ইন্দ্রাণী বিশ্বাস মণ্ডল
উড়তে
শেখা কোকিল
-----------------------
অকস্মাৎ বিষবাষ্পে ভরে উঠল
সুরেলা চাউনি
ভয়ে একাকী পাহাড়ে উঠতে চাইছে
পতন হবে জেনেও
বিশ্বাসকে বাদ দিয়ে বসিয়ে রাখে।
তোমার জন্য কিচ্ছুটি নয়
তবু কেমন লেপ্টে থাকে ঘাম
চটির মতই হৃদয় জুড়ে
থাকিস পড়ে।
ধূসর চোখে মেলছে ডানা
ইচ্ছেগুলো
শ্বাস নিবিয়ে রাত্রি নামে এলোমেলো।
ঠুংরি সুরে সাজিয়ে রাখা সান্ধ্যসভা
বিষসর্প, ধোঁয়া মায়া
ক্লিওপেট্রা।
স্বজনহারা দেশ পেরোনো মধ্যমেধা
খুঁজে চলে এমন ঝিনুক মুক্ত বোঝা।
--------------+------
লুকোনো পাথর
---------------------
সভ্যতা লুকোলো শরীরে
অসহ্য দাহ
পৃষ্ঠাগুলো কঙ্কাল হলো
তবু কথা রাখতে হবে বলে
ফেরি করে বিসমিল্লার সানাই।
সময়- ভূমিকম্প- গ্রহাণু
সবারই অস্তিত্বের সংকট
বিপর্যয় ঘটিয়ে সরব হয়
দরকার ছিল কী দ্রুতগামী হওয়ার?
ভোরে শিউলি তোলা কিশোরীর
আধভেজা গন্ধমাখা হাতে
তুলে দেওয়া হয় দায়িত্বের বারুদ।
খবর সংগ্রাহক জানেনা
খান্ডব বন ধ্বংসের জন্য
দুটি পাথর নিয়ে সময়
আজও বিরসা হয়।
--------------
বাসন্তী
শ্রাদ্ধবাসর
---------------------
ফাগুন থালা সাজিয়ে রাখি
টাটকা পলাশ
ও বাসি শীতে।
মন উদাসী ছদ্ম-বাউল
লালন সাজে দোতারাতে।
রক্তে ধোয়া পিচরাস্তা
মিথ্যে আশা
শিলান্যাসে।
আবির হাতে দাঁড়িয়ে আছি
গ্রহণ লাগে
মরা চাঁদে।
-------------
হলুদ
অনুপ্রাস
-------------------
তোমার উঠোনে পড়া
হলুদরঙা ভোর
অনেক পুরনো দিনের
হলদেটে চিঠি।
সবুজ ধানের ক্ষেতে
মধ্য শীতেও হলুদ মন
কাস্তে হাতে তুমি
ক্ষয়াটে হলুদ দৃষ্টি।
সোহাগ সমুদ্রতটে
সবুজে হলুদের খুনসুটি
অজানা এক ভিনদেশি জলে
তোমার হলুদ মনের প্রতিচ্ছবি।
দারুণ দহন দিনে আকাশ তখন
তোমারই সর্বাঙ্গ বেয়ে হলুদ ধারাস্রোত
হাঁটতে হাঁটতে অশান্ত বামিয়ান
যেখানে ক্ষত নিয়ে বসে আছে হলদেটে শান্তি।
তবু মেঘের মিনার দেখাবে বলে
চুপি চুপি আসে হলুদ গোধূলি
অনেক জোয়ার দেবে বলে অপেক্ষায় আছে হলুদ নদী।
--------------------------------
ভোরের
মাসি
--------
পরিযায়ী পাখি নয়; এরা অনন্ত......
ভোরের ট্রেনে পথ চলা শুরু
কাঁধে ব্যাগ, রংচটা শাড়ি
সেফটিপিন দিয়ে আটকানো
বাবুর বাড়ির চটি।
কখনো ঝুলে ---
কখনো পর পুরুষের বুকে লেপ্টে
ট্রেনের ধর্ষিত দৌড়।
শহরকে স্বাভাবিক রাখতে
এরাও বসন্ত হয়,
শুকনো ডালে পলাশ ফুল।
শহরের কিচেন থেকে
বেরোনো কালো ধোঁয়ায়
ওদের ভাতের থালায়
শিউলি ফোটে।