের অজান্তেই চিনচিন করে উঠেছিল সেইদিন। সূচনার প্রথম দিন থেকেই যে উৎসবের সঙ্গে ছিল আমার কবিতার অন্তরঙ্গ সহবাস। সেখানেই সহসা বেজে উঠল বিদায়ের সুর। স্মৃতি কাতরতা জড়িয়ে ধরল আষ্টেপৃষ্ঠে। মনে পড়ে গেল সেই দিনগুলোর কথা। এই কবিতাউৎসবের কর্ণধার, প্রিয় সম্পাদক মানুষটি পরম আবদার নিয়ে লেখা চাইতেন। এত ভাল লাগত! ভুলে যাওয়া স্বভাব বলে বারবার তাগাদা দিতেন। অবাক হতাম! আমি ভুললে উনার কি? সম্পাদক তো অনেক আছেন বিভিন্ন পত্র পত্রিকার। কিন্তু এমন ভালবেসে অন্য কবির লেখাকে সন্তান স্নেহে সমাদর কদর করতে দেখেছি খুব কম, হাতেগোনা। লেখা পাঠালেই যে ছাপা হত তা নয়। চলত চুলচেরা বিশ্লেষণ! যতটা পারা যায় নিখুঁত লেখাটি বের করে নিতে চাইতেন। সেই লেখা আরো আরো কবিদের সঙ্গে মিলেমিশে মনের মধ্যে উৎসবের আমেজ এনে দিত। বিষয় ভিত্তিক নির্বাচিত লেখাগুলো ছাপার অক্ষরে জ্বলজ্বল করে উঠত! সহজ কথায় বলি, কবিতাউৎসব সম্পাদক মহাশয়ের একান্ত প্রচেষ্টার ফসল। একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। যেখানে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নাম না জানা কবিদের তিনি প্রচারের আলোয় এনে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রিয় সম্পাদক মহাশয়, আপনি আমাকে ঋদ্ধ করেছেন। আপনার কাছে ঋণী হয়ে থাকলাম আজীবন।