মিজান
ভূইয়া
দরজায় টোকা
তোমাদের শীতে আমি বেড়াতে
আসবো
আরো কিছু কুয়াশার কাল, আরো কিছু ঠাণ্ডা পাহাড়
সঙ্গে নেবো
দু'চোখে তাকাবো
বুকে জ্বলবে মোনালিসা
মুখ, দেয়ালের মতো উঠোন.....
হয়তো সন্ধ্যার আগুনে
পুড়বে গান, কিছু বিকেলের মতো পাখি
তবু তোমাদের শীতে এসে
দরজায় দেবো টোকা
বাতাসের বিদ্যুতে পাঁচটি
আঙুল উড়ে যাবে আকাশের দিকে
তখন খাম খুলে পড়ে নিও
ভোরের শিশির
পড়ে নিও পৌষের চাঁদ। মনে
রেখো, শীত শেষে
আমি কিন্তু নদী হয়ে
যাবো.....!
শিশিরের ভাস্কর্য
আশ্চর্য আওয়াজে সূচিত হয়
রোদঘেষা ধুলোচিন্তা
করুণার আলোতে আত্মগোপন
করে নগরের
বনকুকুর
সকল স্মৃতিরহস্য রেখে
সুতো-কাপড়ের আকাশে
জ্বলে আগুন
রঙধনুমনে অস্ত যায় নদীরা
অসংলগ্ন বাতাসে নতুনত্ব
আসে, মাঠের ছায়া অলংকৃত হয়
আবার সূর্য উঠে
এবং সাতচল্লিশ বছর ধরে
শিশিরের ভাস্কর্য দাঁড়ায়
ফসলের মাঠে.....!
আমিহীন চাঁদ
কালের মন্ত্র শিখে আমিও
উড়ে যাবো সাতটি সূর্যের
দেশে
কিছু গ্রহ চাষ করে
বেড়াবো আকাশে আকাশে
দু'চোখের নীড়ে প্রবাহিত বাতাসে রেখে যাবো দেহের সুগন্ধ আর
পৌষের শীত
নদীমৌনতায় মিশে মিশে
জীবনের বিকেলেরা থেকে যাবে
লালে ও নীলে
গাছের পাতারা উসকে দেবে
স্মৃতি, মাটির উঠোনে ঘুরবে শীতের কিছু
ঘ্রাণ
তুমি চোখ মেলে খুঁজবে
আমাকে, হৃদয় পুড়ে যাবে
পাখির অরণ্যে জ্বলবে
সোনালী আগুন.....
আমিহীন বয়ে যাবে পৃথিবীর
নদী
হয়তো নদীজলে হেঁটে যাবে
আমিহীন চাঁদ!
দুপুর বেলার শীত
সকালের চা টেবিলে এলে
জীবনের স্বপ্নগুলো
বাষ্পের মত উড়ে যায়
ধোঁয়ার উপর দাঁড়িয়ে থাকে
আমার পৃথিবী
জল পড়ে
বাথরুমে শব্দ হয়
সাবানফেনায় ছড়িয়ে পড়ে
সামুদ্রিক সব স্মৃতি!
পুরাতন প্রশ্ন নিয়ে
চোখের দেয়ালে বসে থাকে সময়
বাতাসে একাকীত্ব আঁকে
আঙুলের সিগারেট.....
তখন হাতের তোয়ালে দিয়ে
আকাশ মুছি আর
দু'পায়ে নেড়েচেড়ে দেখি স্যান্ডেলের রোদ
গায়ে বসলে রঙিন প্রজাপতি
সারা ঘরে শুরু হয় দুপুর
বেলার শীত।
কেউ একজন ছুঁয়ে থাকে
কত দূরে তুমি...
তবুও
প্রতি পৃষ্ঠার সন্ধ্যায়
যুক্ত হয় চাঁদ, হাজার মাইলের নদী
মৌনতা প্রকাশ করে
পাখিডানা, গাছপালা, মন্দির।
কয়েকটি কবরে থাকে শীত, হলুদ কিছু পাতা। ছুঁয়ে থাকি
বসন্ত।
চোখের গন্ধ ছড়ায় পুরনো
কোন বিকেল। ছায়া স্পর্শ পাই। তোমার
পায়ের আওয়াজ শুনি
কত দূরে তুমি...
তবুও
আমাকে বন্দী করে মাছের
জাল, মাটির উঠোন
আমাকে বন্দী করে সবুজ
ঘাস, জলের মুকুট!
ঋতু বদলায়
কেউ একজন ছুঁয়ে থাকে
কেউ একজন ছুঁয়ে থাকে
শিশিরের মতো।