অনুক্তা ঘোষাল
।।শব্দিত সংঘাত।।
মুখচোরা মেঘ
ফিরেছে আপন ডেরায়।
আমি জেগে আর রাত্রি সজাগ শোনে
কারা যেন আজ শব্দ বাতাসে ওড়ায়
আলগোছে আনমনে।
ভেসে যায় কথা দৃর
থেকে দূরে আরও
রাত্রি প্রহরী-যদি কেড়ে নেয় হক
বারে বারে তাও সফল হবে না কারও
পরিকল্পিত ছক।
চোখে দাগ লাগে।কথা তুলে রাখি তাকে
আমি উঠে যাই।ঠায় বসে থাকে রাত
কাগজে কালিতে লেখা হয়ে ভেসে থাকে
শব্দিত সংঘাত।
।।নির্ভয়া।।
ভাঙা স্বপ্নের মুহূর্ত শেষ
বন্দি বিলাপ হয়েছে মলিন
চুল্লি নিভেছে অস্থিজলে,
কুণ্ঠিত লাজ খোঁজে আশ্রয়।
দহন শাপে ভস্ম মায়া,
নিশি লালসা তৃষিত আজও
হননে অধীর নগ্ন কায়া,
গহন তিমির অশ্রুজলে
নির্বাক স্মৃতি, 'তুমি নির্ভয়া'।
।।গাঁটছড়া।।
রাত মরেনি ঘুম নেশাতুর ঝিঁঝিঁর ডাকের মন্ত্রণায়
আস্থা শুধু ছিঁড়ছে নলি মৃত্যুকালীন যন্ত্রণায় ।
রক্তবীজে চুষছে ছায়া অট্টহেসে নাড়ির শ্বাস
গলছে শরীর মিশছে অতল রক্তে তরল সর্বনাশ।
গুলছে যে সুর বিষের
নীলে ,উঠছে মেতে
রঙিন গ্লাস
ধুঁকছে শরীর বিরান রাতে ,পড়ছে খুলে লজ্জাবাস।
বন্দীশে মন বন্দি তবে রক্তরাগে কালের শেষ
গুমরে ওঠা বিলাপ
হেসে খুলছে টেনে ছদ্মবেশ।
কান্না মেখে ঠোঁটের ব্যাথা খুঁজছে হাসি ঘরছাড়া
অস্থিজলে দিচ্ছে ভাসান স্বপ্নে মোড়া গাঁটছড়া।
।।চুপকথা।।
কেমন করে সাজাই কথা বলো, কেমন করে গল্প গুলে খাই
আঁচল খুলেই বাঁধব যখন হাত কেমন করে ফস্কাব সেই ঠাঁই ।
বন্ধ চোখে স্বপ্ন জ্বেলে আলোর , কেউ রাখেনি অঙ্গীকারের দায়
রাত পোহালেই উল্টো
পথে পাড়ি ,তখন আমি
আমার সীমানায়
হাজার কথা মাখছি পেটে বুকে, শেষ মানেনি হাত যেখানে তাতে
হার মেনেছি সেই তো খিদের ডাকে,সবুর যখন মুখ ঝোঁকালো ভাতে।
আমার থেকে আমায় করে চুরি যখন ছুটি শেষ প্রহরের ডাকে
তখন শুধু মনের কাছাকাছি, শরীর টুকুই আটকে থাকে খাটে।
নীরব রাতে যখন আঁধির
সাড়ায় ঠান্ডা চোখে ডুকরে ওঠে ব্যাথা
শক্ত হাতে বুকের খাঁজে লুকাই নিচুপ মনের গোপন সে চুপকথা।
।।কাল কথা।।
তর্ক ছেড়ে তাক লাগাতে রেডি।মিলছে জোড়ায় সাদা রঙিন হাত।
চাকার ফেরে বছর পাড়ি দিলেও শেষরাতে ঠিক হবেই বাজিমাত ।
এক কুড়িতে পায়নি বিশেষ তাই তিন কুড়ি তে গিলতে জীবন ঢের,
আবার টেনে তুলছি মাথা ঘাড়ে।রাতের পাতে বাড়ছে খিদে ফের।
একগ্রাসে হোক দুএক দানা বেশি।আলতো আদর সয় না জিভে আর।
হাতের খেলায় ধাত সয়েছে আজ।শেষ নিমেষে দেখব যে আরপার।
খিল্লি জমায় বিল্লিতে চৌকাঠে।সাধের নাগোর ধরছে রাতে রোজ
ফান্দা খুলে বান্দারা সব শুঁকে আস্তাকুঁড়েই জমায় ভুরিভোজ।
থালায় থালায় সাজছে জীবন ভাতে।গরম রাতে ভুয়ো চাদর ছিঁড়ে
আহ্লাদে সব আটখানা চৌকিতে।পাল্লাতে বয় দু একশ গ্রাম চিঁড়ে।
বল বাড়ে যার দাওভারী তার দলে।শেষ সোপানেই তাই পেয়েছি ঠাঁই।
জোর চাবুকে মুষ্টি খুলে গেলেও কলম হাতেই গর্জে উঠি তাই।