বিভাবসু
দে
বিচ্ছেদ
শব্দহারা শকুনের মত উড়ে
বেড়াই ভাবের ভাগাড়ে
অনুভূতির শীতলতা নিভিয়ে
যায় রাত্রিস্বপ্ন মোর ,
কথাবালিকা আমলকিবনে মগ্ন
একাকী অভিসারে,
স্বপ্নপুরুষ তার, নিজের পিরামিড গড়ে
অকথিত মরুর
মৃত্যু-প্রান্তরে ;
ভাবের দেবতা শীতঘুমে
ডুবে যায়
অজানা বসন্ত দিনে |
চির বিরহ
হাড়ের খাঁচায় আকাশটাকে
বাঁধি
মেঘের ভেলা ঘনিয়ে আসে
চোখে ,
শিউলিবেলায় ঘাসের শিষে
ঝরি
কাশের বনের বাতাস কাঁদে
বুকে ,
একটি দুপুর তোমার জন্যে
রাখি
আঁধারবেলা তোমার আমার
মাঝে |
পাপ স্খালন
পিঠ জুড়ে আলকাতরার দাগ ,
সেলাইনে ভরা গঙ্গাজল ;
অতীতের রক্তচোষা বাদুড় ,
বিবেক-পোড়া বর্তমানের
পাংশু দেহ ;
রক্ত ঝরে নোনা-গঙ্গা
হয়ে ,
অতীত ভাসে জাতিস্মরের
চোখে |
নারায়ণী ক্রোমোজোম
পৃথিবীতে কিছু লোক থাকে,
আজব তারা,
অপার্থিব কিছু ক্রোমোজোম
কিলবিল করে বোধহয় ওদের
জৈবতন্ত্রে ;
বোকা নয় , দুর্বল নয় ,
তেজটাও নেহাত কম নয় ,
নীলকণ্ঠের ছায়া শুষে
জন্মায় ওরা,
সারাটা জীবন বিষ খেয়ে
যায়,
উগড়ায় না একফোঁটা ;
আঘাতে আঘাতে যারা বুকটা
ফালাফালা করে দিলে ,
তাদেরও ক্ষমা করে এরা
একনিমেষে ,
নারায়ণী অস্ত্রটা যেমন,
শিরায় শিরায় সৃষ্টিনাশা
ভৈরবী উল্লাস নিয়েও
ক্ষমা করে নিরস্ত্র
চিরশত্রুকে ;
সদ্য তপ্ত ঘামে নাওয়া
শত্রুশিবির
ফেটে পড়ে মত্ত তান্ডবে ,
তাকে ফাঁকি দেবার ফাঁকা
আনন্দে......
সেই নারায়ণী ক্রোমোজোমের
মানুষগুলো
শুধু নোনা-হাসি হেসে চলে
যায় বহুদূরে ,
সবার অগোচরে |
মুক্তি
আমার শরীরের শিরায় শিরায়
ঘাস গজিয়েছে ,
বুকের রক্তিম আর্তনাদের
পায়রা উড়ে গেছে খাঁচা ভেঙে ,
কলজে বিঁধে শিকড় ছড়িয়েছে
আমলকি গাছটা ;
ফুল ফুটেছে আমার চোখের
তারায় ,
অস্তবেলার সূর্য মিশেছে
এসে আমারই বুকের নিরালায় ,
আমার চর্বি প্রাণের রসদ
হয়ে ছুটেছে তোমার ধমনী বেয়ে ;
আমি অনেক দূরে আজ,
দাঁড়িয়ে আছি সোনালী জলের
পাড়-ভাঙা ঢেউয়ে |