সৌগত ঋভু চ্যাটার্জি
ছায়ার মহাভারত
মহাভারত পড়া হয়নি, অথচ পাশাতে দিব্যি হেরো,
বস্ত্রহরণ আরম্ভ, সমস্ত রক্ত মেদ মজ্জা নামিয়ে অজ্ঞাতবাস।
এরপরেই রথ নামবে গভীর
মাটিতে।
উরু ভাঙছে প্রতিদিন, প্রতিরাত যন্ত্রণার,
অথচ ইচ্ছে মৃত্যু
ভীষ্মের কবলে।
বোঝা যাচ্ছে বড়ই অসহ্য
চোখ বেঁধে গান্ধারি হলেও সামনে
শুক্রাণুর খোঁজে পান্ডুর
সাথি।
সত্য না বললেও পাঁচ
আসামির সাথে নিরন্তর দ্রৌপদি।
আঠারো দিন চিতা জ্বলছে, সব শেষের পরেও
অপেক্ষার কুরুক্ষেত্রে
আর একটিবার পাঞ্চজন্যে হাত রাখি।
আরেকটা ভাবনার মত
এখন রাগ হয়েছে ,বার’দুই
ভ্রুণে যমে দড়ি
টানাটানির পর স্বস্তি।
বাইরের শাল গাছের মত
প্রকান্ড গ্রীষ্ম ,
একটু করে নতুন পাতা মেঘ ,ফুল ফল বৃষ্টির
চু’কিতকিত। এরমাঝে পুরানো কথাবার্তা সব
কোনে কোনে। জমাটবদ্ধ
বাজে স্তুপ ,সরালেই
মশা মুক্ত পৃথিবী।
লাইনে আর পিছনে দাঁড়ানোর
মানসিকতা নেই,
সামনের পথে য়েতে য়েতে
হোঁচট লাগুক।
ঘুমের মধ্যে এখনও বিশ্রি
স্বপ্ন আসে।
দড়ি টানাটানির এই কালরাত
,পিছিয়ে, তাও
ক্ষোভ নেই, আমার পাশে ছাতা ধরবার একটা
হাত উপস্হিত।
তোমাদের জন্য
তোমরা সব এমনি ইঁট কাঠ
পাথর,
শুধু রক্ত নিয়ে সাপ সাপ লুডো লুডো।
নখ,দাঁত লুকিয়ে রাখছ, হাসি হাসি
রঙিন মলাট। তোমরা সব
এমনি ড্রেন,
নোংরা, রাস্তা খারাপ।লোকের কাছে ভালো
সাজবার হাজার মেলা।
তোমরা সব এমনি এমনি
মৃতদেহে
ফুল ছড়িয়ে আনন্দ পাও,
মাছি তাড়াও।
তোমরা কি সব নিজের শব
বইতে পারো?
তোমরা সব বেঁটে মানুষ, মিষ্টি কথায় মানুষ মারো।
দেশান্তরি
আবার বাক্স পেটি বাঁধা,
আবার বেঁধে ফেলা শেষ
সম্বলটুকু
ভ্যানে চেপে বাস্তভূমি
ছাড়া,
লুটিয়ে গড়াগড়ি ঘটপল্লব।
দেবতার থালা বাটি আবার
পোড়া গন্ধ
ঘরবাড়ি, ধুধু মরূভূমি।
আবার অদেখার ভান, না শোনার চাপা কারচুপি।
আবার নপুংসক কালি ও কলম
ফুরিয়ে যাওয়া সব মোমবাতি,
আবার শুরু লোকাচুরি খেলা,
ভোটব্যাঙ্ক, চাপা শব্দ।
সব চলছে চলবে যতদিন না
উল্টে পাল্টে যাচ্ছে দাবা?
কবিতা ৫
আরেকটা হিসাব
নিঃস্ব হবার পর যা কিছু
অবশিষ্ট
সবটাই তুল্যমূল্য। এরপর
ক্যাশবুক,
ডবল কলাম।
প্রতিটা দিনের ভাউচার
মিলিয়েও
হিসাব এখনও কয়েকগ্রাম
বাকির পথে।
শেষ পর্যন্ত সুযোগ এলে
দেখা হবে।
ফিরে গিয়ে জমিয়ে শ্বাস
নেওয়া,
এযাত্রায় আর অডিট নেই।