নাসির ওয়াদেন
ছায়া-বৃষ্টি
মকর সংক্রান্তি বসেছে সাগর মেলাতে
প্রজাপতি রঙের দরে বিক্রি করে বাহার
আজানু প্রেম হাবুডুবু খাচ্ছে ঝরণা জলে
নদী মোহনাতে খোঁজে রাত্রির নিঃশ্বাস
দিগন্ত রোদ জল-বালিশে শুয়ে শুয়ে
দেখছে চাঁদের পাহাড়ী
ঝরণা --
একটু ওম পেয়েই
নিঃসঙ্গ চাহিদারা
ক্ষেতের ওপর শস্যের দানা বিছাচ্ছে
হাওয়া দিয়ে অঙ্কুরোদ্গম ঘটায় চেতনার
বাউল ক্লান্তির একতারায় বোল তোলে গ্রামীণ
ছায়া-বৃষ্টি আসন্ন বসন্ত উৎসব ঘিরে নাচে মাতোয়ারা ।
¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤
এক অযুত
বছর বেঁচে আছি
অভিভাবকের মাঠের
হাওয়া গুলো
বাড়িয়ে দিচ্ছে উন্নয়নের বরাদ্দ
অপুষ্টিকর মেঘ মায়ের দুধ খেয়ে
সম্পর্কের বাগানে যন্ত্রণার আগুন জ্বালে
যতিচিহ্ন আর এক পৃথিবীর সংবাদ আনছে---
আদর্শহীন দেশপ্রেমের বুলি
আওড়াতে
কড়া গণ্ডার হিসাব কষছে চিন্তার খাতায়
অবিশ্বাসের দার্শনিক ঝড় ঝাপটা
চেতনার আগুনে ঋদ্ধ করে ভাবনাকে
এক অযুত বছর থেকে বেঁচে আছি সময়ের সুতোয়
কঠিন বাস্তবকে ছুঁয়ে আছি গোধুলির রঙিন ছুতোয় ।
¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤
মানুষ
টাকার পেছনে মিছিমিছি না দৌড়ে
একটা সত্যিকার মানুষ খুঁজো
চারটে হাত, আটটি পা হয়ত নেই
কিন্তু, তিনটে চোখ আছে যার
বিশ্বাস নিয়ত ঝুলে থাকে কচি ডালে
ফল পাকলে কুড়িয়ে খায় প্রত্যয়
বাদুড়ের মতো ঝুলে থাকা নয় আর
মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াও সরলতা
মানুষ হতে পারবে যেদিনে তুমি
টাকারাই ধাওয়া করবে তোমাকে ---
¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤
শূণ্য
রেখা
সরলরেখা মিশে যাচ্ছে বক্ররেখাতে
ভাবনা রেখাগুলি বাষ্প হয়ে উড়ছে
শূণ্য রেখার সীমান্তের অনন্যবিন্দুতে--
আমাদের অবৈধ মেঘ আলো
মুক্তহস্তে দান করে সুবর্ণরেখাকে
পাখি উড়ে যাচ্ছে, বাতাস নাড়ছে
দু পাশের ধান গাছের কচি মাথা
আগ্রহ তৈরি করছে বাবুই বাসা
অপরাধগুলো কৈবল্যের খোঁজে হন্যে
দাঁড়িয়ে রয়েছে শূন্য রেখার ওপর ।
রবীন্দ্রনাথ
ক্রোধিত চৈত্রের চোখে আগুনের
একরাশ ঝলক
অনুরাগ মেশানো মমতাময়ী বিকেলে
এক দুরন্ত বালক
গনগনে দুপুরে হাড় চোষা আকাশে
ডানা ভাঙা আহত সন্ধ্যায়
শরবিদ্ধ হরিণী ত্র্যস্ত চাঁদের মতো
জেগে উঠবে নতুন প্রত্যাশায় ।
বুকের ভেতর জাগে হিল্লোল, বাড়ে অনুরাগ
নিকষ রাত্রি, শুধুই যন্ত্রণা বহে বুকে
ভোরের শুকতারার পাশে শায়িত কে তুমি!
অন্য সুখে --
কচি নিম ফুলের বুকে রসিক মৌমাছি
হুল ফুটানো দু'ফোঁটা সুবাস বুকে
দুপশলা ইলশেগুড়ি,রঙিন রামধনুর হাতছানি
স্বপ্নের ভেতরে দইওয়ালা হাঁকে --
ছাইমাখা জলপানে ব্যস্ত তিনটে শালিখ
শিষ কেটে হাওয়াই ভাসে সবুজ টিয়ে
নীরক্ত বুকে স্বেদ ঝরা স্বর
চৈত্রের অবসানে অবসাদ নিয়ে
যে ফেরে, সেই আনে নতুন ভোর ।
নীলাকাশের দিকে হাই তুলে
মেহের আলি ডাক ছাড়ে ,ঝরাপাতা বন
সবার চোখ অসীম আকাশের পানে
আমি খুঁজি একজন --
সে যে চেতনার রবি,
পুব-পশ্চিমকে যে চেয়েছে মিলাতে
একসূত্রে, এক সংস্কৃতি, বিশ্বমিলনের ছবি,
সেই তো ইন্দ্র, মিলিয়েছে দিন আর রাত
সেতু বন্ধনকারী প্রেমিক রবীন্দ্রনাথ ।
¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤¤