ঈশানী ব্যানার্জী
যদি জানতে চাও আমায়
যদি জানতে চাও তুমি
আমার এ মনকথা
বলব তোমার কানে কানে।
যদি বুঝতে চাও তুমি
আমার এ ব্যথাখানি
বলব তোমায় মনে মনে।
যদি শুনতে চাও তুমি
আমার এ গানখানি
গাইব তোমার প্রাণে প্রাণে।
যদি বাহিতে চাও তুমি
আমার এ তরীখানি
বাহিও তোমারই কুলে কুলে।
যদি গাঁথতে চাও তুমি
আমার এ মালাখানি
গেঁথো তোমারই ফুলে ফুলে।।
অভিমান
আমার নীল আকাশের মনের কোনে
মেঘ জমেছে কালো,
ছড়িয়ে গেল সে মেঘখানি
বিজন
আকাশ জুড়ে
ঢেকে দিল আলো।
অভিমানের বার্তাগুলো বজ্র হয়ে
বুক
চিরে দেয় মেঘের,
আমি কেবল ঝড় হয়ে সেই
বার্তা
আনি প্রেমের
অন্ধ মনের সন্দেহ সব ঘূর্নি হয়ে ওঠে
আশ্বিনে ঝড় হাওয়া আনে রাগের।
দমকা হাওয়া, ওলট পালট
ভেঙে চুরে
বেশ
এবার তবে এই জগতের
সব কিছুরই
শেষ।
বেশ কিছুক্ষণ এমনি করেই
চলল যে তার
রেশ,
অবশেষে স্তব্ধ হল
ক্ষান্ত হল
ঝড়;
মনের কোনের সব অভিমান
বৃষ্টি হয়ে
শেষে
কান্না হয়ে পড়ল ঝরে
মাঠ
পুকুরের দেশে।
আমি তখন ঠান্ডা বাতাস
বয়ে নিয়ে
গিয়ে
নীল আকাশের মনে, চোখে,
সারা শরীর
জুড়ে
ভালবাসার পরশ লাগাই
আমার এ
প্রেম দিয়ে।।
নারী
এখনও তোমায় প্রমাণ দিতে হয় তোমার সতীত্বের
এখনও তুমি তৈরী হতে পারনি পথ ধরতে প্রতিবাদের।
এখনও তোমায় সইতে হয় চরম অপমান আর গঞ্জনা
এখনও তোমায় বইতে হয় প্রতিনিয়ত তীব্র বঞ্চণা।
তোমার মুখে এখনও জোটে না ভাল প্রোটিন যুক্ত খাবার
বেশি ভালটাই খাবে ছেলেটাই হবে না প্রতিবাদ আবার।
তোমার শরীরে হিমোগ্লোবিন আর ক্যালসিয়ামের অভাব
তুমি রোগগ্রস্ত! তুমি অপারগ! তোমায় দিলাম জবাব।
তোমার জীবনে, তোমার নিয়মে 'নেই'
গুলো আছে বেঁচে
তুমি নারী তাই তোমার ভাগ্যে দুঃখ এগিয়ে আসে যেচে।।
নিষ্কাম
গ্রীষ্ম যদি আসে
আমার তপ্ত দেহে
বর্ষা যদি আসে
আমার দু'চোখ বেয়ে,
শীত হয়ে তুই
দিবি আমায় শান্ত করে
বসন্তেরই হাওয়ায়
দিবি মনটা ভরে।
শরৎ হয়ে শিউলি
দিয়ে দিবি ঢেকে
হেমন্তেরই শিশির
ছোঁয়া দিবি এঁকে।
তপ্ত সে ছাই
দিবি ঢেলে গঙ্গা কোলে
দিবি সবই নিজের
হাতে আপন বোলে।
দিবি কি তুই
একটু বাতাস,
ভোরের আলো?
নিবি কি তুই
ভোরের আবির সূর্য হতে?
ঢেলে দিবি আবির
সে তুই আমার ভালে
চাই যে সবই তোরই
কাছে,
যাবার কালে।
পারলে দিবি, একটু ভালবাসার মালা
শেষ সময়ে, মুখে আগুন,
শ্মশান তলে।।
কবিতার অসুখ করেছে!
কবিতার অসুখ করেছে
তাই,হারিয়েছে কাব্য মাঝে,
কবির কলম শূন্য হয়েছে
ভস্ম লাগে না কাজে।
কালিমালিপ্ত আঁখি দুটি তার
যেন,প্রদীপের তলায় ঘোর অন্ধকার,
কবির বুকে বেদনার ছায়া
ঘুরে আসে বারে বারে ।
কবি হতে শত যোজন দুরে
ঘোরে ফেরে একলা অন্ধকারে
কভু, কবিতা ধরে না কায়া
সবই মায়া, সবই মায়া, সবই মায়া।।