রবিবার, ২১ মে, ২০১৭

শ্রাবনী সিংহ




শ্রাবনী সিংহ

অনুবাদকের ঘ্রাণ

সীমান্তে রাধাচূড়া,
  বর্ণ  চিনি    দুরূহ সাঁঝবেলার
দৃষ্টি বিনিময়ের খেলায়
  লালমুখো সূর্য।


ভালো কবিতা পেলে দৈর্ঘ্য প্রস্থে বেড়ে যায়
অনুবাদগ্রন্থের শরীর,
আয়তন, ঘ্রাণ
                 ঘ্রাণ এত
মফস্বলের মাটিতে।
শব্দের ক্যামোফ্লজ নিয়ে
       কাছাকাছি এলে  মনের  মানুষ।






ভাঙ্গা বাসর

দূরবীনের মধ্যে গা ঘেঁষে দাঁড়ায় 
                       বহুদুরের আফিম ক্ষেত,
দূর মানে কতদুর , কে জানে?
প্রত্নে ও পিপাসায়
       পাথরের বয়স বাড়ে শুধু...


পুরনো অতীত পিছু ছাড়ে না যেমন,
এই ফিরে আসাও অন্যায়।
ক্লাইম্যাক্সের ভেতর ঢুকে পড়ে
অপ্রত্যাশিত ঝড় ,
উড়ানবিল পেরোয় দুরান্তের  পাখিরা ,
প্রলয়সন্ধ্যা
বাঁশপাতার লন্ঠন ,     ঈষৎ ঝুঁকে যাওয়া
ততক্ষণে  তুমি জোড়া লাগাও ভাঙ্গা বাসর
                                       অন্তিমে।






গৃহপ্রবেশ

ঘুমের মধ্যে আওড়ে যাচ্ছি শতনাম
কথাতেই হারিয়েছি সব,
নাও ডুবেছে গাঙশালিকের জলে
কাগজকলের নিচু জমিনে
পরকীয়া শেষে দ্বিখন্ডিত হচ্ছে  ইহকালের যত ফুল।


***
পুরাতন সবই শুভ--
দমবন্ধ কেঁপে ওঠে মায়াময় শোক,
কালবেদিতে গচ্ছিত সাদাকালো ফুল,
পরিষ্কার বোধগম্য হয় না
এক পান্ডুরলতা আটকে দেয়
নতুনের গৃহপ্রবেশ!


অতঃপর  একটু থামো,
দরজার ওপাশ থেকেই ফিরে যাচ্ছ যাও , রক্তগন্ধে উর্বর
সম্পূর্ণ দাবী নিয়েই ফিরে এস, আরেক যুদ্ধে
অভিমান কোনো যোদ্ধার সাজ নয়।






চাঁদের বিপরীতে

সবাই শূন্যতা লিখে
যদিও শূন্য বলে কিছু নেই একটাফেনার
কাঁচুলি ধরে ঢেউয়ের বাড়ী ফেরা।


সবারই একটা লালচে থামওয়ালা বারান্দা থাকে
পশ্চিমা রোদের দিকে ঝুঁকে,


সান্ধ্য কার্নিশের ঠোঁটে মিনমিনে বেড়ালের কাম আর্তি
ঘুরে বেড়ায়  বাতাসে,


ইসকুলবেলার দিনের জ্বরটা ফিরে আসে ... ভারি তো নরম
সন্দেহের বশেই ভালোবেসে ফেলি তাকে চাঁদের বিপরীতে।






মারমেইডের বাঁশি

কুয়োতলার মরবিড ঘ্রাণ,
হাওয়ারা লুকিয়ে থাকে বাতাসের  কান্না যেদিকে 
ছায়ার  ভ্যানগুলো শুঁকে গেছে  রাস্তার মাদিকুকুরগুলো,


আমার টিনের চালে আজ খাজুরাহোর প্রণয়ী জ্যোৎস্না
বৃষ্টিগন্ধী হাওয়ায় উড়ে
মারমেইডের বাঁশি ,
সমস্ত  স্মৃতিচারণ অলপ্পেয়ে একসময় থমকে যায়
উলটানো দাবার ছকে,


শোকের পর তন্দ্রা নামে...
একমাত্র ঘুম এসে কিস্তিতে নিভিয়ে দেয়
বারবেলার চিতা,

ঘুম একপ্রকার আঠালো পদার্থ

কোনরকম জ লী য় ভাব ছাড়াই।