দেলোয়ার হোসেন
শিকল
পা বাড়াতে পারিনা
পায়ের নীচের মাটি খন্ডিত
শুধু মাথার উপরে আকাশ।
কে আমার পায়ে পরিয়েছে শিকল?
পাখির পালক ছেঁটে স্বপ্ন ভেঙ্গে লাভ কি কিছু হলো?
মাথার উপরে অনেক আকাশ।
মনের সাথে পা মেলেনা
পায়ের তবু সীমা আছে
মাথার উপরে মনের আকাশ।
মাটির ভিতর গন্ধপোকা
রাজার মতি প্রজার ক্ষতি নষ্ট সময় ভ্রষ্টনীতি
মাথার উপরে উদার আকাশ!
"একদা মানুষ ছিলো"
হাত হাতের কাছেই থাক
পা পায়ের কাছে।
কার্তিকের এই মায়াবী রাতে এসো মানুষের গল্প শূনাই!
হৃদয় কী এসেছো? এসেছো কী বিবেক?
শুধু এসেছো গতর? ক্ষতি নেই,
গতরের ওমেই জ্বর ঝেড়ে হাসুক নক্ষত্রের রাত।
কার্তিকের এই রাতে খড়-বিছালির গাঁদায় শুয়ে
ঘুঘরো, গোবরে পোকাদের মতো নরোম নরোম
স্বপ্নে ঘুমাই!
কোলাহল আর্ত চিৎকার
সভ্যতার কাঁসা ঝনঝন নির্লজ্ব পশু
দূরে থাক আপাতত! এসো শাদা শংখরাত এসো
হৃদয়ের কাছে এসে বসো, মানুষের
গল্প শুনাই!
একদা মানুষ ছি্লো ......
দেলোয়ার হোসেন
যাচ্ছে-তাই
জানালা খুলে রাখি আজকাল
দরজাও
কার্তিকের আধোহীম আধোশিশির ভেজা পায়ে
যদি কবিতার মতো কেউ আসে, এই
লোভে!
আমি একজন কবি ও ঈশ্বর নিয়ে রাত জাগি হেমন্তের নরম বিছানায়।
কবিতা কী ললিপপ বা শিশুর হাতের চকোলেট?
আমসত্বের প্যাকেটের মতো
কামসত্বের কঠিন চীবর সে নিরবে খোলে?
হাসি পায় এই সব মামুলি কথায়।
ভুলতে ভুলতে ভুলে যাই
আমি তো মানুষ!
কবি ও ঈশ্বর ভেবে যে ধ্বংস করে রাজার সাজানো বাগান!
মায়াবী শরীর
ধান ভানে মায়াবী শরীর
দপদপ-থপ-থপ উথাল-পাথাল ঢেঁকির হৃদয়
শীল ভাঙ্গে দানব হাতুর!
কান ভাঙ্গে- চোখ ভাঙ্গে
মায়াবী শরীর কায়া পায়
ঘর্মাক্ত পায়ের নাচনে সুর তোলে বেফাঁস নিঃশ্বাস;
দপদপ-থপ-থপ উথাল-পাথাল ভারানীর বুক
ঢেঁকির ফলায় নাচে অচেনা যৌবন!
ললিতা
অন্ধকারে
আড়ালে আবডালে
ওত পেতে আছে ফণিমনষার ঝোপ
ললিতা, অসময়ে ওপথে যেও না!
রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকানের পাশে
চিপা গলি, বাঁশঝাড়ের নীচে
উঠতি লাম্পট্যের রমরমা গাঁজন
ললিতা, ওঘাটে জল আনতে যেও না।
বাসে ট্রামে একলা চড়ো না
পার্কে মেলায় অবিশ্বাসী কোনো হাত ধরো না
ধানক্ষেতের আলপথে
রাজহংসীর মতো ছুটো না
নিতান্ত শখেরবসে আয়নার সামনেও দাঁড়িও না!
ললিতা, সময়টা খারাপ বড্ড
বড্ড খারাপ তোমার চারপাশ!
এই অসহিষ্ণু সময়ে ললিতা তোমার নামটা
বড় বেশী কড়ানাড়ে দুঃস্বপ্নের দরজায়!