We are the
hollow men
We are the
stuffed men
Leaning
together
Headpiece
filled with straw. Alas!
Our dried
voices, when
We whisper
together
Are quiet and
meaningless
As wind in dry
grass
Or rats’ feet
over broken glass
In our dry
cellar
Shape without
form, shade without colour,
Paralysed
force, gesture without motion;
গতশতকে লেখা এলিয়টের এই অমোঘ কথা কয়টি আজও কি নিদারুন ভাবেই না প্রাসঙ্গিক।
আমদের জীবনের চারপাশে এই ভাবেই আমরাই পরস্পরের প্রতিভাসে নিজেদরকেই যেন দেখতে পাই।
না- সেই দেখতে পাওয়া নিয়েও আমরা যে খুব একটা বিচলিত তাও নয়। কারণ চারপাশের ভোগবাদী
জীবন জৌলুস আমাদের চেতনাকে এমন ভাবেই অসাড় অবশ করে রেখে দিয়েছে যে নিজেদর স্বরূপে
নিজেদেরকে দেখেও আঁতকে ওঠার মতো সচেতন মননটাই যেন নির্জীব হয়ে শয্যাশায়ী
প্রতিদিনের জীবনপ্রবাহে ভেসে। আর এই জীবন বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমাদের সৃষ্টিও যে
অধিকাংশ সময়ে আমাদের মতোই ফাঁপা আওয়াজ তুলবে তা আর বিচিত্র কি?
কথাকয়টি বলার এই জন্যই যে বাংলা কাব্যসাহিত্যের বিপুলায়তন স্তূপে আমাদের এই
ফাঁপা সত্ত্বারই যে প্রতিধ্বনি বেজে ওঠে সাহিত্যের হাটে বাজারে, বেজে ওঠে
প্রতিনিয়ত; তার মধ্যে থেকে সত্যমূল্যের সৃষ্টি খুঁজে উদ্ধার করা সত্যই কিন্তু এক
দুরূহ কর্ম। আরও মুশকিল হয়ে যায় বিপুলায়তন অসাহিত্যের মধ্যে থেকে খাঁটি সাহিত্য
উদ্ধার করার জহুরী চোখদুটিও যখন দিনে দিনে ঝাপসা হয়ে যেতে থাকে। ভোঁতা হয়ে যেতে
থাকে সাহিত্যবোধ। শুকিয়ে যেতে থাকে রসবোধ। সে এক সত্যই দুঃসময়। বাংলা কবিতার জগতও
এর বাইরে নয়। বাইরে তো নয়ই, বরং বলা যেতে পারে সবচেয়ে বেশি ফাঁপা সত্ত্বার
প্রতিধ্বনি যদি কোন মাধ্যম তুলে ধরে থাকে, তবে সে হল হাল আমলের বাংলা কবিতাই।
অনেকেই আজ আর খেয়াল করেন না গভীর জীবন প্রশ্নের মুখোমুখি না দাঁড়াতে পারলে, অকুতোভয়ে
সেই প্রশ্নগুলির মোকাবিলা করতে না পারলে সত্যই কিন্তু দিনের পর দিন কবিতা লেখা
সম্ভব নয়। বর্তমানে এলিয়ট কথিত এই ফাঁপা মানব জগতে সত্যই কি গভীর জীবন প্রশ্নগুলির
মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহস রাখি আমরা? একটু তলিয়ে দেখলেই দেখা যাবে আমরা কেবলই পালিয়ে
বেড়াই সত্য থেকে। কেবলই নিজেকে প্রবোধ দিয়ে থাকি বাস্তবতার দোহাই দিয়ে। কেবলই
তলিয়ে যেতে থাকি আত্মপ্রবঞ্চনার অন্ধকারে। না সেই অতল থেকে সত্যই কবিতা লেখা সম্ভব
নয়। সম্ভব নয় সাহিত্য চর্চা। সম্ভব নয় কোন সৃষ্টি। আর তাই আমরা কেবলই নির্মাণ করতে
থাকি শব্দের স্থাপত্য। যার মধ্যে সাহিত্যমূল্যের অভাবের জায়গাটা ভরে থাকে আমাদের
অহংকারে। যে কথাটি বলতে চেয়েছিলেন জীবনানন্দ,
“মানুষের ভাষা তবু অনুভূতিদেশ থেকে আলো
না পেলে নিছক ক্রিয়া; বিশেষণ;
এলোমেলো নিরাশ্রয় শব্দের কঙ্কাল
জ্ঞানের নিকট থেকে ঢের দূরে থাকে”।
আমরাও ঠিক সেই রকমই ঢের দূরে পড়ে থাকি সাহিত্য থেকে, কবিতা থেকে, সৃষ্টি থেকে,
শিল্প থেকে। কবি শঙ্খ ঘোষের ভাষায় “শিল্পের জগৎ থেকে প্রায়ই যেন আমরা যক্ষের মতো
নির্বাসিত”।
এই কি আমাদের ভবিতব্য? না কি এই দুঃসময়েই ঘুরে দাঁড়ানোর সঠিক সময়? ঠিক সেই
কথাগুলিই ভাবনা চিন্তায় জায়মান হতে হতেই মাসিক কবিতাউৎসবের জন্ম। কিন্তু যে কথাটি
আগেই বলছিলাম বিপুলায়তন অকবিতার স্তূপ পেড়িয়ে যথার্থ সত্যমূল্যের কবিতার কাছে গিয়ে
পৌঁছানো সত্যই সহজ কথা নয়। কিন্তু সহজ নয় বলেই তে আর থেমে যাওয়া যায় না। বরং কাজ
যখন কঠিন উদ্যোম তখন প্রবল হয়ে ওঠে। সেটাই মানব ধর্ম। আর সেই কারণেই মাসিক কবিতাউৎসবের পথচলা শুরু
হয়েছিল গত বছর একুশে ফেব্রুয়ারী। শুরুর সেই লগ্নে আমরা সাথে পেয়েছিলাম সেই
মানুষটিকে যাঁকে পাশে না পেলে আমাদের কোন কর্মেই মঙ্গলদীপ জ্বলে ওঠে না। আর তাই
কবিতাউৎসবের প্রথম সংখ্যার অতিথি সম্পাদকীয় শুরুই করেছিলেন শ্রী ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়
এই কথা কয়টি দিয়ে, “‘কবিতা উৎসব’ - কবিদের অন্তর্জাল মাসিক পত্র আত্মপ্রকাশ করলো। কবিদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র রূপে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ‘কবিতা উৎসব’ সংকলনের প্রকাশ; এই সময়ের কবিদের
নিজস্ব পরিচয়ের ভুবন গড়ে উঠবে এই সংকলনটিকে কেন্দ্র করে, পাঠক এঁদের লেখনশৈলী সম্পর্কে সহজেই একাত্ম হবেন, এটাই প্রত্যাশা”। কবিদের সেই নিজস্ব পরিচয়ের ভুবনটি ঠিক মতো গড়ে না উঠলে অকবিতার স্তুপও পার
হওয়া সম্ভব নয়। তাই শুরুর সেই লগ্নে কবিতাউৎসবেরও লক্ষ্যছিল সেই ভুবনটি ঠিক মতো
গড়ে তোলাই। মধ্যবর্তী এগারো মাসে সেই লক্ষ্য কতটা পূরণ হল আর কতটা হল না, সে কথা
বলতে পারেন একমাত্র কবিতাউৎসবের নিবিষ্ট পাঠকমণ্ডলীই। যে সংখ্যাটি ইতিমধ্যেই প্রায়
লক্ষজনে পৌঁছতে চলেছে। কিন্তু পরিমাণ দিয়েই যেমন উৎকর্ষতার বিচার হয় না, ঠিক তেমনই
একটি পত্রিকার পাঠক সংখ্যাই তার উৎকর্ষতার সাক্ষ্য দেয় না। তবু জনপ্রিয়তার
মানদণ্ডেরও একটি মূল্য থাকে। সেই মূল্যে কবিতাউৎসব আশা করতেই পারে শ্রী ফাল্গুনী
মুখোপাধ্যায় যে আশা করেছিলেন যে কবিতাউৎসব এই সময়ের কবিদের নিজস্ব পরিচয়ের ভুবন
হয়ে উঠবে; সেই লক্ষ্যে আমরা ধীরে ধীরে হলেও হয়তো সঠিক দিশাতেই এগোচ্ছি। অন্তত
আমাদের পাঠক সংখ্যা সেই আশাটুকু জাগিয়ে রেখেছে।
কিন্তু আমাদের লক্ষ্য শুধুই সেটুকুও নয়, এলিয়ট কথিত সেই
ফাঁপা মানব জগতে দাঁড়িয়ে গভীর জীবন প্রশ্নগুলির সরাসরি মোকাবিলা করাই আমাদের মূল
অভীষ্ট। আর সেইটি করতে গেলে আমাদের পৌঁছাতেই হবে প্রকৃত সাহিত্যের অন্দরমহলে।
আমাদের পৌঁছাতে হবে সেই নির্ভীক কবির কাছে, যিনি জীবন বাজী রেখে করে চলেছেন
শিল্পের চর্চা, করে চলেছেন যথার্থ শিল্প থেকে যক্ষের মতো নির্বাসিত যারা তাদেরকেই
প্রকৃত শিল্পসাহিত্যের আঙিনায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে। যে কাজটা করতে না পারলে আমাদের
আত্মজীবনী লেখা হবে এলিয়েটের সেই অমোঘ বাণী দিয়েই যে কথা কয়টির সূত্র ধরেই আমাদের
আজকের বক্তব্য। কবিতাউৎসব তাই সেই নির্দিষ্ট লক্ষে কাজ করে যেতেই অঙ্গীকারবদ্ধ।
আমাদেরকে আমাদের ভাষায় অনুভূতিদেশ থেকে আলো তুলে এনে প্রাণ দিতে হবে। না,
নিষ্ক্রিয় বসে থাকার দিন শেষ।
অনিবার্য কারণবশত কবিতাউৎসবের মাঘ সংখ্যায় ‘এ মাসের অতিথি’
বিভাগটি রাখা গেল না। আপনারা জানেন এই বিভাগে আমরা কবি সাহিত্যিকদের সাক্ষাৎকার
প্রকাশ করে থাকি। জীবনের সাথে সাহিত্যের সম্পর্ক, সাহিত্যের মূল্যে জীবনের সারাৎসর
কিভাবে একজন কবিকে উদ্বুদ্ধ করে তার সৃষ্টিকর্মে। সেই সৃষ্টির দিগন্তে কি ভাবে
তিনি জড়িয়ে ধরতে চান তাঁর পাঠককে এই সব প্রশ্নের মধ্যে দিয়েই আমরা এ মাসের অতিথির
অন্দরমহলে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকি কবিতাউৎসবরে পাঠকদেরকে। দুর্ভাগ্য আমাদের প্রথিতযশা কবি শ্রী মলয় রায়চৌধুরী কবিতাউৎসবে সাক্ষাৎকার
দিতে রাজী হয়েও কেন শেষ পর্য্যন্ত সাক্ষাৎকারটি দিলেন না আমরা জানতে পারিনি সে
কথা। জানতে পারলে হয়তো আমরা অরও একজন কবির সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করতে পারতাম। তাই
আমরা কবিতাউৎসবের পাঠকের কাছে সত্যইই লজ্জিত। আমরা কবির সর্বাঙ্গীণ সু্স্থতা কামনা
করি। তিনি সুস্থ থাকুন সক্রিয় থাকুন।
কবিতাউৎসবের উদ্যোগে সম্প্রতি শুরু হয়েছে পাক্ষিক কবিতাউৎসব
লাইভ কবিতা পাঠ ও আলোচনার ভিডিও কনফারেন্স। প্রায় তিনঘন্টা ব্যাপি সময়সীমার এই
অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী কবিরা স্বরচিত বাংলা কবিতা পাঠ ও
আলোচনায় অংশগ্রহণ করছেন প্রতি মাসের ১৬ ও ৩০ তারিখ ভারতীয় সময় রাত্রি ৯:০০;
বাংলাদেশ সময় রাত্রি ৯:৩০; কনাডা ও যক্তরাস্ট্রীয় সময় সকাল ১০:৩০ ও আন্তর্জাতিক
সময় বেলা ৩:৩০। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে আগ্রহীরা যোগাযোগ করতে পারেন আমাদের
সম্পাদকীয় দপ্তরে।
কবিতাউৎসবের পক্ষ থেকে সকল কবি ও পাঠককে ইংরাজী নববর্ষের
শুভেচ্ছা জানাই। বিগত এক বৎসর ব্যাপি কবিতাউৎসবের সাথে পথ চলার জন্যে আমাদের সকল
কবি ও পাঠকের কাছে রইল আমাদের বিশেষ কৃতজ্ঞতা। সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
সামিল থাকুন কবিতার উৎসবে কবিতাউৎসবে।
কবিতাউৎসবের ফেসবুক পেজ :
https://www.facebook.com/amaderkobitautsov/ কে লাইক করে ফেভারিট করে রাখলে
কবিতাউৎসবের যাবতীয় তথ্য ও বিজ্ঞপ্তি সরাসরি আপনার ফেসবুক ওয়ালেই দেখার সুযোগ
ঘটবে। এই পেজেই কবিতাউৎসবে প্রকাশিত কবিতাগুলিও নিয়মিত প্রচারিত হয় লিংকসহ।
এবং এরই সাথে কবিতাউৎসবের ফেসবুক গ্রুপ: https://www.facebook.com/groups/kobitaautsov/# এ জয়েন রিকোয়েস্ট পাঠালে গ্রুপের সদস্য হিসাবে গ্রুপের
ওয়ালে আপনার কবিতা ও কবিতা বিষয়ক মূল্যবান মতামত সরাসরি পোস্ট করে সকল সদস্যদের
সাথে শেয়ার করেও নিতে পারবেন। গ্রুপের পিনপোস্টে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশাবলীও
দেওয়া আছে।
এছাড়াও কবিতাউৎসব গুগুল কমিউনিটি: https://plus.google.com/u/0/communities/117144176931778027450 তে সরাসরি জয়েন করে একটি
সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটের মতো সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। এখানে আপানার কবিতা পোস্ট করার
সুবিধা ছাড়াও আপনার নিজস্ব সাহিত্য ব্লগের লিংক নিয়মিত ব্যবধানে প্রচারের
সুবন্দোবস্ত ও অন্যান্য একাধিক বিভাগে আপনার যোগদানের সুযোগ রয়েছে। রয়েছে সুস্পষ্ট
নিয়মাবলীও।
***কবিতাউৎসবে লেখা পাঠানোর সাধারণ নিয়মাবলী:
১) স্বনির্বাচিত স্বরচিত ৫টি প্রিয়কবিতা পাঠাতে হবে
২) অভ্র বাংলা হরফে টাইপ করে একটি এমএস-ওয়ার্ড ফাইলে এটাচ
করে
৩) কোনভাবেই পিডিএফ ফাইল ও বিজয় ফন্ট গ্রহণযোগ্য নয়
৪) একটি প্রফাইল চিত্র
অতি অবশ্যই আবশ্যক
৬) পাঠানোর শেষ দিন প্রতি বাংলামাসের ১লা তারিখ
***কবিতাউৎসবে প্রকাশিত কবিতার স্বত্ত্ব লেখকের নিজস্ব।
কবিতাউৎসব আপনার সৃষ্টিশীলতার প্রতি ঐকান্তিক
শ্রদ্ধাশীল থেকে সবরকমের সহযোগিতার বিষয়ে সাধ্যমত অঙ্গীকারবদ্ধ। কবিতাউৎসবের সাথে
থাকুন কবিতাউৎসব আপনার পাশে রয়েছে সবসময়।