মোস্তফা নূর
দস্যু
============
দস্যু বেড়াল খুপরি খোঁজে
হাঁটে লাজুক নমিত চোখ
সবাই শুধু হারিয়ে বোঝে
সব শিকারী ভয়াল ভোখ।
রক্তে নখর রাঙিয়ে রাখে
নখ লুকিয়ে সমাজে রয়
দাঁতের ফাঁকে প্রমান থাকে
রাত্রে করে জীবন ক্ষয়।
শবযাত্রায় সাহেবজাদা
মাত্র কয়েক দেয় কদম
কালোর পরে প্রলেপ সাদা
ঢেকেই সাধু টানেন দম।
মুখরোচক পংক্তি বাঁধা
চিনতে তাকে দিচ্ছে কম।
ভালোবাসার
বন্ধন
=====================
ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হও কেন তবে
অস্থির হও ছিড়ে যেতে সকল আকর্ষি
হায়! অস্থিরতার সাথে ভালোবাসা চলেনা
অবিরাম ধ্বংসের হাক তুলে চলা উন্নাসিক
মিছে প্রাচুর্য তালাশে মশগুল, বুক ভাঙো
হৃদয়ের বন্ধন যদি কারাগার মনে হয়, তো
বেরিয়ে যেতে পারে ঘুমে রেখে
অনেক দূরে বহুদূরে হারাও ইচ্ছেমতো
অপেক্ষাকে সম্বল করা এক বিবাগী
ভালোবাসা মানে আস্থার সংকট দেখা
এখনি পরিস্থিতি হোক জীবীত সময়ে
দায় মেনে চলা ভুল সমূহ সরল হয়।
দাঁড়িয়ে
জ্বলছি প্রদীপ
======================
কপালে ভাঁজ জমিয়ে কষ্টের প্রকাশ করিনি
ঘোর দুঃখ বিপদের মাঝেও চঞ্চল থেকেছি
দুর্ভাগ্যকে সময় দেবার মতো স্থির ছিলামনা
বহু অভিজ্ঞান ফঁসকে গেছে লিখিনি কখনো
কলম বলছে লিখতে সুস্থিরতা চাই ভাবনায়
নিখুঁত নিরীক্ষণ ছাড়া সময়কে ধরা যায়না
পিচ্ছিল কালের গুটি গলিয়ে গেলো ক্রমাগত
সংকট এসেছে বেশ উপযাচকের গতি নিয়ে
বিস্তারিত হলে বুঝেছি সৃষ্টির চির অস্থিরতা
কপাল কুঁচকে দেখছি, বহুদূর দেখার সময়
সবিস্তারে আসে ওসব আগের মতোই দেখি
উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে চারপাশে ঘুরে হারায়
এখন ধরতে পারছি বুঝতে পারি আলোরেখা
আসার পথেই রয়েছি, দাঁড়িয়ে জ্বলছি প্রদীপ।
অভিশাপ
নয়
=====================
প্রিয় শব্দ সমূহ নিষিদ্ধ করেছো তুমি
দোষ করেছি ঢের উচ্চারণে ব্রতী হয়ে
শুধু মনে রেখো এভাবে চলেনা বিশেষ
কেউ আসবেন জনপদে বীর পদব্রজে
আহাজারীর সূত্রধরে নির্মমতার বিরুদ্ধে
সকল বিপ্লবী আমাদেরি ছিলেন জানো!
যখন অসহায় হয়েছে মানুষ এখানে বিশ্বময়
ঠিক তখনি তো আসমানী পয়গাম আসে
প্রিয়জন বেরিয়ে আসেন কুয়াশা ভেদে
দীর্ঘ সংকটে রেখে মানুষকে ভোলাতে চাও-
মানবতার ইতিহাস এবং বিশ্ব সমাজের কথা
কাছাকাছি বালির ঢিবি অন্ধকার চড়িয়ে
পুড়িয়ে উড়িয়ে কঙ্কাল অমরত্ব চাও!
বাতাস ভারী হয়ে ঝাপটে ধরবে তোমায়
অভিশাপ নয় অভিশপ্ত সময়ের শেষটা
এমনি হয়, এমন করেই থামে দানবীয়তা।
এ্যাপাচির
ছোবল
========================
সবুজ কঁচি পাটিপাতার বাগানে আগুন
ধুয়ার কুণ্ডলী পাকিয়ে লেলিহান খেদ
ধুয়াশায় সেঁকা বাষ্পের উত্তরণে অক্সিজেন থাকেনা
ফাগুন সূদুরে হারিয়ে গেছে কতকাল আগে
কত যুগ পরে এসেছো নন্দিনী এই পোড়া ভিটায়
তবুও এই কাগজ কলম সাক্ষী রেখে বলি-
সুতঃ হও পুতঃ হও, সাহসী মানবীর পথ হয়ে এসো
এখানে অসহায়ের কদর নেই মনে রেখো
সুন্দর হরণে ব্যস্ত জংলী সভ্যতায় ফিরছে মানুষ
রাস্তায় নামিয়ে রেখে যায় সব কিছু
শরাবপাত্র উল্টো করে নিঃশ্বাস নেয় বুদ্ধিজীবী
জিভ চাটে আবর্জনা ঘাঁটে শারমেয় পরিচয়
লেবাসে লোবানে হনুমান পেটভারী হাসে
যেখানে পরিত্রানের ভিটি ছিল সেখানে সংঘাত
আগুনেবোমার হলকায় সকলেই উদ্বাস্তু
দাবার গুটি সর্বনাশা সংকটে নিপতিত মানুষ
পৃথিবীর মাটিতে সদর্পে হানছে এ্যাপাচির ছোবল।
ভালোবাসার
আবর্জনা
=======================
ভালোবাসার আবর্জনায় কখনো ডাষ্টবিন হয়না
মৌনতাকে উপলব্ধি করে ভালোবাসা স্থায়ীত্ব খোঁজে
নিরব এবং নির্বিকার হয়েও নারী আত্মমগ্ন
নিজ চৈতন্যে জাগে ঝিলের ডুবো কাদার মতো
তার ভেতরে জমে উঠে উদাস স্মৃতি শাপলা শালুক
স্মৃতিময় ভালোবাসা শুভ হয় হোক সময় নেয়
উপলব্ধির প্রাচিরে লিখে দেয় শুভেচ্ছা লিপি
পথ চলতে পথিক পড়ে নেয় আনমনে হাসে
ফিরে আসে নাসারন্ধ্রের অক্সিজেন বুকের গভীরে
শব্দবাদী জীবন বেঁচে থাকে অনেক দিন।