বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭

মন্দিরা ঘোষ



মন্দিরা ঘোষ

পাখি

পাখি তোমার ক্লান্ত চোখে আকাশ নামাও
তোমার ঠোঁটে  পলাশ রঙা আগুন উড়ান
ডানার নিচে আদররাতের মোমবাতি সব
পালক জ্বেলে গভীর রাতে কুসুম ফোটাও

তোমার নরম বুকের ভিতর সুখের আলো
ভীষণ  জ্বরে তোমার কোলে জুড়িয়ে থাকি
তোমার যেন মায়ের মতন মুক্তো আঁচল
সকাল সন্ধ্যে তোমার ছায়ায় বিষাদ পাতি






নিমন্ত্রণ

এখনো তো নদীর বুকে
     সন্ধ্যাতারার রান্নাবাটি
এখনো তো হাতের মুঠোয়
      লাজুক চোখের মুগ্ধ চাঁপা
এখনো তো নাভির নিচে
    জলফড়িংয়ের মুদ্রালিপি
রাত্রি হলেই জ্বরের ওপর 
      উষ্ণ হাতের জলপটিসুখ
হাত বাড়ালে কুয়াশামেঘ
    থৈ হারানো মাথার বালিশ
থাক না চাপা স্পষ্টকথার
         ইচ্ছেঘুড়ির কাঁচ বৃষ্টি
না হয় এবার অন্ধকারের
        ভোকাট্টা প্রেমিক হবি






অযোনিসম্ভূত

নিকোন উঠোন কাঁঠাল গাছের
শান্ত ছায়া আর জলপিঁড়ি 
তোমার অপেক্ষা নিয়ে বসে
পাকা আমনের গন্ধ আর
সর্ষেফুল রোদে
ভরে আছে ফসলি বাথান
ফুলপাতা আঁকা দেওয়ালে
তালপাতার পাখাটি  রাখা
কুলুঙ্গিতে প্রদীপটি প্রহরীর মত
রাত নামলে জোনাকিরা
ঘুরে ঘুরে স্বরলিপি আঁকে
প্রেমজ বিন্যাসে
পরিপাটি  অপেক্ষায় চাঁদ নামে
ছায়াদের ভিড়ে
নবান্নের গন্ধের মত
নিবিড়  মায়ার আঘ্রাণে
ডুবে যায় অযোনিসম্ভূতা






অদৃশ্যতায়

দুটি হাত ছুঁয়ে থাকে
বায়বীয় অস্তিত্বগুলি
স্তব্ধতার ভেতর
হেঁটে যায়
দ্বৈততার অশরীরী
গভীর রাতের স্পর্শগুলি
অদৃশ্য দাবানলের
অলৌকিক ছারখারে
শুধুই দৃশ্যতা নামে






হলুদ  দুপুর

চমৎকার সব শান্ত স্তব্ধতা নামে
ঝরাপাতার কোমল সুরে
চৈত্রের হাওয়ায় এলোমেলো  মন
বকুলের গন্ধ মাখি জীবনভর
তুমি কখনো অসময় জানোনা
পালকের মত নরম তোমার হাত
শ্রমণ হয়ে ছুঁয়ে থাক ঘুমহীনতায়
অনেক লজ্জাদুপুর আর
,নষ্ট জোনাকিরাত জড়ো করেছি
ক্ষয়াটে ঘেরাটোপ  সরিয়ে
একটু নামো এবার
আমি দাঁড়িয়ে আছি বহুকাল
ঘাটের শেষ সিঁড়িভাঙ্গা অংকের
দরজায়